ASK ISLAM BANGLA
  • Home
  • রচনাবলী
  • সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর
  • ইসলামি সাধারণ জ্ঞান
  • ইসলাম বিরোধী প্রশ্নের জবাব
  • ইসলামের সেই কাহিনীগুলো
  • সাহাবীদের কাহিনী
  • গল্পে গল্পে শিখী
  • ROAD TO PEACE
  • Forum

বারনাবাস এর ইঞ্জিল (Gospel) থেকে...পর্ব ৯

{ আগের পর্ব পড়ে না থাকলে, পড়ে আসতে অনুরোধ করছি... যদি পড়া না থাকে তাহলে ৮ম পর্বের লিঙ্ক এখানে আর, একদম প্রথম থেকে পড়তে চাইলে, এখানে ক্লিক করুন :) } 



অনেকে হয়ত জানে না, ইহুদী আর খ্রিস্টান ধর্মের মত ইসলামেও আল্লাহ্‌র বিরোধিতা বা কুফরির শাস্তিতে একটা অপশন আছে ক্রুশে চড়ান।

“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আর পৃথিবীতে হাঙ্গামা সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের শাস্তি হল-

১) তাদের হত্যা করা হবে

অথবা ২) তাদের ক্রুশে চড়ান হবে

অথবা ৩) তাদের হাত ও পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলা হবে

অথবা ৪) তাদের দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে।

এ হল তাদের জন্য দুনিয়ায় লাঞ্ছনা আর আখিরাতে তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি।” (মায়িদা ৫:৩৩)



আরেকটা ব্যাপার, মিরাজের রাতে অনেক নবী এসে জেরুজালেমে মুহাম্মাদ (স) এর পিছনে নামাজ আদায় করেন। নবীদের ইমামতি করেন তিনি। তখন ঈসাও (আ) এসেছিলেন। স্থান বাইতুল মুকাদ্দাস।

বারানাবাসের এ বইটা পাওয়ার ঘটনাটা এবার একটু বলি-

বারনাবাস এর জন্ম সাইপ্রাসের এক ইহুদী পরিবারে। তাঁর আসল নাম ছিল ইউসুফ, কিন্তু ঈসার প্রতি তাঁর অটল ভক্তির কারণে তাঁকে সাহাবীরা ডাকত বারনাবাস বলে। বার নাবিয়া, মানে নবীর পুত্র। (বাইবেল, বুক অফ অ্যাক্টস, ৪:৩৬-৩৭)

বাইবেলে বারনাবাস সম্পর্কে বলা আছে, “সাহাবী” (অ্যাক্টস, ১৪:১৪) আর “পাক রুহে পূর্ণ, একজন ভাল মানুষ, বিশ্বাসী।” (অ্যাক্টস ১১:২৪)

ঈসা চলে যাবার পর অনেকেই তাঁর জীবনকাহিনী তথা ইঞ্জিল লিখেন। প্রায় ১০০র বেশি ইঞ্জিল লিখা হয়েছিল। এর মধ্যে একটি বারনাবাস এর।

এখন যে বাইবেল আমরা পড়ছি সেটা মুলত পলের (Paul’s) খ্রিস্টধর্ম। প্রকৃত ধর্ম এটা না। এ বিষয়ে পরের পর্বে আরও লিখব ইনশাআল্লাহ।

৩২৫ সাল।

অনুষ্ঠিত হল সুবিখ্যাত (কুখ্যাত?) কাউন্সিল অফ নাইসিয়া। (Nicea)

এখানে বাইবেলের বর্তমান লিখাগুলো নির্বাচন করা হয়। আর খ্রিস্টধর্মের মূলতত্ত্ব তুলে ধরা হয়। ঐ কাউন্সিলের নিয়ন্ত্রণ দখল করে সেইন্ট পলের অনুসারীরা। ঐ কাউন্সিলেই অনেক ইঞ্জিল ধ্বংস করে দেয়া হয়। যার মধ্যে ছিল “নাসারিয় ইঞ্জিল”, “মিসরীয় ইঞ্জিল”, “হিব্রু ইঞ্জিল” যা লিখা হয়েছিল ঈসার মাতৃভাষা আরামায়িকে।  

কাউন্সিল অফ নাইসিয়াতে আলেক্সান্দ্রিয়ার আথানেসিয়াসের দ্বারা প্রভাবিত এবং গৃহীত হয় ত্রিত্ববাদ। (ভিঞ্চি কোড পড়ুয়ারা এটা ইতোমধ্যে জানেন।) কাউন্সিলে ঈসার জন্ম তারিখ দেয়া হয় ২৫ ডিসেম্বর, যা সূর্যদেবতা মিথ্রাসের জন্মদিন। যীশুকে ঈশ্বরপুত্র নামে ডাকার সিদ্ধান্ত হয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শনিবার (সাব্বাথ) থেকেরবিবার করা হয়। নির্বাচিত করা হয় যে ইঞ্জিলগুলো সেগুলোতে দেখানো হয় যীশু ঈশ্বরপুত্র আর ঈশ্বর। আসলে ঐ গস্পেলগুলো অলটার করে পলের অনুসারীরা আর নাম দেয় সাহাবীদের নামে।

৩২৫ সালের আগ পর্যন্ত বারনাবাসের ইঞ্জিল একটা গুরুত্বপূর্ণ ইঞ্জিল হিসেবে বিবেচিত হত। ৩২৫ সালে কাউন্সিলে আদেশ জারি করা হয়, কারও কাছে যদি কোন হিব্রু গস্পেল পাওয়া যায় তাহলে তাঁকে হত্যা করা হবে। ৩৮৩ সালে পোপ বারনাবাসের ইঞ্জিলের একটি কপি তাঁর লাইব্রেরিতে রাখেন।

উল্লেখ্য, ভ্যাটিকান লাইব্রেরি খুবই সমৃদ্ধ। ধর্মীয় রিসারচারদের জন্য স্বপ্নের লাইব্রেরি। যাবতীয় ধর্মীয় banned বই...

৪৭৮ সালে সম্রাট জেনোর ৪র্থ বর্ষে বারনাবাসের কবর আবিস্কার হয়। সেখানে তাঁর নিজের হাতে লিখা বারনবাসের ইঞ্জিলের একটি কপি পাওয়া যায়।

গস্পেল অফ বারনাবাস ৩৮২ সালে Western Church এর আদেশে নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর ৪৬৫ সালে পোপ ইনোসেন্ট একে আবার নিষিদ্ধ করেন। তারপর পোপ গেলাসিয়াসও (৪৯২-৪৯৫) আবার ban করেন। ৪৯৬ সালে গেলাসিয়ান নির্দেশিকায় নিষিদ্ধ বইয়ের তালিকায় এখনও এ গস্পেলের নাম পাওয়া যায়।

গস্পেল অফ বারনাবাসের প্রকৃত আবিস্কারক এক খ্রিস্টান পাদ্রী, নাম তাঁর ফ্রা মারিনো। তিনি ইরানিয়াসের লেখা পড়তে গিয়ে দেখলেন, ইরানিয়াস সেইন্ট পলের বিরোধিতা করেছেন আর বারনাবাসের গস্পেলের উদ্ধৃতি ব্যবহার করেছেন। মারিনো এ গস্পেলের একটি কপি পাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠলেন।

মারিনো ছিলেন পোপ সিক্সটাস (১৫৮৫-১৫৯০) এর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। একদিন, তারা দুজন একত্রে পোপের ব্যক্তিগত লাইব্রেরিতে ছিলেন। তখন পোপ ঘুমিয়ে পড়লেন। সময় কাটানোর জন্য মারিনো বই পড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। তখনই তিনি বইগুলোর মধ্যে পেয়ে গেলেন তাঁর পরম আকাঙ্ক্ষিত বই গস্পেল অফ বারনাবাস। তিনি উৎফুল্ল হয়ে উঠলেন। বই তিনি আলখাল্লার নিচে লুকালেন। পোপ ঘুম থেকে উঠলে তিনি তাঁর কাছ থেকে বিদায় নিলেন। পরে এ গস্পেল পড়ে মারিনো ইসলাম গ্রহণ করেন।

ইতালিয় ভাষায় রচিত এ কপিটি ফ্রা মারিনোর পর নানা হাত ঘুরে অবশেষে অ্যামস্টারডাম এর একজন গুরুত্বপূর্ণ আর সম্মানিত লোকের হাতে আসে। তবে সেই রহস্যময় লোকের পরিচয় জানা যায় নি কখনও। এটুকু জানা গেছে, তিনি সারা জীবন এ বইটিকে যত্ন করে রাখেন, সংরক্ষণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর প্রুশিয় রাজার কাউন্সিলর J. E. Cramer এর হাতে আসে বইটি। ১৭১৩ সালে ক্রেমার পাণ্ডুলিপিটি স্যাভয় এর যুবরাজ Eugene এর কাছে উপহার হিসেবে পাঠান কারণ, যুবরাজ ছিলেন বইপ্রেমী।

১৭৩৮ সালে যুবরাজের লাইব্রেরির সব বইয়ের সাথে পাণ্ডুলিপিটিও চলে যায় ভিয়েনার সুবিখ্যাত লাইব্রেরিHofbibliothek-এ। এখনও সেখানেই আছে।

উল্লেখ্য, গস্পেল অফ বারনাবাসের একটি গ্রিক অনুবাদ পাওয়া গেছে যার অনেকটা অংশ আগুনে পোড়া।

বইটির লাতিন ভার্সন থেকে Mr & Mrs Ragg ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। বইটি প্রকাশ করে Oxford আর প্রিন্ট করে Clarendon Press । সেটি ১৯০৭ সালের কথা। কিন্তু বেশিরভাগ কপি (ইংরেজি) রহস্যজনকভাবে বাজার থেকে উধাও হয়ে যায়। বর্তমানে এর মাত্র ২টা কপির কথা শুনতে পাওয়া যায়। একটি আছে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে আর অন্যটি ওয়াশিংটনের কংগ্রেস লাইব্রেরিতে। আমেরিকার কংগ্রেস লাইব্রেরির বইটির মাইক্রোফিল্ম থেকে বইটির প্রথম সংস্করণ বের হয়, এ কাজে পৃষ্ঠপোষকতা করেন আমেরিকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক লোক, যার পরিচয়ও আজও পাওয়া যায়নি। সেটার কপি থেকেই এই সিলেক্টেড কিছু অংশের অনুবাদ... যা আপনারা পড়ছেন ধারাবাহিকভাবে... আজকে তাঁর ৯ম পর্ব।  :)

শুরু করা যাক, আগের পর্বের রেশ ধরে...      

অধ্যায় ২১৮

...

নাসরাত গ্রামে এ খবর এসে পোঁছাল যে, ঈসা ক্রুশে মারা যাবার পর পুনর্জীবিত হয়েছেন। তখন আমি ঈসার মাকে অনুরোধ জানালাম কান্না থামাতে। তাঁর ছেলে পুনর্জীবিত হয়েছেন।

কাঁদতে কাঁদতে মরিয়ম বললেন, “চল, আমরা আমার ছেলেকে দেখতে জেরুজালেম যাই। তাঁকে দেখলে আমি শান্তিতে মরতে পারব।”

অধ্যায় ২১৯

মা মরিয়ম, ইউহানা (জন) আর ইয়াকুবের সাথে আমি পোঁছালাম জেরুজালেমে। সেখানে গিয়ে মরিয়ম সবাইকে বললেন তাঁর ছেলের কথা ভুলে যেতে। তিনি জানতেন, প্রধান ইমামের ফতোয়া ভুল। কিন্তু, এত মানুষ মারা যাচ্ছে দেখে তিনি এটা বললেন। কত কষ্ট হলে একজন মা তাঁর ছেলেকে ভুলে যেতে বলেন!! সবার হৃদয়ে এসে আঘাত লাগল। আল্লাহ সবার মনের কথা জানেন। তিনি জানতেন ঈসার প্রকৃত বিশ্বাসীরা এহুদার মৃত্যুতে কত কষ্ট পেয়েছে এবং তারা তাদের নবীকে জীবিত দেখতে প্রচণ্ড আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে।

তখন মরিয়মের রক্ষক ফেরেশতারা ৪র্থ আসমানে আরোহণ করলেন; ওখানে ঈসা ফেরেশতাদের মাঝে ছিলেন। তারা তাঁকে সব কথা জানালেন। এ কথা শুনে ঈসা আল্লাহ্‌কে অনুরোধ করলেন তাঁকে তাঁর মা আর সাহাবীদের সাথে দেখা করার অনুমতি দিতে। দয়াময় আল্লাহ মঞ্জুর করলেন। তিনি তাঁর প্রিয় চার ফেরেশতাকে নির্দেশ দিলেন ঈসাকে তাঁর মায়ের কাছে নিয়ে যেতে এবং সেখানে টানা তিন দিন তাঁর উপর নযর রাখতে; যেন, প্রকৃত ইমানদার ছাড়া কেউ তাঁকে না দেখতে পায়।

ঈসা স্বর্গীয় আলোতে পরিবেষ্টিত হয়ে সেই কক্ষে এলেন যেখানে ছিলেন ২ বোন সহ মা মরিয়ম, মারথা আর মেরি মাগডালিন, আমি (বারনাবাস), ইউহানা (জন), ইয়াকুব (জেমস) আর পিটার। সবাই ভয়ে মৃতের মত পড়ে গেল। তখন ঈসা মাটি থেকে তাঁর মা আর সাহাবীদের তুলে বললেন, “ভয় পেয়ো না, আমি ঈসা। আর কেঁদো না। কারণ আমি তো জীবিত, মৃত নই। (আমাকে ধরে দেখ, কারণ আত্মার তো কোন রক্ত মাংসের শরীর থাকে নেই)” সবাই অনেকক্ষণ চুপ করে থাকল, কারণ সবাই ভেবেছিল ঈসা মৃত ছিলেন।

তখন মা মরিয়ম কেঁদে বললেন, “বল, বাছা আমার, বল আমাকে, যেখানে আল্লাহ তোমাকে মৃতকে জীবিত করার ক্ষমতা দিয়েছিলেন সেখানে কেন তিনি তোমাকে এমন মৃত্যুযন্ত্রণা দিলেন? দেখ, কত লোক তোমার ধর্ম ত্যাগ করেছে। যারা তোমাকে ভালবেসেছে তারাও খুব কষ্ট পেয়েছে।”

অধ্যায় ২২০

ঈসা তাঁর মাকে জড়িয়ে উত্তর দিলেন, “বিশ্বাস কর, মা, আমি সত্যি বলছি, আমি আদৌ মরিনি। কারণ, আল্লাহ আমাকে কিয়ামাতের কাছাকাছি সময় পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখবেন।” এ কথা বলে ঈসা চার ফেরেশতাকে বললেন যা ঘটেছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিতে।

তখন ফেরেশতা চারজন নিজেদের প্রকাশ করলেন। তাদের দেখে সবাই আবার অজ্ঞান হয়ে গেল। কারণ ফেরেস্তাদের ৪টি উজ্জ্বল আলোকউৎসের মতো দেখাচ্ছিল। তখন ঈসা তাদের কাপড় দিয়ে আড়াল করে দিলেন যেন তাদের দেখাও যায়, শোনাও যায়। এরপর তিনি সবাইকে তুললেন, বললেন, “এরা হলেন আল্লাহ্‌র প্রধান চার ফেরেশতা। ইনি জিবরাঈল (Gabriel), ওহী বহন করেন। ইনি মিকাইল (Michael), আল্লাহ্‌র শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করেন। ইনি আজরাইল(Azriel), জান কবচ করেন। আর ইনি ইস্রাফিল(Uriel), কিয়ামাতের সময় শিঙ্গা বাজাবেন আর হাশরের ময়দানে সবাইকে ডাকবেন।”

এরপর চার ফেরেশতা মরিয়মের কাছে বর্ণনা করলেন সম্পূর্ণ ঘটনা, কীভাবে এহুদার চেহারা পরিবর্তন হল যেন সে শাস্তি পায়। এ ঘটনাই আমি, বারানাবাস,এতক্ষণ লিখলাম।

শেষ হলে আমি বললাম, “প্রভু, আপনি যখন আমাদের মাঝে ছিলেন, তখন আমরা আপনাকে যেভাবে প্রশ্ন করতে পারতাম, এখনও কি পারব?”

ঈসা বললেন, “প্রশ্ন কর, বারনাবাস। আমি উত্তর দেব।”

আমি বললাম, “প্রভু, আল্লাহ তো করুণাময়, তবুও কেন তিনি আমাদের কষ্ট দিলেন, আমাদেরকে মনে করালেন আপনি মৃত? আপনার মা এত বেশি কেঁদেছেন যে উনি মৃতপ্রায়। তাছাড়া আপনি আল্লাহ্‌র প্রিয় নবী, কেন তিনি আপনার নামের এ অপপ্রচার থাকতে দিলেন যে আপনি ২ জন ডাকাতের মাঝখানে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছেন?”

ঈসা বললেন, “বিশ্বাস কর, বারনাবাস, প্রত্যেক গুনাহের আল্লাহ শাস্তি দেন, সেটা যতই ছোট হোক না কেন। আমার মা আর আমার বিশ্বাসী সাহাবীরা যারা আমাকে ভালবাসত, কিছুটা হলেও তাদের সে ঐশ্বরিক ভালবাসার মধ্যে পার্থিব ভালবাসা ছিল; তাছাড়া তোমার আমার কথা মনে রাখনি যে, আমি ক্রুশে মরব না। তাই আল্লাহ তোমাদের পরকালীন শাস্তির বদলে তোমাদের এ সাময়িক শোক দিয়েছেন। আর দ্বিতীয় কথা, আমি এ দুনিয়ায় নিষ্পাপ ছিলাম, তবুও মানুষ আমাকে ঈশ্বর ও ঈশ্বরপুত্র বলেছে, বলবেও। আল্লাহ্‌র ইচ্ছা যে, হাশরের দিন দোযখে ফেরেশতাদের দ্বারা যেন আমার অপমান না হয়, তার বদলে ক্রুশে এহুদার মৃত্যুতে মানুষের দ্বারা আমার ইহকালে কিছুটা অপমান হয়। এ অপমান চলতে থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ্‌র সেই রাসুল এর আগমন হয়, আল্লাহ তাঁর মাধ্যমে তাঁর উপর নাজিল করা কিতাবে এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করবেন, জানাবেন যে আমি ক্রুশবিদ্ধ হইনি। তার আগে নয়।”

এ কথা বলে তিনি বললেন, “হে আল্লাহ তুমি ন্যায়বিচারক। তোমার প্রতি সমস্তা প্রশংসা।”

অধ্যায় ২২১

ঈসা আমার দিকে ফিরে বললেন, “বারনাবাস, এ দুনিয়ায় আমার জীবনে যা ঘটেছে, যা বলেছি, সব আমার ইঞ্জিলে লিখে রাখ। এহুদার কথাও সেখানে লিখবে, যেন কেউ বিভ্রান্ত না হয়, সত্যটা সবার জানা দরকার।” আমি বললাম, “ইনশাআল্লাহ, আমি লিখব। কিন্তু, এহুদার কথা তো আমি জানি না, আমি দেখি নি। (আমি ক্রুশের কাছে যাইনি।)”

ঈসা বললেন, “এখানে ইউহানা আর পিটার আছে, তারা তোমাকে বলবে, ওরা দেখেছে।” তখন ঈসা তাঁর ইমানদার সব সাহাবীকে ডাকতে বললেন। ইউহানা ও ইয়াকুব নিকোদিমা আর ইউসুফের সাথে প্রধান সাত সাহাবীকে ডাকল। আরও কয়েকজনকে ডাকা হল, যারা ৭২ জনের মধ্যে ছিল। সবাই ঈসার সাথে খেল।

৩য় দিন ঈসা বললেন, “মাউন্ট অলিভ-এ চল আমার মার সাথে। আমাকে সেখানে আকাশে তুলে নেয়া হবে।” আমরা ৭২ জনের মধ্যে ৪৭ জন গেলাম, বাকি ২৫ জন পালিয়ে গিয়েছিল দামেস্কে। দুপুরবেলা সবাই প্রার্থনায় দাঁড়ালে অনেক ফেরেশতা সেখানে এলো আল্লাহ্‌র প্রশংসা করতে করতে। ঈসার মুখ থেকে এক স্বর্গীয় আলো বের হচ্ছিল, সবাই মাটিতে পড়ে গেল, কিন্তু ঈসা তাদের উঠিয়ে সান্ত্বনা দিলেন, “ভয় পেয়ো না, আমি তোমাদের সেই ঈসা।”

তিনি অনেককে ধমক দিলেন যারা তাঁর মৃত্যুর খবর বিশ্বাস করেছিল, “তোমরা কি বল আমি আর আল্লাহ মিথ্যুক? আমি বলেছি, আবারো বলছি, আল্লাহ আমার আয়ু রেখেছেন কিয়ামাতের আগ পর্যন্ত। আমি সত্যি বলছি, আমি মরিনি, সে এহুদা ছিল , বিশ্বাসঘাতক। মনে রেখ, শয়তান তোমাদের ধোঁকা দেবার চেষ্টা করবে। তোমরা আমার সাক্ষী থেক। ইসরাইল এবং সমগ্র দুনিয়ায়, মনে রেখ যা শুনেছ, যা দেখেছো।”



তিনি দুয়া করলেন আল্লাহ্‌র কাছে, যেন ইমানদাররা নাজাত পায়। কাফিররা ভুল বুঝতে পারে। দুয়া শেষে মাকে জড়িয়ে ধরে তিনি বললেন, “আসসালামু আলাইকুম, মা। (শালোম আলেইকেম)...”     

--

এতটুকু রাখলাম।

ইনশাআল্লাহ, next part এ ছবির বিষয়টা ক্লিয়ার করব, যারা জানতে চেয়েছিলেন... :)  

শেষ করছি কুরআনের আয়াত দিয়ে-

“নিশ্চয়ই তারা অবিশ্বাসী যারা বলে, মেরীর ছেলে খ্রিস্ট নিজেই ঈশ্বর। অথচ, খ্রিস্ট তো বলেছিল, হে ইজরাইলবাসী! তোমরা উপাসনা কর ঈশ্বরের যিনি আমার প্রতিপালক আর তোমাদেরও প্রতিপালক।”

“নিশ্চয়ই তারা কাফির যারা বলে, মরিয়মের ছেলে মসীহ নিজেই ঈশ্বর। অথচ, মসীহ তো বলেছিল, হে বনী ইসরাইল! তোমরা ইবাদাত কর আল্লাহ্‌র যিনি আমার প্রতিপালক আর তোমাদেরও প্রতিপালক।”  (মায়িদা ৫:৭২)


পরের পর্ব
লেখককে ফলো করুন
site search by freefind advanced

© 2013 by Ask Islam Bangla.
Powered by Create your own unique website with customizable templates.