বারনাবাস এর ইঞ্জিল (Gospel) থেকে...পর্ব ১
Christianity নিয়ে জানার আমার বেশ আগ্রহ ছিল, এবং এখনও আছে... সেই ক্লাস ১০ এ আমি জানা শুরু করি এ ধর্ম নিয়ে... ইসলামের সাথে সবচেয়ে বেশি মিল কোন ধর্মের সেটার উত্তর আসলে হবে ইহুদি ধর্ম, আর এরপরই আসবে খ্রিস্টান ধর্ম। তাদের (আমাদেরও) নবী ঈসা (আ) এর ঊর্ধ্ব-আরোহণ আর আমাদের মুহাম্মাদ (স) এর দুনিয়া আগমনের মাঝে ৫৪০ বছরের যে গ্যাপ, এ গ্যাপে আর কোন নবী আসেননি... তাই আমাদের প্রিয়নবীর নিকটতম রাসুল ছিলেন (হলেন) ঈসা (আ)।
প্রথমে কিছু বিষয় জেনে নেয়া যাক... ঈসা (আ) এর মাতৃভাষা ছিল আরামায়িক, এটা হিব্রুর একটা উপভাষার মত বলা যায়। ঈসা (আ) এর নামের আসল উচ্চারণ হল ইয়েশুয়া ( יְהוֹשֻׁעַ), কিন্তু আরবিতে এটা উচ্চারণ করা সম্ভব না কারণ “এ” উচ্চারণ নেই, তাই কিছুটা অপভ্রংশ হয়ে নামটা আরব দেশে হয়ে যায়ঈসা। ইয়েশুয়া শব্দের অর্থ "ঈশ্বরই নাজাতদাতা”; যাই হোক, ইয়েশুয়া নামটা ল্যাটিন ভাষায় প্রবেশ করে“ইসাস” (Iesus) নামে। উল্লেখ্য, রোমান বা গ্রিক পুরুষদের নামের শেষে ল্যাটিন ভাষায় “আস” বা “ইস”থাকতো... (আপোলনিয়াস, পারসিয়াস, পন্টিয়াস, জুলিয়াস ইত্যাদি) ইয়েশুয়ার নামের সাথে অ্যাড হল“আস”; আর এরপরে নামের শুরুতে I or Y ভাওয়েল থাকলে সেটা J ব্যঞ্জনে পরিণত করা হত। (যেমন, ইয়াকুব—জ্যাকব) সেভাবে ইসাস হয়ে গেল জিসাস, Jesus… আর, বাংলায় যীশু। যাই হোক, ঈসা যীশু ইয়েশুয়া জিসাস যে নামেই ডাকা হোক না কেন আসলে সেটা একজনকেই নির্দেশ করছে... তাই ঈসা পড়লে যেমন আমরা "আলাইহিসসালাম" পড়ি ওগুলোর সাথেও পড়া উচিত। কারণ, একই ব্যক্তি।
আর মাসিহ মানে খ্রিস্ট, Christ; কুরআনে তাঁকে ঈসা মাসিহ নামে সম্বোধন করা হয়েছে, অর্থাৎ যীশু খ্রিস্ট। তাই কেউ যদি যীশু খ্রিস্ট উচ্চারণ করতে আপত্তি করে থাকে তাহলে সেটা তাঁর জানার ভুল। খ্রিস্ট ধর্ম ব্যতীত ইসলামই একমাত্র ধর্ম যেটা যীশুকে এত সম্মান করে।
কুরআনে ঈসা (আ) এর অনুসারীদের "খ্রিস্টান" বলা হয়নি। বলা হয়েছে নাসারা। মানে কী? আসলে, প্রাথমিক সময়ে ঈসা (আ) এর আমলে, তাঁর অনুসারীদের কে নাসারা ডাকা হত। কারণ ঈসা (আ) এর গ্রামের নাম ছিল নাসরাত (Nazareth)। তাই তাদের বলা হত নাসারা (Nazarene)।
বিশ্বের কোটি কোটি খ্রিস্টান যেভাবে যীশুকে বিশ্বাস করে এর সাথে আমাদের বিশ্বাস বেশ ভিন্ন। আমরা মুসলিমরা তাদের মত যীশুকে ঈশ্বর ভাবি না। সাধারন মানুষ আর নবী ভাবি।
আমার মনে আছে, ছোট থাকতে বড়দিন এলেই বিটিভিতে হযরত ঈসা মাসিহ নামের একটি মুভি প্রচারিত হত। এত মায়াবী কণ্ঠস্বর আর সুন্দর উপস্থাপনা যে, বিশ্বাস করতে ইচ্ছা হয়। আমি এমন মানুষকেও পেয়েছি, যারা মুসলিম অথচ ছোটবেলায় ঐ মুভি এমনভাবে মনে দাগ কেটেছে যে, তারা ক্রুশের ঘটনাই ভাল করে জানে। মুসলিমদের বিশ্বাসটানা। মুভিটা অনেক ভাষায় ডাবিং করা হয়েছে... এখন আমি জানি কারা বাংলায় এত সুন্দর ডাবিং করেছে... এত convincing… হয়ত এ ছবিটা দেখলে আপনাদের মনে পড়বে-
প্রথমে কিছু বিষয় জেনে নেয়া যাক... ঈসা (আ) এর মাতৃভাষা ছিল আরামায়িক, এটা হিব্রুর একটা উপভাষার মত বলা যায়। ঈসা (আ) এর নামের আসল উচ্চারণ হল ইয়েশুয়া ( יְהוֹשֻׁעַ), কিন্তু আরবিতে এটা উচ্চারণ করা সম্ভব না কারণ “এ” উচ্চারণ নেই, তাই কিছুটা অপভ্রংশ হয়ে নামটা আরব দেশে হয়ে যায়ঈসা। ইয়েশুয়া শব্দের অর্থ "ঈশ্বরই নাজাতদাতা”; যাই হোক, ইয়েশুয়া নামটা ল্যাটিন ভাষায় প্রবেশ করে“ইসাস” (Iesus) নামে। উল্লেখ্য, রোমান বা গ্রিক পুরুষদের নামের শেষে ল্যাটিন ভাষায় “আস” বা “ইস”থাকতো... (আপোলনিয়াস, পারসিয়াস, পন্টিয়াস, জুলিয়াস ইত্যাদি) ইয়েশুয়ার নামের সাথে অ্যাড হল“আস”; আর এরপরে নামের শুরুতে I or Y ভাওয়েল থাকলে সেটা J ব্যঞ্জনে পরিণত করা হত। (যেমন, ইয়াকুব—জ্যাকব) সেভাবে ইসাস হয়ে গেল জিসাস, Jesus… আর, বাংলায় যীশু। যাই হোক, ঈসা যীশু ইয়েশুয়া জিসাস যে নামেই ডাকা হোক না কেন আসলে সেটা একজনকেই নির্দেশ করছে... তাই ঈসা পড়লে যেমন আমরা "আলাইহিসসালাম" পড়ি ওগুলোর সাথেও পড়া উচিত। কারণ, একই ব্যক্তি।
আর মাসিহ মানে খ্রিস্ট, Christ; কুরআনে তাঁকে ঈসা মাসিহ নামে সম্বোধন করা হয়েছে, অর্থাৎ যীশু খ্রিস্ট। তাই কেউ যদি যীশু খ্রিস্ট উচ্চারণ করতে আপত্তি করে থাকে তাহলে সেটা তাঁর জানার ভুল। খ্রিস্ট ধর্ম ব্যতীত ইসলামই একমাত্র ধর্ম যেটা যীশুকে এত সম্মান করে।
কুরআনে ঈসা (আ) এর অনুসারীদের "খ্রিস্টান" বলা হয়নি। বলা হয়েছে নাসারা। মানে কী? আসলে, প্রাথমিক সময়ে ঈসা (আ) এর আমলে, তাঁর অনুসারীদের কে নাসারা ডাকা হত। কারণ ঈসা (আ) এর গ্রামের নাম ছিল নাসরাত (Nazareth)। তাই তাদের বলা হত নাসারা (Nazarene)।
বিশ্বের কোটি কোটি খ্রিস্টান যেভাবে যীশুকে বিশ্বাস করে এর সাথে আমাদের বিশ্বাস বেশ ভিন্ন। আমরা মুসলিমরা তাদের মত যীশুকে ঈশ্বর ভাবি না। সাধারন মানুষ আর নবী ভাবি।
আমার মনে আছে, ছোট থাকতে বড়দিন এলেই বিটিভিতে হযরত ঈসা মাসিহ নামের একটি মুভি প্রচারিত হত। এত মায়াবী কণ্ঠস্বর আর সুন্দর উপস্থাপনা যে, বিশ্বাস করতে ইচ্ছা হয়। আমি এমন মানুষকেও পেয়েছি, যারা মুসলিম অথচ ছোটবেলায় ঐ মুভি এমনভাবে মনে দাগ কেটেছে যে, তারা ক্রুশের ঘটনাই ভাল করে জানে। মুসলিমদের বিশ্বাসটানা। মুভিটা অনেক ভাষায় ডাবিং করা হয়েছে... এখন আমি জানি কারা বাংলায় এত সুন্দর ডাবিং করেছে... এত convincing… হয়ত এ ছবিটা দেখলে আপনাদের মনে পড়বে-
বলা হয়ে থাকে, এটা সবচেয়ে বেশি ভাষায় ডাবিং করা এবং সবচেয়ে বেশি দেখা মুভি। বাংলায় ডাবিং করা মুভিটা দেখতে চাইলে এ লিঙ্ক-এ যান--The Jesus Film (Bengali-Musselmani Version)
যাক, ইঞ্জিল বলতে পারিভাষিকভাবে যে আসমানি কিতাব মিন করা হয় সেটার কোন লিখিত অস্তিত্ব নেই। ঈসা (আ) মুখে যা বলে গেছেন সাহাবীরা সেসব লিখেছেন জীবনীর মত করে, অতঃপর ঈসা ইহা করিলেন, এরপর ঈসা উহা বলিলেন... এভাবে। এগুলোই বর্তমানে ইঞ্জিল নামে পরিচিত। ইংলিশে gospel.
যীশুর জন্ম থেকে শুরু করে তাঁর তথাকথিত ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু আর পুনর্জীবিত হওয়া নিয়ে যে কাহিনী খ্রিস্টানদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে সেটা মুলত বাইবেল থেকে নেয়া। ম্যাথিউ, মারক, লুক আর জন এর লিখা এ জীবনীগুলো পড়লেই বোঝা যায় তারা নিজেরাই একমত না আসলে কী হয়েছিল...
আমাদের মুসলিমদের বিশ্বাস এসেছে কুরআন থেকে... কুরআন-এ যীশুর যে কাহিনী বর্ণিত রয়েছে সেটার সাথে খ্রিস্টানদের কাহিনীর কিছু মৌলিক পার্থক্য আছে। তবে, অনেক মিল আছে বারনাবাস নামে একজন সাহাবীর লিখা একটি gospel এ… GOSPEL OF BARNABAS.
বারনাবাস এর আসল নাম ইউসুফ। কিন্তু, ঈসা(আ) এর প্রতি তাঁর অটল ভক্তির কারণে অন্যান্য সাহাবীরা তাঁকে বারনাবাস ডাকত। আরামায়িকে “বার নাবিয়া”। “ইবনে নবী” অর্থাৎ নবীপুত্র।
বলা হয়ে থাকে, ৪৭৮ সালে সম্রাট জেনোর ৪র্থ বর্ষে বারনাবাস এর কবর আবিষ্কৃত হয় এবং সেখানে তাঁর নিজের হাতে লিখা এ ইঞ্জিল এর একটি কপি পাওয়া যায়। তবে এর আগে থেকেই অন্যান্য কপির মাধ্যমে বারনাবাসের ইঞ্জিল পরিচিত ছিল। তবে, ব্যানড ছিল।
৩৮২ সালে ক্যাথলিক চার্চ এ ইঞ্জিল নিষিদ্ধ করে। কেন? কারণ, এখানে স্পষ্টভাবে মুহাম্মাদ (স) এর কথা বলা আছে। যিনি হবেন শেষ নবী।
ভ্যাটিকান এর নিষিদ্ধ বইয়ের তালিকায় এখনও দেখতে পাওয়া যায় এ ইঞ্জিলের নাম।
এ ইঞ্জিলে অনেক বিস্তারিতভাবে ২২২টা অধ্যায়ে ঈসা(আ) এর নবুয়াত থেকে ক্রুশের ঘটনা পর্যন্ত বর্ণনা আছে বারনাবাস এর প্রত্যক্ষ বিবরণে। যা ইসলামের সাথে মিলে যায়।
বলা হয়, এখানে আছে ক্রুশের ঘটনার আসল বিবরন, আসলে কে মারা যায় ক্রুশে? কীভাবে? এরপর কী হল? বিস্তারিত রয়েছে বিশ্বাসঘাতকতার এক অবাক করা কাহিনী। অনেকে "দা ভিঞ্চি কোড" পড়ে মেরি মাগডালিন (Mary Magdalene) সম্পর্কে জানতে চান, আসলে উনি কে... এখানে খুব বিস্তারিতই আছে তাঁর কথা... এখন বলব না কী আছে... শুধু বলব আমার মতে, তাঁর নাম উচ্চারণের পরে "রাদিয়াল্লাহুতায়ালা আনহা" বলা উচিত। আরও ১১ জনের নাম লিখা হবে পরে, এদের নামের পরেও এটা বলা উচিত। তবে শুধু একজন আছে যার নামের পরে উচিত না। এখন ক্লিয়ার করব না ব্যাপারটা। থাকুক। পরে। { যীশুর আসল চেহারা কীভাবে পাওয়া সম্ভব এবং এ ইঞ্জিলের পুরো ইতিহাস শেষ পর্বে দিব ইনশাল্লাহ }
তবে এটা ঠিক, কুরআন একমাত্র প্রাচীন গ্রন্থ যেটা অবিকৃত। তাই, আমি বলব না, এ ইঞ্জিলটি অবিকৃত। এই সুদীর্ঘ ২০০০ বছরে এটা অনেক হাতে হাতে ঘুরেছে। অনেক অনুবাদ হয়েছে... তাই এটা বিকৃত হতেই পারে কিছুটা... আমি এটার মধ্যে বেশ কিছু মধ্যযুগীয় প্রভাব পড়েছি... এটা সম্ভবত তখনকার অনুবাদকদের কারণে হয়েছে... তবে, আমি বলব ইসলামের সাথে অন্তত ৯৫% মিল আছে এ ইঞ্জিলের। {অস্বীকার করলাম না ভুলের কথা, তাই আমার atheist friendদের বলছি,আপনারা এটা ধারাবাহিক গল্প/উপন্যাস হিসেবে পড়ে যেতে পারেন, কারণ জানি এটা বিশ্বাস করবেন না। }
আমি বারনাবাসের ইঞ্জিল এর সিলেক্টেড বেশ কিছু পার্ট বাংলায় ধারবাহিকভাবে দিব... যে পার্টগুলো নিয়েই মানুষ বেশি জানতে চায়... অনুবাদের ক্ষেত্রে আমি বাংলায় ইসলামিক পরিভাষা ইউজ করেছি...
কোন ধর্মগ্রন্থে নবীর নামের সাথে "(আ)" থাকে না, এ বইয়েও ছিল না। তাই অনুবাদেও লিখলাম না।
আজকে প্রথম পার্ট দিলাম...
। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
সূচনাঃ দুনিয়াতে আল্লাহর প্রেরিত নতুন একজন নবী ঈসা মসীহ। তাঁর সাহাবী বারনাবাস এর বর্ণনা থেকে সংগৃহীত।
আমি বারনাবাস। মসীহ নামে পরিচিত ঈসা নাসারার সাহাবী, এ দুনিয়ার শান্তিপ্রিয় সবার উদ্দেশ্যে লিখছি...
পরম করুনাময় মহান আল্লাহ তাঁর নবী ঈসা মসীহকে কিছু দিন আগে আমাদের মাঝে পাঠিয়েছিলেন। তিনি অনেক মুজেজা দেখিয়েছেন আর শিখিয়েছেন অনেক কিছু। কিন্তু এখন অনেকেই শয়তানের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ে ধার্মিকতার আড়ালে চরম অধার্মিক ধর্মকথা প্রচার করছে। তারা বলছে ঈসা ছিলেন ঈশ্বরপুত্র, বাতিল করছে খৎনা-প্রথা চিরদিনের জন্য আর অনুমতি দিচ্ছে সকল হারাম খাদ্য খাওয়ার। আমার দুর্ভাগ্য, আমার প্রিয় বন্ধু পল (Saint Paul) এদের অন্তর্গত। হযরত ঈসার সাথে থাকাকালীন আমি যা দেখেছি ও শুনেছি তার ভিত্তিতে আমি এ লেখা লিখছি, যেন তোমরা শয়তানের হাত থেকে বাঁচতে পার আর আল্লাহর আজাবে না পড়। আমার এ লেখা যেন চিরদিন তোমাদের পথ দেখায়। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তোমাদের সাথে থাকুন আর শয়তান ও সকল কুপ্রবৃত্তি থেকে তোমাদের রক্ষা করুন। আমিন।
অধ্যায় ১- ঈসার জন্ম-সংবাদ দিতে মরিয়মের কাছে ফেরেশতা জিবরাঈল।
যাক, ইঞ্জিল বলতে পারিভাষিকভাবে যে আসমানি কিতাব মিন করা হয় সেটার কোন লিখিত অস্তিত্ব নেই। ঈসা (আ) মুখে যা বলে গেছেন সাহাবীরা সেসব লিখেছেন জীবনীর মত করে, অতঃপর ঈসা ইহা করিলেন, এরপর ঈসা উহা বলিলেন... এভাবে। এগুলোই বর্তমানে ইঞ্জিল নামে পরিচিত। ইংলিশে gospel.
যীশুর জন্ম থেকে শুরু করে তাঁর তথাকথিত ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু আর পুনর্জীবিত হওয়া নিয়ে যে কাহিনী খ্রিস্টানদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে সেটা মুলত বাইবেল থেকে নেয়া। ম্যাথিউ, মারক, লুক আর জন এর লিখা এ জীবনীগুলো পড়লেই বোঝা যায় তারা নিজেরাই একমত না আসলে কী হয়েছিল...
- Gospel of Matthew
- Gospel of Mark
- Gospel of Luke
- Gospel of John
আমাদের মুসলিমদের বিশ্বাস এসেছে কুরআন থেকে... কুরআন-এ যীশুর যে কাহিনী বর্ণিত রয়েছে সেটার সাথে খ্রিস্টানদের কাহিনীর কিছু মৌলিক পার্থক্য আছে। তবে, অনেক মিল আছে বারনাবাস নামে একজন সাহাবীর লিখা একটি gospel এ… GOSPEL OF BARNABAS.
বারনাবাস এর আসল নাম ইউসুফ। কিন্তু, ঈসা(আ) এর প্রতি তাঁর অটল ভক্তির কারণে অন্যান্য সাহাবীরা তাঁকে বারনাবাস ডাকত। আরামায়িকে “বার নাবিয়া”। “ইবনে নবী” অর্থাৎ নবীপুত্র।
বলা হয়ে থাকে, ৪৭৮ সালে সম্রাট জেনোর ৪র্থ বর্ষে বারনাবাস এর কবর আবিষ্কৃত হয় এবং সেখানে তাঁর নিজের হাতে লিখা এ ইঞ্জিল এর একটি কপি পাওয়া যায়। তবে এর আগে থেকেই অন্যান্য কপির মাধ্যমে বারনাবাসের ইঞ্জিল পরিচিত ছিল। তবে, ব্যানড ছিল।
৩৮২ সালে ক্যাথলিক চার্চ এ ইঞ্জিল নিষিদ্ধ করে। কেন? কারণ, এখানে স্পষ্টভাবে মুহাম্মাদ (স) এর কথা বলা আছে। যিনি হবেন শেষ নবী।
ভ্যাটিকান এর নিষিদ্ধ বইয়ের তালিকায় এখনও দেখতে পাওয়া যায় এ ইঞ্জিলের নাম।
এ ইঞ্জিলে অনেক বিস্তারিতভাবে ২২২টা অধ্যায়ে ঈসা(আ) এর নবুয়াত থেকে ক্রুশের ঘটনা পর্যন্ত বর্ণনা আছে বারনাবাস এর প্রত্যক্ষ বিবরণে। যা ইসলামের সাথে মিলে যায়।
বলা হয়, এখানে আছে ক্রুশের ঘটনার আসল বিবরন, আসলে কে মারা যায় ক্রুশে? কীভাবে? এরপর কী হল? বিস্তারিত রয়েছে বিশ্বাসঘাতকতার এক অবাক করা কাহিনী। অনেকে "দা ভিঞ্চি কোড" পড়ে মেরি মাগডালিন (Mary Magdalene) সম্পর্কে জানতে চান, আসলে উনি কে... এখানে খুব বিস্তারিতই আছে তাঁর কথা... এখন বলব না কী আছে... শুধু বলব আমার মতে, তাঁর নাম উচ্চারণের পরে "রাদিয়াল্লাহুতায়ালা আনহা" বলা উচিত। আরও ১১ জনের নাম লিখা হবে পরে, এদের নামের পরেও এটা বলা উচিত। তবে শুধু একজন আছে যার নামের পরে উচিত না। এখন ক্লিয়ার করব না ব্যাপারটা। থাকুক। পরে। { যীশুর আসল চেহারা কীভাবে পাওয়া সম্ভব এবং এ ইঞ্জিলের পুরো ইতিহাস শেষ পর্বে দিব ইনশাল্লাহ }
তবে এটা ঠিক, কুরআন একমাত্র প্রাচীন গ্রন্থ যেটা অবিকৃত। তাই, আমি বলব না, এ ইঞ্জিলটি অবিকৃত। এই সুদীর্ঘ ২০০০ বছরে এটা অনেক হাতে হাতে ঘুরেছে। অনেক অনুবাদ হয়েছে... তাই এটা বিকৃত হতেই পারে কিছুটা... আমি এটার মধ্যে বেশ কিছু মধ্যযুগীয় প্রভাব পড়েছি... এটা সম্ভবত তখনকার অনুবাদকদের কারণে হয়েছে... তবে, আমি বলব ইসলামের সাথে অন্তত ৯৫% মিল আছে এ ইঞ্জিলের। {অস্বীকার করলাম না ভুলের কথা, তাই আমার atheist friendদের বলছি,আপনারা এটা ধারাবাহিক গল্প/উপন্যাস হিসেবে পড়ে যেতে পারেন, কারণ জানি এটা বিশ্বাস করবেন না। }
আমি বারনাবাসের ইঞ্জিল এর সিলেক্টেড বেশ কিছু পার্ট বাংলায় ধারবাহিকভাবে দিব... যে পার্টগুলো নিয়েই মানুষ বেশি জানতে চায়... অনুবাদের ক্ষেত্রে আমি বাংলায় ইসলামিক পরিভাষা ইউজ করেছি...
কোন ধর্মগ্রন্থে নবীর নামের সাথে "(আ)" থাকে না, এ বইয়েও ছিল না। তাই অনুবাদেও লিখলাম না।
আজকে প্রথম পার্ট দিলাম...
। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
সূচনাঃ দুনিয়াতে আল্লাহর প্রেরিত নতুন একজন নবী ঈসা মসীহ। তাঁর সাহাবী বারনাবাস এর বর্ণনা থেকে সংগৃহীত।
আমি বারনাবাস। মসীহ নামে পরিচিত ঈসা নাসারার সাহাবী, এ দুনিয়ার শান্তিপ্রিয় সবার উদ্দেশ্যে লিখছি...
পরম করুনাময় মহান আল্লাহ তাঁর নবী ঈসা মসীহকে কিছু দিন আগে আমাদের মাঝে পাঠিয়েছিলেন। তিনি অনেক মুজেজা দেখিয়েছেন আর শিখিয়েছেন অনেক কিছু। কিন্তু এখন অনেকেই শয়তানের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ে ধার্মিকতার আড়ালে চরম অধার্মিক ধর্মকথা প্রচার করছে। তারা বলছে ঈসা ছিলেন ঈশ্বরপুত্র, বাতিল করছে খৎনা-প্রথা চিরদিনের জন্য আর অনুমতি দিচ্ছে সকল হারাম খাদ্য খাওয়ার। আমার দুর্ভাগ্য, আমার প্রিয় বন্ধু পল (Saint Paul) এদের অন্তর্গত। হযরত ঈসার সাথে থাকাকালীন আমি যা দেখেছি ও শুনেছি তার ভিত্তিতে আমি এ লেখা লিখছি, যেন তোমরা শয়তানের হাত থেকে বাঁচতে পার আর আল্লাহর আজাবে না পড়। আমার এ লেখা যেন চিরদিন তোমাদের পথ দেখায়। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তোমাদের সাথে থাকুন আর শয়তান ও সকল কুপ্রবৃত্তি থেকে তোমাদের রক্ষা করুন। আমিন।
অধ্যায় ১- ঈসার জন্ম-সংবাদ দিতে মরিয়মের কাছে ফেরেশতা জিবরাঈল।
বছরকয়েক আগে, ইয়াহুদা (Judah) বংশে দাউদের (David) বংশধারায় মরিয়ম (Mary) নামের একজন কুমারী ছিলেন। আল্লাহর ফেরেশতা জিবরাঈল (Gabriel) তাঁর কাছে এলেন। কুমারী মরিয়ম দিনকাল কাটাতেন নামাজ-রোজা করে। তাঁর চরিত্র সম্পর্কে কেউ কখনও কোন অপবাদ দিতে পারেনি। একদিন তিনি একা একা তাঁর কক্ষে ছিলেন। তখন ফেরেশতা জিবরাঈল ঢুকে সালাম দিলেন এবং বললেন, “আল্লাহ তোমার সাথে থাকুন, হে মরিয়ম!”
মরিয়ম ফেরেশতাকে দেখে ভয় পেলেন, কিন্তু ফেরেশতা তাঁকে সান্ত্বনা দিলেন, “ভয় পেয়ো না, মরিয়ম। কারণ আল্লাহর একজন প্রিয় বান্দা তুমি। তিনি তোমাকে পছন্দ করেছেন একজন নবীর মা হবার জন্য, যাকে আল্লাহ বনি ইসরাইলের মঙ্গলের জন্য প্রেরণ করবেন।”
কুমারী উত্তর দিলেন, “আমার কী করে সন্তান হবে, যখন কোন পুরুষকে স্পর্শ পর্যন্ত করিনি?” ফেরেশতা উত্তর দিলেন, “মরিয়ম আল্লাহ যেখানে পিতামাতা ছাড়া মানুষ (আদম) সৃষ্টি করেছেন, সেখানে কেন তিনি শুধু পিতা ছাড়া সন্তান দিতে পারবেন না? তাঁর কাছে অসম্ভব বলে কিছু নেই।”
মরিয়ম বললেন, “জানি, আল্লাহ সবই পারেন। তাঁর ইচ্ছাই সম্পন্ন হোক।” ফেরেশতা বললেন, “এখন সেই নবীকে গর্ভে ধারণ কর, তাঁর নাম রাখবে ‘ঈসা’; তাঁকে মদ, নেশা পানীয় আর হারাম মাংশ থেকে বিরত রাখবে, কারণ তিনি আল্লাহর এক পবিত্র বান্দা।” মরিয়ম বললেন, “তাই হোক।”
ফেরেশতা চলে গেলেন। মরিয়ম আল্লাহর প্রশংসা করে বললেন, “হে মহান আল্লাহ! আমার সমস্ত দেহ-মন শুধু তোমারই জন্য। তুমি আমার রক্ষাকর্তা । তুমি তোমার এ নগণ্য বান্দাকে এত উচ্চ মর্যাদা দিয়েছ যে ভবিষ্যতে সকল জাতিতে আমার নাম প্রশংসিত হবে। সমস্ত প্রশংসা কেবল তোমার!! তোমার করুণা সবার প্রতি...”
###########
কমেন্ট করবেন প্লিজ। আপনার কোন জিজ্ঞাসা থাকলে অবশ্যই জিজ্ঞেস করে নিন।
{এর পরের পর্বে, ঈসার নবুয়াত প্রাপ্তি, কখন কোথায় কীভাবে? তাঁর ধর্মপ্রচারের সূচনা। পরের পর্ব }
মরিয়ম ফেরেশতাকে দেখে ভয় পেলেন, কিন্তু ফেরেশতা তাঁকে সান্ত্বনা দিলেন, “ভয় পেয়ো না, মরিয়ম। কারণ আল্লাহর একজন প্রিয় বান্দা তুমি। তিনি তোমাকে পছন্দ করেছেন একজন নবীর মা হবার জন্য, যাকে আল্লাহ বনি ইসরাইলের মঙ্গলের জন্য প্রেরণ করবেন।”
কুমারী উত্তর দিলেন, “আমার কী করে সন্তান হবে, যখন কোন পুরুষকে স্পর্শ পর্যন্ত করিনি?” ফেরেশতা উত্তর দিলেন, “মরিয়ম আল্লাহ যেখানে পিতামাতা ছাড়া মানুষ (আদম) সৃষ্টি করেছেন, সেখানে কেন তিনি শুধু পিতা ছাড়া সন্তান দিতে পারবেন না? তাঁর কাছে অসম্ভব বলে কিছু নেই।”
মরিয়ম বললেন, “জানি, আল্লাহ সবই পারেন। তাঁর ইচ্ছাই সম্পন্ন হোক।” ফেরেশতা বললেন, “এখন সেই নবীকে গর্ভে ধারণ কর, তাঁর নাম রাখবে ‘ঈসা’; তাঁকে মদ, নেশা পানীয় আর হারাম মাংশ থেকে বিরত রাখবে, কারণ তিনি আল্লাহর এক পবিত্র বান্দা।” মরিয়ম বললেন, “তাই হোক।”
ফেরেশতা চলে গেলেন। মরিয়ম আল্লাহর প্রশংসা করে বললেন, “হে মহান আল্লাহ! আমার সমস্ত দেহ-মন শুধু তোমারই জন্য। তুমি আমার রক্ষাকর্তা । তুমি তোমার এ নগণ্য বান্দাকে এত উচ্চ মর্যাদা দিয়েছ যে ভবিষ্যতে সকল জাতিতে আমার নাম প্রশংসিত হবে। সমস্ত প্রশংসা কেবল তোমার!! তোমার করুণা সবার প্রতি...”
###########
কমেন্ট করবেন প্লিজ। আপনার কোন জিজ্ঞাসা থাকলে অবশ্যই জিজ্ঞেস করে নিন।
{এর পরের পর্বে, ঈসার নবুয়াত প্রাপ্তি, কখন কোথায় কীভাবে? তাঁর ধর্মপ্রচারের সূচনা। পরের পর্ব }
লেখককে ফলো করুন
|
© 2013 by Ask Islam Bangla.