বারনাবাস এর ইঞ্জিল (Gospel) থেকে...পর্ব ১০
{ আগের পর্ব পড়ে না থাকলে, পড়ে আসতে অনুরোধ করছি... যদি পড়া না থাকে তাহলে ৯ম পর্বর লিঙ্ক এখানে আর, একদম প্রথম থেকে পড়তে চাইলে, এখানে ক্লিক করুন }
আগের পর্বের পর থেকে... Gospel of Barnabas...
অধ্যায় ২২১
৩য় দিন ঈসা বললেন, “মাউন্ট অলিভ-এ চল আমার মার সাথে। আমাকে সেখানে আকাশে তুলে নেয়া হবে।” আমরা ৭২ জনের মধ্যে ৪৭ জন গেলাম, বাকি ২৫ জন পালিয়ে গিয়েছিল দামেস্কে। দুপুরবেলা সবাই প্রার্থনায় দাঁড়ালে অনেক ফেরেশতা সেখানে এলো আল্লাহ্র প্রশংসা করতে করতে। ঈসার মুখ থেকে এক স্বর্গীয় আলো বের হচ্ছিল, সবাই মাটিতে পড়ে গেল, কিন্তু ঈসা তাদের উঠিয়ে সান্ত্বনা দিলেন, “ভয় পেয়ো না, আমি তো তোমাদের সেই ঈসা।”
তিনি অনেককে ধমক দিলেন যারা তাঁর মৃত্যুর খবর বিশ্বাস করেছিল, “তোমরা কি বল আমি আর আল্লাহ মিথ্যুক? আমি বলেছি, আবারো বলছি, আল্লাহ আমার আয়ু রেখেছেন কিয়ামাতের আগ পর্যন্ত। আমি সত্যি বলছি, আমি মরিনি, সে এহুদা ছিল , বিশ্বাসঘাতক। মনে রেখ, শয়তান তোমাদের ধোঁকা দেবার চেষ্টা করবে। তোমরা আমার সাক্ষী থেক। ইসরাইল এবং সমগ্র দুনিয়ায়, মনে রেখ যা শুনেছ, যা দেখেছো।”
তিনি দুয়া করলেন আল্লাহ্র কাছে, যেন ইমানদাররা নাজাত পায়। কাফিররা ভুল বুঝতে পারে। দুয়া শেষে মাকে জড়িয়ে ধরে তিনি বললেন, “আসসালামু আলাইকুম, মা। (সালোম আলেইকেম)... সমস্ত প্রসংসা আল্লাহ্র যিনি তোমাকে আর আমাকে সৃষ্টি করেছেন।” এ কথা বলে তিনি সাহাবীদের দিকে তাকালেন এবং বললেন, “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।” এরপর সবার চোখের সামনে চার ফেরেশতা ঈসাকে আকাশে তুলে নিলেন।
অধ্যায় ২২২
ঈসা চলে যাবার পর, সাহাবীরা ইসরাইল আর বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লেন। কিন্তু প্রকৃত সত্য শয়তানের কারসাজিতে চাপা পড়ে গেল। কিছু শয়তান লোক নিজেদের ঈসার সাহাবী বলে দাবি করে প্রচার করল যে, ঈসা মারা গিয়েছেন এবং পুনর্জীবিত হয়েছেন, যেমনটা গুজব ছড়ানো হয়েছিল। কিন্তু আমরা- আমি যতটুকু লিখে গেলাম- তা প্রচার করি না। অন্যরা প্রচার করল আর এখনও করে যে, ঈসা নাকি ইবনুল্লাহ (আল্লাহ্র পুত্র), দুঃখের ব্যাপার এদের মাঝে পলও (Paul) আছে। তারা শয়তানের দ্বারা বিভ্রান্ত। কিন্তু, আমরা প্রচার করি সত্য কথা।, প্রচার করি তাদের কাছে যারা আল্লাহ্কে ভয় করে, যেন কিয়ামাতের দিন আল্লাহ্র বিচারে তারা মুক্তি লাভ করে। বেহেশত পায়।
আমিন।
. -ইঞ্জিলের সমাপ্তি- .
এই হল বারনাবাসের ইঞ্জিল...
অবশেষে শেষ করতে পারলাম... :)
ঈসা (আ) এর প্রার্থনায় সাহাবীদেরকে একটা মিরাকল দেয়া হয়েছিল। তারা ধর্মপ্রচারের স্বার্থে অনেক বিদেশি ভাষায় কথা বলতে পারতেন। অথচ এর আগে তারা এ ভাষা জানতেনও না।
এখন একটা ব্যাপার লিখি, খ্রিস্টানদের অনেকে বিশ্বাস করে যীশুর কথা মাফিক তাঁর সাহাবী জন (ইউহানা) {John The Apostle} যীশুর ২য় আগমন পর্যন্ত পৃথিবীতে জীবিত থাকবেন... জন মারা যাবেন যখন যীশু আবার পৃথিবীতে আসবেন। John 21:21-23 থেকে এটা তারা মনে করে।
প্রশ্ন হল, এটা কি ট্রু? এমন কি আসলেই হতে পারে? ঈসা যদি আসলেই এমন দোয়া করে থাকেন, তাহলে কি ইউহানা এখনও জীবিত?
আমি ইউহানা নিয়ে কী কী পাওয়া যায় ইসলামিক লিটারেচার এ... সেটা খুঁজেছি অনেক... ইউহানা নাম এসেছে বেশ কয়েক বার। কিন্তু, তিনি কি জীবিত? এটা মাত্র একটা ঘটনায় আমি পেয়েছি... আমি তুলে দিলাম আপনাদের জন্য--->
শাওয়াহেদুন নবুয়ত, মদিনা পাবলিকেশন, পৃষ্ঠা ২৬-
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা) বলেন, কাদেসিয়া যুদ্ধ চলাকালে খলিফা উমর (রা) হযরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা)কে চিঠি লিখলেন, নজলা ইবনে মুয়াবিয়াকে যেন হুলওয়ানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সাদ তাই করলেন। নজলা যখন তাঁর দলবল সহ হুলওয়ান আক্রমণ করেন, তখন অনেক বন্দি আর গনিমাতের মাল হাতে আসল। জোহরের নামাজ পড়ার জন্য তিনি এক পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান নিলেন। নামাজের জন্য আজানে যখন “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার” বলা হল। তখন পাহাড় থেকে আওয়াজ এলো, “নজলা! তুমি মহতের মহত্ত্ব বর্ণনা করেছ।”
যখন তিনি “আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলেন, তখন আওয়াজ এলো, “নজলা! তুমি ইখলাসের কালিমা বললে।”
যখন “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ” বলা হল, তখন আওয়াজ এলো, “আমাকে মরিয়ম এর পুত্র ঈসা তো ইনারই সুসংবাদ দিয়েছেন।”
যখন “হাইয়া আলাসসালাহ” বলা হল, তখন আওয়াজ এলো, “যে সালাতে যায়, তাঁর জন্য মোবারকবাদ।”
যখন “হাইয়া আলাল ফালাহ” বললেন, তখন আওয়াজ এলো, “যে সাড়া দিবে, সে সফল হবে।”
এভাবে আজান শেষ করার পর, নজলা বললেন, “আল্লাহ তোমার প্রতি রহম করুন, তুমি কে? তুমি তোমার স্বর যখন আমাদের শুনিয়েছই তখন আকৃতিও দেখাও। কেননা, আমরাও আল্লাহ্র বান্দা আর তাঁর রাসুলের উম্মাত। আমরা খলিফা উমারের সৈনিক।”
এরপর পাহাড় থেকে বেরিয়ে এলো একজন। মাথায় সাদা কেশ। পুরনো পশমি বস্ত্র। সে বলল, “আসসালামু আলাইকুম।”
নজলা বললেন, “ওয়ালাইকুম সালাম। তুমি কে? তোমার পরিচয় দাও।”
সে বলল, “আমি রুজায়ব ইবনে বরমসলি। হযরত ঈসার (আ) সাহাবী... তিনি তখন পর্যন্ত আমার বেঁচে থাকার জন্য দোয়া করেছেন যখন তিনি আকাশ থেকে অবতরণ করবেন। শূকর হত্যা করবেন। ক্রুশ ভেঙে খ্রিস্টানদের অপবাদ ও মিথ্যাচার থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন। মুহাম্মাদ (স) এর সাথে আমার সাক্ষাত হয়নি। আমার সালাম হযরত উমারকে পৌঁছে দেবে। তাঁকে বলবে, “...” ” [এখানে একটা আরবি লাইন ছিল, আমি বুঝিনি। তাই লিখলাম না।]
এরপর সে আরও অনেক কথা বলল এরপর চলে গেল।
নজলা এ ঘটনা হযরত সাদ (রা) কে লিখলেন আর তিনি সেটা লিখলেন উমার (রা)কে।
খলিফা উমার (রা) তখন নির্দেশ দিলেন সাদকে (রা), মুহাজির আর আনসারদের একটা দল নিয়ে ঐ পাহাড়ে যাও। সেখানে তাঁকে পেলে আমার সালাম দিবে তাঁকে। কারণ, রাসুল (স) এর দেয়া খবর অনুযায়ী ঈসার (আ) সাহাবীদের মধ্যে কেউ ওখানে আছেন।
হজরত সাদ (রা) ৪০০০ মুহাজির আর আনসার সহ ৪০ দিন ওখানে থাকলেন। ঐ পাহাড়ে প্রত্যেক বার নামাজের জন্য নিজে আজান দিতেন। কিন্তু আর কোন দিন সেদিনের মতো জবাব আসেনি। কেউ আর বের হয়ে আসেনি।
এই হল ঘটনা। নাম মিলে নি। এটা একটা ভাবার বিষয়।
কিন্তু, নাম না মেলার ব্যাপার নতুন না। এক্ষেত্রে ইসলামিক স্কলাররা যেটা করেন সেটা হল আগের ধর্মের রেওাত থেকে ঘটনা মিলিয়ে দেখেন। দেখা যায়, একজন সম্পর্কে একই ঘটনা বর্ণিত আছে। কিন্তু, নাম ভিন্ন। সুতরাং দুজনই সেম।
যেমন, আগের রেওয়াতে মাদায়েনের এক নবীর কথা লিখা আছে। যার কাছে মুসা গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর নাম লিখা জেথ্রো। কিন্তু, এটা সিওর তিনি আর আমাদের শুয়াইব (আ) একই ব্যক্তি।
ঈসা (আ) সম্পর্কে কেবল একজন এর ক্ষেত্রেই বলা হয়, যার জন্য ঈসা এমন দোয়া করেছেন। তিনি ইউহানা। সুতরাং এখানে এটা ইউহানা হবার কথা।
যাক, এবার আসা যাক, সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা প্রসঙ্গে।
মনে আছে আপনাদের, “যীশু”র অর্থাৎ জুডাসের দেহ যখন ক্রুশ থেকে নামান হল... তখন তাঁর দেহে সুগন্ধি মাখিয়ে লিনেনের কাফনের কাপড় দিয়ে পেঁচান হল।
সেই কাফনের কাপড়ের কথা বলব এখন। সেটা পেলে আমরা এখন সেটা থেকে কী কী বের করতে পারব? আধুনিক প্রযুক্তি আছে আমাদের কাছে!! আসুন দেখা যাক... :)
তুরিন।
ইতালির উত্তরের এক শহর।
এ শহরেই রয়েছে Cathedral of Saint John the Baptist যা Turin Cathedral নামেও পরিচিত। এ চার্চে মিলিয়ন ভিজিটর এসেছিলেন একটা রেলিক দেখতে। কী সেই রেলিক?
সেই কাফনের কাপড়। যা এখন শ্রাউড অফ তুরিন নামে পরিচিত। যা পাশের ছবিতে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। ভাল করে দেখুন, একটা হাল্কা দেহের আভাস দেখতে পাচ্ছেন? :)
এ কাফনের কাপড় এর ইতিহাস খুব ভালভাবে রেকর্ড করা আছে মধ্যযুগ থেকে। এর আগের ইতিহাস তেমন ভাল করে রাখা নেই। আসুন সবার আগে সেই কাফনের উপর দৃষ্টি নিক্ষেপ করি।
আগের পর্বের পর থেকে... Gospel of Barnabas...
অধ্যায় ২২১
৩য় দিন ঈসা বললেন, “মাউন্ট অলিভ-এ চল আমার মার সাথে। আমাকে সেখানে আকাশে তুলে নেয়া হবে।” আমরা ৭২ জনের মধ্যে ৪৭ জন গেলাম, বাকি ২৫ জন পালিয়ে গিয়েছিল দামেস্কে। দুপুরবেলা সবাই প্রার্থনায় দাঁড়ালে অনেক ফেরেশতা সেখানে এলো আল্লাহ্র প্রশংসা করতে করতে। ঈসার মুখ থেকে এক স্বর্গীয় আলো বের হচ্ছিল, সবাই মাটিতে পড়ে গেল, কিন্তু ঈসা তাদের উঠিয়ে সান্ত্বনা দিলেন, “ভয় পেয়ো না, আমি তো তোমাদের সেই ঈসা।”
তিনি অনেককে ধমক দিলেন যারা তাঁর মৃত্যুর খবর বিশ্বাস করেছিল, “তোমরা কি বল আমি আর আল্লাহ মিথ্যুক? আমি বলেছি, আবারো বলছি, আল্লাহ আমার আয়ু রেখেছেন কিয়ামাতের আগ পর্যন্ত। আমি সত্যি বলছি, আমি মরিনি, সে এহুদা ছিল , বিশ্বাসঘাতক। মনে রেখ, শয়তান তোমাদের ধোঁকা দেবার চেষ্টা করবে। তোমরা আমার সাক্ষী থেক। ইসরাইল এবং সমগ্র দুনিয়ায়, মনে রেখ যা শুনেছ, যা দেখেছো।”
তিনি দুয়া করলেন আল্লাহ্র কাছে, যেন ইমানদাররা নাজাত পায়। কাফিররা ভুল বুঝতে পারে। দুয়া শেষে মাকে জড়িয়ে ধরে তিনি বললেন, “আসসালামু আলাইকুম, মা। (সালোম আলেইকেম)... সমস্ত প্রসংসা আল্লাহ্র যিনি তোমাকে আর আমাকে সৃষ্টি করেছেন।” এ কথা বলে তিনি সাহাবীদের দিকে তাকালেন এবং বললেন, “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।” এরপর সবার চোখের সামনে চার ফেরেশতা ঈসাকে আকাশে তুলে নিলেন।
অধ্যায় ২২২
ঈসা চলে যাবার পর, সাহাবীরা ইসরাইল আর বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লেন। কিন্তু প্রকৃত সত্য শয়তানের কারসাজিতে চাপা পড়ে গেল। কিছু শয়তান লোক নিজেদের ঈসার সাহাবী বলে দাবি করে প্রচার করল যে, ঈসা মারা গিয়েছেন এবং পুনর্জীবিত হয়েছেন, যেমনটা গুজব ছড়ানো হয়েছিল। কিন্তু আমরা- আমি যতটুকু লিখে গেলাম- তা প্রচার করি না। অন্যরা প্রচার করল আর এখনও করে যে, ঈসা নাকি ইবনুল্লাহ (আল্লাহ্র পুত্র), দুঃখের ব্যাপার এদের মাঝে পলও (Paul) আছে। তারা শয়তানের দ্বারা বিভ্রান্ত। কিন্তু, আমরা প্রচার করি সত্য কথা।, প্রচার করি তাদের কাছে যারা আল্লাহ্কে ভয় করে, যেন কিয়ামাতের দিন আল্লাহ্র বিচারে তারা মুক্তি লাভ করে। বেহেশত পায়।
আমিন।
. -ইঞ্জিলের সমাপ্তি- .
এই হল বারনাবাসের ইঞ্জিল...
অবশেষে শেষ করতে পারলাম... :)
ঈসা (আ) এর প্রার্থনায় সাহাবীদেরকে একটা মিরাকল দেয়া হয়েছিল। তারা ধর্মপ্রচারের স্বার্থে অনেক বিদেশি ভাষায় কথা বলতে পারতেন। অথচ এর আগে তারা এ ভাষা জানতেনও না।
এখন একটা ব্যাপার লিখি, খ্রিস্টানদের অনেকে বিশ্বাস করে যীশুর কথা মাফিক তাঁর সাহাবী জন (ইউহানা) {John The Apostle} যীশুর ২য় আগমন পর্যন্ত পৃথিবীতে জীবিত থাকবেন... জন মারা যাবেন যখন যীশু আবার পৃথিবীতে আসবেন। John 21:21-23 থেকে এটা তারা মনে করে।
প্রশ্ন হল, এটা কি ট্রু? এমন কি আসলেই হতে পারে? ঈসা যদি আসলেই এমন দোয়া করে থাকেন, তাহলে কি ইউহানা এখনও জীবিত?
আমি ইউহানা নিয়ে কী কী পাওয়া যায় ইসলামিক লিটারেচার এ... সেটা খুঁজেছি অনেক... ইউহানা নাম এসেছে বেশ কয়েক বার। কিন্তু, তিনি কি জীবিত? এটা মাত্র একটা ঘটনায় আমি পেয়েছি... আমি তুলে দিলাম আপনাদের জন্য--->
শাওয়াহেদুন নবুয়ত, মদিনা পাবলিকেশন, পৃষ্ঠা ২৬-
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা) বলেন, কাদেসিয়া যুদ্ধ চলাকালে খলিফা উমর (রা) হযরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা)কে চিঠি লিখলেন, নজলা ইবনে মুয়াবিয়াকে যেন হুলওয়ানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সাদ তাই করলেন। নজলা যখন তাঁর দলবল সহ হুলওয়ান আক্রমণ করেন, তখন অনেক বন্দি আর গনিমাতের মাল হাতে আসল। জোহরের নামাজ পড়ার জন্য তিনি এক পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান নিলেন। নামাজের জন্য আজানে যখন “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার” বলা হল। তখন পাহাড় থেকে আওয়াজ এলো, “নজলা! তুমি মহতের মহত্ত্ব বর্ণনা করেছ।”
যখন তিনি “আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলেন, তখন আওয়াজ এলো, “নজলা! তুমি ইখলাসের কালিমা বললে।”
যখন “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ” বলা হল, তখন আওয়াজ এলো, “আমাকে মরিয়ম এর পুত্র ঈসা তো ইনারই সুসংবাদ দিয়েছেন।”
যখন “হাইয়া আলাসসালাহ” বলা হল, তখন আওয়াজ এলো, “যে সালাতে যায়, তাঁর জন্য মোবারকবাদ।”
যখন “হাইয়া আলাল ফালাহ” বললেন, তখন আওয়াজ এলো, “যে সাড়া দিবে, সে সফল হবে।”
এভাবে আজান শেষ করার পর, নজলা বললেন, “আল্লাহ তোমার প্রতি রহম করুন, তুমি কে? তুমি তোমার স্বর যখন আমাদের শুনিয়েছই তখন আকৃতিও দেখাও। কেননা, আমরাও আল্লাহ্র বান্দা আর তাঁর রাসুলের উম্মাত। আমরা খলিফা উমারের সৈনিক।”
এরপর পাহাড় থেকে বেরিয়ে এলো একজন। মাথায় সাদা কেশ। পুরনো পশমি বস্ত্র। সে বলল, “আসসালামু আলাইকুম।”
নজলা বললেন, “ওয়ালাইকুম সালাম। তুমি কে? তোমার পরিচয় দাও।”
সে বলল, “আমি রুজায়ব ইবনে বরমসলি। হযরত ঈসার (আ) সাহাবী... তিনি তখন পর্যন্ত আমার বেঁচে থাকার জন্য দোয়া করেছেন যখন তিনি আকাশ থেকে অবতরণ করবেন। শূকর হত্যা করবেন। ক্রুশ ভেঙে খ্রিস্টানদের অপবাদ ও মিথ্যাচার থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন। মুহাম্মাদ (স) এর সাথে আমার সাক্ষাত হয়নি। আমার সালাম হযরত উমারকে পৌঁছে দেবে। তাঁকে বলবে, “...” ” [এখানে একটা আরবি লাইন ছিল, আমি বুঝিনি। তাই লিখলাম না।]
এরপর সে আরও অনেক কথা বলল এরপর চলে গেল।
নজলা এ ঘটনা হযরত সাদ (রা) কে লিখলেন আর তিনি সেটা লিখলেন উমার (রা)কে।
খলিফা উমার (রা) তখন নির্দেশ দিলেন সাদকে (রা), মুহাজির আর আনসারদের একটা দল নিয়ে ঐ পাহাড়ে যাও। সেখানে তাঁকে পেলে আমার সালাম দিবে তাঁকে। কারণ, রাসুল (স) এর দেয়া খবর অনুযায়ী ঈসার (আ) সাহাবীদের মধ্যে কেউ ওখানে আছেন।
হজরত সাদ (রা) ৪০০০ মুহাজির আর আনসার সহ ৪০ দিন ওখানে থাকলেন। ঐ পাহাড়ে প্রত্যেক বার নামাজের জন্য নিজে আজান দিতেন। কিন্তু আর কোন দিন সেদিনের মতো জবাব আসেনি। কেউ আর বের হয়ে আসেনি।
এই হল ঘটনা। নাম মিলে নি। এটা একটা ভাবার বিষয়।
কিন্তু, নাম না মেলার ব্যাপার নতুন না। এক্ষেত্রে ইসলামিক স্কলাররা যেটা করেন সেটা হল আগের ধর্মের রেওাত থেকে ঘটনা মিলিয়ে দেখেন। দেখা যায়, একজন সম্পর্কে একই ঘটনা বর্ণিত আছে। কিন্তু, নাম ভিন্ন। সুতরাং দুজনই সেম।
যেমন, আগের রেওয়াতে মাদায়েনের এক নবীর কথা লিখা আছে। যার কাছে মুসা গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর নাম লিখা জেথ্রো। কিন্তু, এটা সিওর তিনি আর আমাদের শুয়াইব (আ) একই ব্যক্তি।
ঈসা (আ) সম্পর্কে কেবল একজন এর ক্ষেত্রেই বলা হয়, যার জন্য ঈসা এমন দোয়া করেছেন। তিনি ইউহানা। সুতরাং এখানে এটা ইউহানা হবার কথা।
যাক, এবার আসা যাক, সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা প্রসঙ্গে।
মনে আছে আপনাদের, “যীশু”র অর্থাৎ জুডাসের দেহ যখন ক্রুশ থেকে নামান হল... তখন তাঁর দেহে সুগন্ধি মাখিয়ে লিনেনের কাফনের কাপড় দিয়ে পেঁচান হল।
সেই কাফনের কাপড়ের কথা বলব এখন। সেটা পেলে আমরা এখন সেটা থেকে কী কী বের করতে পারব? আধুনিক প্রযুক্তি আছে আমাদের কাছে!! আসুন দেখা যাক... :)
তুরিন।
ইতালির উত্তরের এক শহর।
এ শহরেই রয়েছে Cathedral of Saint John the Baptist যা Turin Cathedral নামেও পরিচিত। এ চার্চে মিলিয়ন ভিজিটর এসেছিলেন একটা রেলিক দেখতে। কী সেই রেলিক?
সেই কাফনের কাপড়। যা এখন শ্রাউড অফ তুরিন নামে পরিচিত। যা পাশের ছবিতে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। ভাল করে দেখুন, একটা হাল্কা দেহের আভাস দেখতে পাচ্ছেন? :)
এ কাফনের কাপড় এর ইতিহাস খুব ভালভাবে রেকর্ড করা আছে মধ্যযুগ থেকে। এর আগের ইতিহাস তেমন ভাল করে রাখা নেই। আসুন সবার আগে সেই কাফনের উপর দৃষ্টি নিক্ষেপ করি।
৯৪৪ সালে এ কাফন ছিল কনস্টান্টিনোপলে। ১২০৪ সালে নাইটস টেমপ্লাররা যখন আক্রমণ করে সেখানে, তখন যুদ্ধের স্পয়েল হিসেবে এ কাফন পায় তারা।
১৩৯০ সালের দিকে এ কাফন ছিল ফ্রান্সে। ১৫৩২ সালে ফ্রান্সের সেই চেম্বারি চ্যাপেলে অগ্নিকান্ড হয়। তখন কাফনের কিছু জায়গা পুড়ে যায়। রুপা গলে ভাঁজ করা কাফনের উপর পড়ে যাওয়ায় একই ছাপ কাফনের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে। ছবি দেখতে পারেন। নানরা কাপড় দিয়ে সেলাই করেন বিভিন্ন জায়গা।
১৫৭৮ সালে তুরিনে আনা হয় এ কাফন। ১৬৯৪ আর ১৮৬৮ সালে আবার রিপেয়ার করা হয় এ কাফন।
১৯৮৩ সালে কাফনের মালিকত্ব পায় ক্যাথলিক চার্চ। অর্থাৎ ভ্যাটিকান।
১৯৯৭ সালের ১১ এপ্রিল। আবার আগুন লাগিয়ে দেয়া হয় তুরিনেও। এবারো রক্ষা পায় কাফন। ২০০২সালে রিপেয়ার করে আবার রিস্টোর করা হয়। ২০০৪ সালে দেহের ছাপের আভাস দেখতে পাওয়া যেতে থাকে ব্যাক সাইডেও। এর আগে কেবল ফ্রন্ট সাইডে দেখা যেত।
২০১০ সালে কাফনটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। তবে ১০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত। এরপর আবার সরানো হয়। নেক্সট কবে দেখানো হবে সিওর না। ২ মিলিয়ন মানুষ ঐ কয়দিনে কাফন দেখতে আসে।
নাস্তিকরা আর সন্দেহবাদীরা গোড়া থেকেই প্রমাণ করতে চেয়েছেন, এটা যীশুর কাফন নয়। এজন্য কার্বন ডেটিং করা হয়। দেখা যায়, রেজাল্ট এসেছে, মধ্যযুগের কাপড়। পরে আবার করা হয়। এবার রেজাল্ট আসল ভিন্ন। ২ সেঞ্চুরি আগে। এরপর জানা যায়, আসলে কাপড়ের নমুনা যেটা নেয়া হয়েছিল সেটা ঐ যে সেলাই করা হয়েছিল, রিপেয়ার করা হয়েছিল সেটার অংশ। তাই রেজাল্ট এসেছে মধ্য যুগের।
১৩৯০ সালের দিকে এ কাফন ছিল ফ্রান্সে। ১৫৩২ সালে ফ্রান্সের সেই চেম্বারি চ্যাপেলে অগ্নিকান্ড হয়। তখন কাফনের কিছু জায়গা পুড়ে যায়। রুপা গলে ভাঁজ করা কাফনের উপর পড়ে যাওয়ায় একই ছাপ কাফনের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে। ছবি দেখতে পারেন। নানরা কাপড় দিয়ে সেলাই করেন বিভিন্ন জায়গা।
১৫৭৮ সালে তুরিনে আনা হয় এ কাফন। ১৬৯৪ আর ১৮৬৮ সালে আবার রিপেয়ার করা হয় এ কাফন।
১৯৮৩ সালে কাফনের মালিকত্ব পায় ক্যাথলিক চার্চ। অর্থাৎ ভ্যাটিকান।
১৯৯৭ সালের ১১ এপ্রিল। আবার আগুন লাগিয়ে দেয়া হয় তুরিনেও। এবারো রক্ষা পায় কাফন। ২০০২সালে রিপেয়ার করে আবার রিস্টোর করা হয়। ২০০৪ সালে দেহের ছাপের আভাস দেখতে পাওয়া যেতে থাকে ব্যাক সাইডেও। এর আগে কেবল ফ্রন্ট সাইডে দেখা যেত।
২০১০ সালে কাফনটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। তবে ১০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত। এরপর আবার সরানো হয়। নেক্সট কবে দেখানো হবে সিওর না। ২ মিলিয়ন মানুষ ঐ কয়দিনে কাফন দেখতে আসে।
নাস্তিকরা আর সন্দেহবাদীরা গোড়া থেকেই প্রমাণ করতে চেয়েছেন, এটা যীশুর কাফন নয়। এজন্য কার্বন ডেটিং করা হয়। দেখা যায়, রেজাল্ট এসেছে, মধ্যযুগের কাপড়। পরে আবার করা হয়। এবার রেজাল্ট আসল ভিন্ন। ২ সেঞ্চুরি আগে। এরপর জানা যায়, আসলে কাপড়ের নমুনা যেটা নেয়া হয়েছিল সেটা ঐ যে সেলাই করা হয়েছিল, রিপেয়ার করা হয়েছিল সেটার অংশ। তাই রেজাল্ট এসেছে মধ্য যুগের।
কাফন এর আকার আয়তাকার। প্রায় 4.4 × 1.1 m (14.3 × 3.7 ft)। সবচেয়ে অবাক করা বৈশিষ্ট্য যেটা এ কাফনের, সেটা হল, এখানে অস্পষ্টভাবে দেখা যায় সেই দেহের অবয়ব।
কাফনের কাপড়ে যে রক্তের ছাপ আর অন্যান্য বৈশিষ্ট্য দেখা যায় অবয়ব থেকে সেটা প্রমাণ করে, এটা গস্পেলগুলোতে বর্ণিত যীশুর/জুডাসের কাফন। আসুন কী কী দেখা যায় জানা যাক... বিজ্ঞানীরা কী কী বের করেছেন--
#এক হাতে স্পষ্ট করে বোঝা গেছে বড় গর্ত ছিল। (পেরেক দিয়ে করা) দ্বিতীয় হাত ফোল্ড করায় বুঝা যাচ্ছে না।
# বুকের পাশ দিয়ে কিছু একটা দিয়ে ছিদ্র করে দেয়া হয়। যেটা থোরাসিক কাভিটি পর্যন্ত পৌঁছায়। (সত্যি, কারণ একজন রোমান সৈন্য যীশু শ্বাস ত্যাগ করার পর বুকের পাশ দিয়ে বর্শা ঢুকিয়ে দেয়)
#কপালের আর খুলির আশপাশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র... (মাথায় তীক্ষ্ণ কাঁটার মুকুট পড়ানো হয়েছিল)
#পায়ে আঘাতের চিহ্ন (রোমান সৈন্যদের আঘাতে)
#মুখ ফোলা ছিল। (প্রচণ্ড মারের কারণে)
# দুই হাত থেকেই রক্ত গড়িয়ে পড়েছে নিচের দিকে। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এটা হয়েছে অভিকর্ষের কারণেই। ক্রুশে থাকা অবস্থায়।
# পায়ে গর্ত ছিল।
অনেক কিছুর পরেও বিরোধীরা বলতেই থাকেন, এটা যীশুর কাফন না। এটা অনেক পরের। কিন্তু ধীরে ধীরে আরও প্রমাণ আসতে থাকে। দেখা যাক কী কী প্রমাণ।
“সিন্ডোনোলজি” (Sindonology) হল তুরিনের কাফন এর উপর গবেষণার বিষয়ের নাম। এত বেশি গবেষণা হয়েছে এটা নিয়ে যে, একটা আলাদা সাবজেক্ট হয়ে গেছে। তুরিনের কাফন হল বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ধর্মীয় রেলিকের একটি।
হারকিউলিস অ্যারোস্পেস কোম্পানি থেকে কাফন থেকে কিছু ধুলো নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। উল্লেখ্য, এক এক স্থানের ধুলো এক এক রকম। তারা প্রাচীন জেরুজালেমের কবর থেকেও ধুলো স্যাম্পল যোগাড় করেন। মিলিয়ে দেখেন দুটোই। রেজাল্ট আসল, হুবহু এক। এটা আসলেই প্রাচীন কাফন। এবং, জেরুজালেমের।
কাফনে রক্ত লেগে আছে। সে রক্ত পরীক্ষা করে দেখা হয়। দুঃখের ব্যাপার, রক্তের ব্লাড গ্রুপ বের করা যায় নি। DNA Test করার কথা ছিল, করতে গিয়ে দেখা গেল, করা যাচ্ছে না। কেন? কারণ ২০০০ বছরে ডি এন এ fragmented হয়ে গেছে!! এটা এক দিক দিয়ে ভালই হয়েছে। কারণ, হয়ত সেক্ষেত্রে তারা প্রমাণ করত যে, যীশুর ডিএনএ থেকে আমরা প্রমাণ করলাম, তাঁরও বাবা আছে! অথচ, ওটাতো জুডাসের ডি এন এ।
১৯৯৭ সালে জেরুজালেমের হিব্রু ভার্সিটির বোটানিস্ট দানিন প্রমাণ করেন যে কাফনের সাথেChrysanthemum coronarium, Cistus creticus এবং Zygophyllum এর ফুলের রেণু লেগে আছে। এটা নির্দেশ করে, এ কাফনের সময়কাল মার্চ এপ্রিল আর স্থান জেরুজালেম। এগুলো ইসরায়েলের বসন্তের ফুল। পরবর্তী গবেষণায় দেখা যায়, ৫৮ টা ফুলের রেণু পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৪৫টাই জেরুজালেম অঞ্চলের। রেণু আসল কথা থেকে বুঝতে পেরেছেন? ঐ যে, কাফন পেঁচানোর আগে যীশুর দেহে সুগন্ধি মেখে দেয়া হয়। তখন ফুলের সুগন্ধি ব্যবহৃত হয়।
নাসার কয়েকজন রিসারচার বলেন, যীশুর চোখের উপর কয়েন রাখা হয়েছিল। এটা বাইবেলে কোথাও উল্লেখ নেই ঠিকই। কিন্তু খুবই যুক্তিসঙ্গত। কারণ, যারা গ্রিক আর রোমান মুভি দেখেছেন তারা জানবেন, রোমান রীতিতে মৃতের চোখে কয়েন রেখে দেয়া হত।
১৯৭৯ সালে রিপোর্ট করা হয়, কাফনের উপর ফেইন্টভাবে দেখা যাচ্ছে গ্রিক আর লাতিনে কিছু লিখা আছে!! কম্পিউটার আনালাইসিসে দেখা গেল, লিখা আছে, INNECEM (a shortened form of Latin "in necem ibis"—"you will go to death"), NNAZAPE(N)NUS (Nazarene/নাসরাত), IHSOY (Jesus/ঈসা) and IC (Iesus Chrestus/ঈসা খ্রিস্ট)।
সম্প্রতি, ২০০৯ সালে এসে দেখা গেল, আরও লিখা আছে। গ্রিক, হিব্রু আর ল্যাটিনে ঈসার ডেথ সার্টিফিকেট! পড়ুন কী লিখা--
“সম্রাট তাইবেরিয়াসের রাজত্বের ১৬ তম বছরে, হিব্রু কর্তৃপক্ষের দ্বারা দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় একজন রোমান জাজ কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদানপূর্বক নাসারার ঈসাকে সন্ধার সময় নামানো হইল (ক্রুশ থেকে), এক বছর তাঁহার পরিবার লাশের (কবরের) মালিকানা পাইবে এই আদেশ দেয়ার মাধ্যমে তাঁহাকে কবরস্থ জন্য প্রেরন করা হইল।”
মোট কথা, কাফনটি যীশুর। এর মানে দাঁড়াচ্ছে কী বুঝতে পেরেছেন? কাফনে যে মুখের ছাপ আছে সেটা যীশুর মুখের ছাপ!! যীশু খ্রিস্টের! কারণ, জুডাস আর যীশুর চেহারা হুবহু সেম করে দেয়া হয়েছিল।
ভাবছেন, এত কিছু কী করে নরমাল একটা কাফন থেকে বের করা গেল? খুবই আশ্চর্যের ব্যাপার এটাই। বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত বের করতে পারেন নি, কী করে এত স্পষ্ট ছাপ পড়ল কাফনে, এমনকি এমনভাবে ছাপ বসে আছে যে সহজেই ত্রিমাত্রিক চিত্র তুলে ধরা যায়।
তবে খালি চোখে এ ছবি দেখা যায় না। ফটোগ্রাফির উদ্ভবের আগে পর্যন্ত কেউ এ ছবি দেখতেও পারেননি।
মে মাসের ২৮ তারিখ, ১৮৯৮ সাল। সন্ধ্যাবেলা।
ইতালিয়ান ফটোগ্রাফার সেকন্দো পিয়া প্রথম ব্যক্তি হলেন, যিনি সেই কাফনের ছবি তুললেন।
তিনি ডার্ক রুমে গেলেন আর ছবির নেগেটিভ বের করলেন। আর ইতিহাসে প্রথম মানুষ হিসেবে যীশুর মুখের নেগেটিভ ছবির উপর চোখ রাখলেন। এবং আঁতকে উঠলেন!
আসুন আমরা কাফনের ছবিগুলো দেখি। আধুনিক প্রযুক্তি আমাদের কী কী উপহার দিল... :D
দেখুন-->
কাফনের কাপড়ে যে রক্তের ছাপ আর অন্যান্য বৈশিষ্ট্য দেখা যায় অবয়ব থেকে সেটা প্রমাণ করে, এটা গস্পেলগুলোতে বর্ণিত যীশুর/জুডাসের কাফন। আসুন কী কী দেখা যায় জানা যাক... বিজ্ঞানীরা কী কী বের করেছেন--
#এক হাতে স্পষ্ট করে বোঝা গেছে বড় গর্ত ছিল। (পেরেক দিয়ে করা) দ্বিতীয় হাত ফোল্ড করায় বুঝা যাচ্ছে না।
# বুকের পাশ দিয়ে কিছু একটা দিয়ে ছিদ্র করে দেয়া হয়। যেটা থোরাসিক কাভিটি পর্যন্ত পৌঁছায়। (সত্যি, কারণ একজন রোমান সৈন্য যীশু শ্বাস ত্যাগ করার পর বুকের পাশ দিয়ে বর্শা ঢুকিয়ে দেয়)
#কপালের আর খুলির আশপাশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র... (মাথায় তীক্ষ্ণ কাঁটার মুকুট পড়ানো হয়েছিল)
#পায়ে আঘাতের চিহ্ন (রোমান সৈন্যদের আঘাতে)
#মুখ ফোলা ছিল। (প্রচণ্ড মারের কারণে)
# দুই হাত থেকেই রক্ত গড়িয়ে পড়েছে নিচের দিকে। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এটা হয়েছে অভিকর্ষের কারণেই। ক্রুশে থাকা অবস্থায়।
# পায়ে গর্ত ছিল।
অনেক কিছুর পরেও বিরোধীরা বলতেই থাকেন, এটা যীশুর কাফন না। এটা অনেক পরের। কিন্তু ধীরে ধীরে আরও প্রমাণ আসতে থাকে। দেখা যাক কী কী প্রমাণ।
“সিন্ডোনোলজি” (Sindonology) হল তুরিনের কাফন এর উপর গবেষণার বিষয়ের নাম। এত বেশি গবেষণা হয়েছে এটা নিয়ে যে, একটা আলাদা সাবজেক্ট হয়ে গেছে। তুরিনের কাফন হল বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ধর্মীয় রেলিকের একটি।
হারকিউলিস অ্যারোস্পেস কোম্পানি থেকে কাফন থেকে কিছু ধুলো নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। উল্লেখ্য, এক এক স্থানের ধুলো এক এক রকম। তারা প্রাচীন জেরুজালেমের কবর থেকেও ধুলো স্যাম্পল যোগাড় করেন। মিলিয়ে দেখেন দুটোই। রেজাল্ট আসল, হুবহু এক। এটা আসলেই প্রাচীন কাফন। এবং, জেরুজালেমের।
কাফনে রক্ত লেগে আছে। সে রক্ত পরীক্ষা করে দেখা হয়। দুঃখের ব্যাপার, রক্তের ব্লাড গ্রুপ বের করা যায় নি। DNA Test করার কথা ছিল, করতে গিয়ে দেখা গেল, করা যাচ্ছে না। কেন? কারণ ২০০০ বছরে ডি এন এ fragmented হয়ে গেছে!! এটা এক দিক দিয়ে ভালই হয়েছে। কারণ, হয়ত সেক্ষেত্রে তারা প্রমাণ করত যে, যীশুর ডিএনএ থেকে আমরা প্রমাণ করলাম, তাঁরও বাবা আছে! অথচ, ওটাতো জুডাসের ডি এন এ।
১৯৯৭ সালে জেরুজালেমের হিব্রু ভার্সিটির বোটানিস্ট দানিন প্রমাণ করেন যে কাফনের সাথেChrysanthemum coronarium, Cistus creticus এবং Zygophyllum এর ফুলের রেণু লেগে আছে। এটা নির্দেশ করে, এ কাফনের সময়কাল মার্চ এপ্রিল আর স্থান জেরুজালেম। এগুলো ইসরায়েলের বসন্তের ফুল। পরবর্তী গবেষণায় দেখা যায়, ৫৮ টা ফুলের রেণু পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৪৫টাই জেরুজালেম অঞ্চলের। রেণু আসল কথা থেকে বুঝতে পেরেছেন? ঐ যে, কাফন পেঁচানোর আগে যীশুর দেহে সুগন্ধি মেখে দেয়া হয়। তখন ফুলের সুগন্ধি ব্যবহৃত হয়।
নাসার কয়েকজন রিসারচার বলেন, যীশুর চোখের উপর কয়েন রাখা হয়েছিল। এটা বাইবেলে কোথাও উল্লেখ নেই ঠিকই। কিন্তু খুবই যুক্তিসঙ্গত। কারণ, যারা গ্রিক আর রোমান মুভি দেখেছেন তারা জানবেন, রোমান রীতিতে মৃতের চোখে কয়েন রেখে দেয়া হত।
১৯৭৯ সালে রিপোর্ট করা হয়, কাফনের উপর ফেইন্টভাবে দেখা যাচ্ছে গ্রিক আর লাতিনে কিছু লিখা আছে!! কম্পিউটার আনালাইসিসে দেখা গেল, লিখা আছে, INNECEM (a shortened form of Latin "in necem ibis"—"you will go to death"), NNAZAPE(N)NUS (Nazarene/নাসরাত), IHSOY (Jesus/ঈসা) and IC (Iesus Chrestus/ঈসা খ্রিস্ট)।
সম্প্রতি, ২০০৯ সালে এসে দেখা গেল, আরও লিখা আছে। গ্রিক, হিব্রু আর ল্যাটিনে ঈসার ডেথ সার্টিফিকেট! পড়ুন কী লিখা--
“সম্রাট তাইবেরিয়াসের রাজত্বের ১৬ তম বছরে, হিব্রু কর্তৃপক্ষের দ্বারা দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় একজন রোমান জাজ কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদানপূর্বক নাসারার ঈসাকে সন্ধার সময় নামানো হইল (ক্রুশ থেকে), এক বছর তাঁহার পরিবার লাশের (কবরের) মালিকানা পাইবে এই আদেশ দেয়ার মাধ্যমে তাঁহাকে কবরস্থ জন্য প্রেরন করা হইল।”
মোট কথা, কাফনটি যীশুর। এর মানে দাঁড়াচ্ছে কী বুঝতে পেরেছেন? কাফনে যে মুখের ছাপ আছে সেটা যীশুর মুখের ছাপ!! যীশু খ্রিস্টের! কারণ, জুডাস আর যীশুর চেহারা হুবহু সেম করে দেয়া হয়েছিল।
ভাবছেন, এত কিছু কী করে নরমাল একটা কাফন থেকে বের করা গেল? খুবই আশ্চর্যের ব্যাপার এটাই। বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত বের করতে পারেন নি, কী করে এত স্পষ্ট ছাপ পড়ল কাফনে, এমনকি এমনভাবে ছাপ বসে আছে যে সহজেই ত্রিমাত্রিক চিত্র তুলে ধরা যায়।
তবে খালি চোখে এ ছবি দেখা যায় না। ফটোগ্রাফির উদ্ভবের আগে পর্যন্ত কেউ এ ছবি দেখতেও পারেননি।
মে মাসের ২৮ তারিখ, ১৮৯৮ সাল। সন্ধ্যাবেলা।
ইতালিয়ান ফটোগ্রাফার সেকন্দো পিয়া প্রথম ব্যক্তি হলেন, যিনি সেই কাফনের ছবি তুললেন।
তিনি ডার্ক রুমে গেলেন আর ছবির নেগেটিভ বের করলেন। আর ইতিহাসে প্রথম মানুষ হিসেবে যীশুর মুখের নেগেটিভ ছবির উপর চোখ রাখলেন। এবং আঁতকে উঠলেন!
আসুন আমরা কাফনের ছবিগুলো দেখি। আধুনিক প্রযুক্তি আমাদের কী কী উপহার দিল... :D
দেখুন-->
এবার কম্পিউটারের মাধ্যমে জেনারেট করা এই ইমেজেরই 2D ভিউ। চোখ খোলা রেখে...
এই ছবিটাকেই সাদা অংশগুলো ভরাট করে একটু এডিট করে নিচের এ ছবিটা আসে, যদিও আমার কাছে আগের ছবিটাই অসাধারণ লাগে...
ঈসার ছবি আর কোন উপায়ে পাওয়া সম্ভব হয়নি। এই একটা ছবিই পাওয়া সম্ভব হয়েছে। মানুষকে দেখাতে চাইলে শেয়ার করুন; যদি আপনার আশঙ্কা না থাকে যে, কেউ "হে খোদা! নবীর ছবি! তৌবা তৌবা" বলে চিৎকার করে উঠবে।
:D
Who cares? এখানে তো মানুষ সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে enhance করা কেবল। তাই না? :)
এস এস সি পরীক্ষার পর আমি একটা গেইম খেলেছিলাম... গেইম কেমন ছিল সেটা ব্যাপার না... কিন্তু, গেইমের কাহিনীটা ছিল অসাধারণ... আমি চমকে উঠেছিলাম... ঐ কাহিনীই মুলত আমাকে এ লাইনে এনেছিল... এখন বলব না। পরের পর্বে...
এমনিতেই বহুত বড় হয়ে গেছে এই নোটটা... :D ২৪০০+ ওয়ার্ড। দুঃখিত। প্রথমে ভেবেছিলাম এই এক নোটেই শেষ করব। কিন্তু, দেখলাম হচ্ছে না। বেশি বড় হয়ে গেছে। তাই দু ভাগ করে ফেললাম। নয়ত ১০ম পার্টেই শেষ করতাম সিরিজ। এখন ১১ পার্টে ইনশাল্লাহ শেষ হবে। :)
ঈসা (আ)কে মসীহ হতে হলে কিছু ভবিষ্যৎবাণী পূরণ করতে হবে, তিনি কি করেছেন? ইসলাম কী বলে?
অনেকের প্রশ্ন আছে, মেরীর তথাকথিত স্বামী সেইন্ট জোসেফ কে ছিলেন? ইসলামে কি তাঁকে নিয়ে কিছু বলা আছে?
কে সরাল জুডাসের বডি?
কেন?
ইনশাল্লাহ, শেষ পর্বে... :)
যীশুর কাফন আরেকটা অবাক করা জিনিস প্রমাণ করে। সেটা এখন বলব না। সেটা আগামি পর্বে অর্থাৎ শেষ পর্বে বলব।
আচ্ছা... এমন কি হতে পারে না যে, বারনাবাস পুরো ঘটনার কেবল একটা পাশ দেখেছেন? আরেক পাশ ছিল তাঁর অজানা? হতে পারে না?
বারনাবাস হয়ত মুদ্রার এক পিঠ দেখলেন, আরেক পিঠ না দেখলে পুরো ঘটনা incomplete রয়ে যায়।
Believe it or not, কিছু হাদিস আর তাফসির পর্যন্ত সেই সম্ভাবনা সমর্থন করে...
আশা করি শেষ পর্বে সেই উল্টো পিঠটাও তুলে ধরব। সেটা হবে একটা শক। আমি প্রথমবার যখন পড়েছিলাম, তখন অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এটাও সম্ভব?
একটু দেরি হতে পারে যদিও... বাট, ওয়েইট ফর দা লাস্ট পার্ট। ;)
অ্যান্ড, ফাইন্ড দা পসিবিলিটি...
জুডাস কি বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল?
এই পর্বটা কেমন হল? আমি চেষ্টা করেছি, যথেষ্ট তথ্যবহুল করার।
শেষ পর্ব (আগের পর্বগুলো যেন মনে থাকে, তাহলে শেষ পর্বের বিশ্লেষণ বুঝতে সহজ হবে।)
:D
Who cares? এখানে তো মানুষ সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে enhance করা কেবল। তাই না? :)
এস এস সি পরীক্ষার পর আমি একটা গেইম খেলেছিলাম... গেইম কেমন ছিল সেটা ব্যাপার না... কিন্তু, গেইমের কাহিনীটা ছিল অসাধারণ... আমি চমকে উঠেছিলাম... ঐ কাহিনীই মুলত আমাকে এ লাইনে এনেছিল... এখন বলব না। পরের পর্বে...
এমনিতেই বহুত বড় হয়ে গেছে এই নোটটা... :D ২৪০০+ ওয়ার্ড। দুঃখিত। প্রথমে ভেবেছিলাম এই এক নোটেই শেষ করব। কিন্তু, দেখলাম হচ্ছে না। বেশি বড় হয়ে গেছে। তাই দু ভাগ করে ফেললাম। নয়ত ১০ম পার্টেই শেষ করতাম সিরিজ। এখন ১১ পার্টে ইনশাল্লাহ শেষ হবে। :)
ঈসা (আ)কে মসীহ হতে হলে কিছু ভবিষ্যৎবাণী পূরণ করতে হবে, তিনি কি করেছেন? ইসলাম কী বলে?
অনেকের প্রশ্ন আছে, মেরীর তথাকথিত স্বামী সেইন্ট জোসেফ কে ছিলেন? ইসলামে কি তাঁকে নিয়ে কিছু বলা আছে?
কে সরাল জুডাসের বডি?
কেন?
ইনশাল্লাহ, শেষ পর্বে... :)
যীশুর কাফন আরেকটা অবাক করা জিনিস প্রমাণ করে। সেটা এখন বলব না। সেটা আগামি পর্বে অর্থাৎ শেষ পর্বে বলব।
আচ্ছা... এমন কি হতে পারে না যে, বারনাবাস পুরো ঘটনার কেবল একটা পাশ দেখেছেন? আরেক পাশ ছিল তাঁর অজানা? হতে পারে না?
বারনাবাস হয়ত মুদ্রার এক পিঠ দেখলেন, আরেক পিঠ না দেখলে পুরো ঘটনা incomplete রয়ে যায়।
Believe it or not, কিছু হাদিস আর তাফসির পর্যন্ত সেই সম্ভাবনা সমর্থন করে...
আশা করি শেষ পর্বে সেই উল্টো পিঠটাও তুলে ধরব। সেটা হবে একটা শক। আমি প্রথমবার যখন পড়েছিলাম, তখন অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এটাও সম্ভব?
একটু দেরি হতে পারে যদিও... বাট, ওয়েইট ফর দা লাস্ট পার্ট। ;)
অ্যান্ড, ফাইন্ড দা পসিবিলিটি...
জুডাস কি বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল?
এই পর্বটা কেমন হল? আমি চেষ্টা করেছি, যথেষ্ট তথ্যবহুল করার।
শেষ পর্ব (আগের পর্বগুলো যেন মনে থাকে, তাহলে শেষ পর্বের বিশ্লেষণ বুঝতে সহজ হবে।)
লেখককে ফলো করুন
|
© 2013 by Ask Islam Bangla.