প্রশ্ন ৮৮ --> রাজতন্ত্র কি ইসলামে জায়েজ ?
উত্তর :
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
রাজতন্ত্রে একটি দেশের প্রধান রাজা তার মৃত্যুর পর সন্তান হবে পরবর্তী রাজা । এভাবে চলবে । সে যোগ্য হোক বা না হোক তা দেখার প্রয়োজন নাই । সে রাজা হয়ে যাবে । সে যেভাবে খুশি রাজ্য চালাতে পারে । রাজ্যের সব কিছুরই মালিক সে হয় । প্রজা বা জনগণ তার উপর কথা বলতে পারে না । তার কোন জবাবদিহিতাও নেই কারো কাছে । সে আল্লাহর আইন দ্বারা রাষ্ট্র চালাতে বাধ্য নয়। এবং তারা থাকে সকল আইনের উর্ধ্বে । সে থাকে তার রাজ্যের সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক ।
কুরআনে বলা হয়েছে-
• ...তুমি বল সমস্ত কিছুর কর্তৃত্ব [সর্বময় ক্ষমতা] কার হাতে? {সুরা মু’মিনুন-৮৮}
• ...তুমি বল-হে সর্বভৌম ক্ষমতার মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর, এবং যার নিকট থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নাও। যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর। যাকে ইচ্ছে পদদলিত কর। সব কিছুই তোমার হাতে। নিশ্চয় তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান। {সুরা আলে ইমরান-২৬}
• .. কর্তৃত্বতো আল্লাহরই। {সূরা আনআম-৫৭}
• .. আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয়না তারা হল কাফের। {সূরা মায়িদা-৪৪}
• .. আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয়না তারা হল জালেম। {সূরা মায়িদা-৪৫}
• ..আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয়না তারা হল ফাসেক। {সূরা মায়িদা-৪৭}
তাই রাজতন্ত্র ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক । ইসলাম শুধু খিলাফত সমর্থন করে । খলিফা ক্ষমতা পাবেন নির্বাচনের মাধ্যমে । খলিফা আল্লাহর আইনে রাষ্ট্র চালাতে বাধ্য, জনগণের সামনে জবাব দিতে বাধ্য, নিজের খরচাদির হিসাব দিতে বাধ্য । সকল আইনও খলিফার উপর প্রযোজ্য । যে কেউ খলিফা হতে পারবে যোগ্যতা বলে । খিলাফতে খলিফার সন্তান যোগ্য হলে পরবর্তী খলিফা নির্বাচিত হতে পারে ।
এবং মহানবী (সা) ও সাহাবায়ে কেরামের (রা) মধ্যেও এই রাজতন্ত্রের কোন নিদর্শন নাই ।
সৌদি রাজপরিবারের সমর্থক ব্যক্তিবর্গ নানা ধরণের গালগল্পের মাধ্যমে রাজতন্ত্রকে বৈধতা দানের চেষ্টা করে । যা নিঃসন্দেহে একটি হঠকারিতা । দাউদ ও সুলাইমান (আ) এর রাজত্ব রাজতন্ত্রকে বৈধতা দেয় না ।মূলত্ব তখন বনী ইসরাইল বিজাতীয় অনুকরণে নিজেদের জন্য রাজা পার্থনা করলে আল্লাহ রাজা প্রদান করেন এরপর । এবং দাউদ (আ) রাষ্ট্রপ্রধান নিজ যোগ্যতা দিয়ে হয়েছেন আল্লাহর নিয়ামতে । এবং সুলাইমান (আ) এর শরীয়তে এমন অনেক কিছুই ছিল যা আমাদের শরীয়তে নেই ।
অনেকে রাসূলুল্লাহর একটি ভবিষ্যত বাণী হতে রাজতন্ত্র আবিষ্কার করেন ।
# হযরত হুযায়ফা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, হযরত রসূল করীম (সাঃ) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে নবুওয়ত কায়েম থাকবে যতদিন আল্লাহ্ চাইবেন, অতঃপর তিনি তা তুলে নিবেন এবং নবুওয়তের পদ্ধতিতে খিলাফত (খিলাফতে রাশেদা) কায়েম হবে। অতঃপর আল্লাহ্ যখন চাইবেন তখন তা-ও তুলে নিবেন। অতঃপর তাঁর তকদীর অনুযায়ী অদূরদর্শী বাদশাহাত চলবে। যখন এই রাজত্বকালের অবসান হবে তখন তাঁর অন্য তকদীর মোতাবেক অত্যাচার অবিচার ও নিগ্রহপূর্ণ যালিম রাষ্ট্র কায়েম হবে। এমনকি, আল্লাহ্তাআলার দয়ার উদ্রেক হবে এবং যুলুম নির্যাতন কালের অবসান হবে। অতঃপর পুনরায় নবুয়াতের পদ্ধতিতে খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হবে”। একথা বলার পর তিনি (সাঃ) নীরব হয়ে যান। (মিশকাত, মুসনাদ আহমদ ও মুসলিম)
এখানে মোটেও রাজতন্ত্রকে সাপোর্ট দেওয়া হয় নাই বরং উম্মাহর ভবিষ্যতে রাজতন্ত্র যে খিলাফত ধ্বংস করবে তা বলা হয়েছে । এবং অনেক চড়াই উৎড়াই পার হয়ে আবার খিলাফত জয়ী হবে সে সুংবাদও দেওয়া হয়েছে । বর্তমানে মুসলিমরা আছে চার নম্বর ধাপ অত্যাচার অবিচার ও নিগ্রহপূর্ণ যালিম রাষ্ট্রের অধীনে । ইনশাল্লাহ পরবর্তী ধাপটিই পুনঃখিলাফাত ।
আরেকটি উদাহরণ দেয় তারা মুআবিয়া (রা) কর্তৃক ইয়াজিদকে খলিফা নির্বাচনের ও সাহাবীদের তা মেনে নেওয়াকে । মনে রাখতে হবে মুয়াবিয়া (রা) কোন রাজা ছিলেন না, ছিলেন খলিফা। আর তিনি কোন রাজা নির্বাচন করে যাননি, গিয়েছেন খলিফা (তা ইয়াজিদ হোক না কেন) । এখন এই খিলাফত ব্যবস্থার বিরোধীতা কেন সাহাবীরা করেন নাই সেটা নিয়া রাজতন্ত্রের পক্ষে সাফাই গাওয়া হাস্যকর।
তাই রাজতন্ত্র কোন ভাবেই ইসলাম জায়েজ নয় ।
পড়ুন গণতন্ত্রের ব্যপারে
STA-17.57
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
রাজতন্ত্রে একটি দেশের প্রধান রাজা তার মৃত্যুর পর সন্তান হবে পরবর্তী রাজা । এভাবে চলবে । সে যোগ্য হোক বা না হোক তা দেখার প্রয়োজন নাই । সে রাজা হয়ে যাবে । সে যেভাবে খুশি রাজ্য চালাতে পারে । রাজ্যের সব কিছুরই মালিক সে হয় । প্রজা বা জনগণ তার উপর কথা বলতে পারে না । তার কোন জবাবদিহিতাও নেই কারো কাছে । সে আল্লাহর আইন দ্বারা রাষ্ট্র চালাতে বাধ্য নয়। এবং তারা থাকে সকল আইনের উর্ধ্বে । সে থাকে তার রাজ্যের সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক ।
কুরআনে বলা হয়েছে-
• ...তুমি বল সমস্ত কিছুর কর্তৃত্ব [সর্বময় ক্ষমতা] কার হাতে? {সুরা মু’মিনুন-৮৮}
• ...তুমি বল-হে সর্বভৌম ক্ষমতার মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর, এবং যার নিকট থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নাও। যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর। যাকে ইচ্ছে পদদলিত কর। সব কিছুই তোমার হাতে। নিশ্চয় তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান। {সুরা আলে ইমরান-২৬}
• .. কর্তৃত্বতো আল্লাহরই। {সূরা আনআম-৫৭}
• .. আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয়না তারা হল কাফের। {সূরা মায়িদা-৪৪}
• .. আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয়না তারা হল জালেম। {সূরা মায়িদা-৪৫}
• ..আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয়না তারা হল ফাসেক। {সূরা মায়িদা-৪৭}
তাই রাজতন্ত্র ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক । ইসলাম শুধু খিলাফত সমর্থন করে । খলিফা ক্ষমতা পাবেন নির্বাচনের মাধ্যমে । খলিফা আল্লাহর আইনে রাষ্ট্র চালাতে বাধ্য, জনগণের সামনে জবাব দিতে বাধ্য, নিজের খরচাদির হিসাব দিতে বাধ্য । সকল আইনও খলিফার উপর প্রযোজ্য । যে কেউ খলিফা হতে পারবে যোগ্যতা বলে । খিলাফতে খলিফার সন্তান যোগ্য হলে পরবর্তী খলিফা নির্বাচিত হতে পারে ।
এবং মহানবী (সা) ও সাহাবায়ে কেরামের (রা) মধ্যেও এই রাজতন্ত্রের কোন নিদর্শন নাই ।
সৌদি রাজপরিবারের সমর্থক ব্যক্তিবর্গ নানা ধরণের গালগল্পের মাধ্যমে রাজতন্ত্রকে বৈধতা দানের চেষ্টা করে । যা নিঃসন্দেহে একটি হঠকারিতা । দাউদ ও সুলাইমান (আ) এর রাজত্ব রাজতন্ত্রকে বৈধতা দেয় না ।মূলত্ব তখন বনী ইসরাইল বিজাতীয় অনুকরণে নিজেদের জন্য রাজা পার্থনা করলে আল্লাহ রাজা প্রদান করেন এরপর । এবং দাউদ (আ) রাষ্ট্রপ্রধান নিজ যোগ্যতা দিয়ে হয়েছেন আল্লাহর নিয়ামতে । এবং সুলাইমান (আ) এর শরীয়তে এমন অনেক কিছুই ছিল যা আমাদের শরীয়তে নেই ।
অনেকে রাসূলুল্লাহর একটি ভবিষ্যত বাণী হতে রাজতন্ত্র আবিষ্কার করেন ।
# হযরত হুযায়ফা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, হযরত রসূল করীম (সাঃ) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে নবুওয়ত কায়েম থাকবে যতদিন আল্লাহ্ চাইবেন, অতঃপর তিনি তা তুলে নিবেন এবং নবুওয়তের পদ্ধতিতে খিলাফত (খিলাফতে রাশেদা) কায়েম হবে। অতঃপর আল্লাহ্ যখন চাইবেন তখন তা-ও তুলে নিবেন। অতঃপর তাঁর তকদীর অনুযায়ী অদূরদর্শী বাদশাহাত চলবে। যখন এই রাজত্বকালের অবসান হবে তখন তাঁর অন্য তকদীর মোতাবেক অত্যাচার অবিচার ও নিগ্রহপূর্ণ যালিম রাষ্ট্র কায়েম হবে। এমনকি, আল্লাহ্তাআলার দয়ার উদ্রেক হবে এবং যুলুম নির্যাতন কালের অবসান হবে। অতঃপর পুনরায় নবুয়াতের পদ্ধতিতে খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হবে”। একথা বলার পর তিনি (সাঃ) নীরব হয়ে যান। (মিশকাত, মুসনাদ আহমদ ও মুসলিম)
এখানে মোটেও রাজতন্ত্রকে সাপোর্ট দেওয়া হয় নাই বরং উম্মাহর ভবিষ্যতে রাজতন্ত্র যে খিলাফত ধ্বংস করবে তা বলা হয়েছে । এবং অনেক চড়াই উৎড়াই পার হয়ে আবার খিলাফত জয়ী হবে সে সুংবাদও দেওয়া হয়েছে । বর্তমানে মুসলিমরা আছে চার নম্বর ধাপ অত্যাচার অবিচার ও নিগ্রহপূর্ণ যালিম রাষ্ট্রের অধীনে । ইনশাল্লাহ পরবর্তী ধাপটিই পুনঃখিলাফাত ।
আরেকটি উদাহরণ দেয় তারা মুআবিয়া (রা) কর্তৃক ইয়াজিদকে খলিফা নির্বাচনের ও সাহাবীদের তা মেনে নেওয়াকে । মনে রাখতে হবে মুয়াবিয়া (রা) কোন রাজা ছিলেন না, ছিলেন খলিফা। আর তিনি কোন রাজা নির্বাচন করে যাননি, গিয়েছেন খলিফা (তা ইয়াজিদ হোক না কেন) । এখন এই খিলাফত ব্যবস্থার বিরোধীতা কেন সাহাবীরা করেন নাই সেটা নিয়া রাজতন্ত্রের পক্ষে সাফাই গাওয়া হাস্যকর।
তাই রাজতন্ত্র কোন ভাবেই ইসলাম জায়েজ নয় ।
পড়ুন গণতন্ত্রের ব্যপারে
STA-17.57
© 2013 by Ask Islam Bangla.