প্রশ্ন ১৪৫ --> ভণ্ড পীর, ফকির কবিরাজদের চেনার উপায় গুলো জানতে চাই
উত্তর :
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
প্রথমত,
আপনি কারো কাছে সাহায্যের জন্য গিয়েছেন এমতাবস্থায় যদি তারা আপনার সাথে নিম্নোল্লিখিত কোন কাজ করে তবে সাহায্য নেয়া থেকে বিরত থাকুন এবং অন্যদেরও তাদের ব্যাপারে সতর্ক করুনঃ
(১) আপনার নাম জিজ্ঞেস করে এবং আপনার মায়ের নাম জিজ্ঞেস করে কিংবা জন্মতারিখ।
(২) আপনার ছবি কিংবা কাপড়ের কোন কিছু চায়।
(৩) আপনার চুল, জুয়েলারি কিংবা আপনার সাথে সম্পর্কিত কিছু চায়।
(৪) আপনাকে কোন প্রাণী আনতে কিংবা উৎসর্গ করতে বলে।
(৫) কোন ফিসফিসানি কিংবা এমন দুর্বোধ্য ভাষার ব্যবহার যা আপনি বুঝতে সমর্থ নন।
(৬) আপনাকে কোন তাবিজ-তুমার দেয়।
(৭) আপনার বাচ্চাকে তার সাথে সাক্ষাতের সময় নিয়ে যেতে বলা।
(৮) কুরআন এবং সুন্নাহভিত্তিক দুয়া ব্যতীত অন্যকিছু পাঠ করা।
(৯) আপনাকে স্পর্শ করতে চাওয়া (যদি আপনি মহিলা হোন) ।
(১০) তারা আপনাকে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে সুস্থ করার দাবি করে।
(১১) আপনার কাছে প্রচুর টাকা-পয়সা দাবি করে।
(১২) আপনাকে পানিতে পাড়া দেয়া কিংবা জীনকে বোতলবন্দী করার কথা বলে।
(১৩) আপনাকে চড়ি কিংবা পাথর দিয়ে তা আংটিতে লাগিয়ে পড়তে কিংবা বহন করতে বলে।
(১৪) যদি সে আপনার অতীত বলে কিংবা আপনার ভবিষ্যৎ জানার দাবি করে।
(১৫) অন্ধকারে ধুপ বাতি জ্বালিয়ে বসা।
(১৬) সে আরোগ্য দানে সক্ষম, এমন দাবি করা।
(১৭) তার সাফল্য নিয়ে দম্ভ করা।
এইগুলো একজন ভ্রষ্ট, জীন নিয়ে খেল কিংবা যাদুকরের লক্ষণ। এদের কাছ থেকে দুরে থাকুন, সতর্ক-সজাগ থাকুন। নিজের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগান।
দ্বিতীয়ত,
অনেক সময় দেখা যায় যে, এসকল পীর, কবিরাজ তাদের কাজে মাঝে মধ্যে সফলতাও পায়। এর কারণ হচ্ছে, শয়তান জ্বিনদের সাথে তাদের যোগাযোগ। জ্বিনদের মধ্যেও মুসলিম এবং কাফির জ্বিন রয়েছে। একজন মুসলিম জ্বিন, সে কখনোই একজন প্রকৃত আলিমের সাথে তাঁর (আলিমের) ইচ্ছানুযায়ী দেখা করবে না কিংবা এমন কোন বাধ্যবাধকতা বা যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তাও নেই। তাই কোন প্রকৃত আলিম বলেন না যে, আমার কাছে জ্বিন বশ করে রেখেছি। এছাড়াও আমাদের মনে রাখা উচিত যে, জ্বিনদের উপর কর্তৃত্ব শুধু সুলাইমান আলাইহিস সালামকে দেয়া হয়েছিলো তাই রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার শয়তান জ্বিনের টুঁটি চেপে ধরেও সুলাইমান আলাইহিস সালামের মর্যাদার কথা মনে করে ছেড়ে দেন। তাই এমন দাবী নিঃসন্দেহে কুফরীর আলামত বহন করে।
যারা বলে এবং দেখায় যে জ্বিন তাদের বশে রয়েছে এবং যে কোন সময়ে তাকে হাজির করতে পারে সে হচ্ছে কালো যাদু'র সাথে সংশ্লিষ্ট, এবং উক্ত জ্বিন হচ্ছে শয়তান জ্বিন। সে উক্ত শয়তান জ্বিনের মাধ্যমেই কাজ সম্পাদন করে। পাঠকের সুবিধার্থে এখানে প্রথম প্রক্রিয়ার কিয়দাংশ ব্যাখ্যা করা হলোঃ
সহিহ হাদিসে উল্লেখ আছে যে, প্রতিটি মানুষের সাথে 'কারিন' নামে একটি জ্বিন রয়েছে যে আমাদের সবসময় কুমন্ত্রনা দান করে। যখন কোন কালো যাদুকারী কারোও নাম এবং তাঁর মাতার নাম জেনে নেয় তখন সে উক্ত 'কারিন' জ্বিনের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে।
এখানে, মাতার নাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা জানি যে, সন্তান তাঁর পিতার নামের মাধ্যমে পরিচিত হয়। কিন্তু এখানে মাতার নাম সন্তানের নামের সাথে যুক্ত করে কালো যাদুকারী বাংশীয় ধারাকে অসম্পূর্ণ রূপ দান করে এবং এখানে দেখানো হয় যে, সে একজন ব্যভিচারিনীর সন্তান, তাঁর পিতা র্যানডোম কোন ব্যক্তি, এভাবে বংশীয় ধারার চুত্যি ঘটিয়ে শয়তানের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা হয়।
এরপর সে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে উক্ত ব্যক্তির নামের সংখ্যাগত ভাল্যু নির্ধারণ করে। এরপর সে তার কাছে থাকা কালো যাদু ছকের বিভিন্ন ধরনের তারকার চিহ্নের সাহায্যে সেই সংখ্যাগত মানের জন্য তার কি করা দরকার (পুতুল মাটিতে পোঁতা, পুড়িয়ে ফেলা, পানিতে ডোবানো বা গাছে লটকানো ইত্যাদি) সেটা নির্ধারন করে, এভাবে পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলো সে সম্পাদন করতে থাকে। এবং এসব কিছুই শয়তানের উপাসনার সাথে সংশ্লিষ্ট।
সুতরাং, এরকম অসংলগ্ন কার্যকলাপ যদি কারোও মধ্যে দেখতে পান তবে তার দেখে দূরে থাকুন। নিজে সতর্ক হোন এবং অপরকেও সতর্ক করুন।
এবং আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন।
LTA-106.179
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
প্রথমত,
আপনি কারো কাছে সাহায্যের জন্য গিয়েছেন এমতাবস্থায় যদি তারা আপনার সাথে নিম্নোল্লিখিত কোন কাজ করে তবে সাহায্য নেয়া থেকে বিরত থাকুন এবং অন্যদেরও তাদের ব্যাপারে সতর্ক করুনঃ
(১) আপনার নাম জিজ্ঞেস করে এবং আপনার মায়ের নাম জিজ্ঞেস করে কিংবা জন্মতারিখ।
(২) আপনার ছবি কিংবা কাপড়ের কোন কিছু চায়।
(৩) আপনার চুল, জুয়েলারি কিংবা আপনার সাথে সম্পর্কিত কিছু চায়।
(৪) আপনাকে কোন প্রাণী আনতে কিংবা উৎসর্গ করতে বলে।
(৫) কোন ফিসফিসানি কিংবা এমন দুর্বোধ্য ভাষার ব্যবহার যা আপনি বুঝতে সমর্থ নন।
(৬) আপনাকে কোন তাবিজ-তুমার দেয়।
(৭) আপনার বাচ্চাকে তার সাথে সাক্ষাতের সময় নিয়ে যেতে বলা।
(৮) কুরআন এবং সুন্নাহভিত্তিক দুয়া ব্যতীত অন্যকিছু পাঠ করা।
(৯) আপনাকে স্পর্শ করতে চাওয়া (যদি আপনি মহিলা হোন) ।
(১০) তারা আপনাকে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে সুস্থ করার দাবি করে।
(১১) আপনার কাছে প্রচুর টাকা-পয়সা দাবি করে।
(১২) আপনাকে পানিতে পাড়া দেয়া কিংবা জীনকে বোতলবন্দী করার কথা বলে।
(১৩) আপনাকে চড়ি কিংবা পাথর দিয়ে তা আংটিতে লাগিয়ে পড়তে কিংবা বহন করতে বলে।
(১৪) যদি সে আপনার অতীত বলে কিংবা আপনার ভবিষ্যৎ জানার দাবি করে।
(১৫) অন্ধকারে ধুপ বাতি জ্বালিয়ে বসা।
(১৬) সে আরোগ্য দানে সক্ষম, এমন দাবি করা।
(১৭) তার সাফল্য নিয়ে দম্ভ করা।
এইগুলো একজন ভ্রষ্ট, জীন নিয়ে খেল কিংবা যাদুকরের লক্ষণ। এদের কাছ থেকে দুরে থাকুন, সতর্ক-সজাগ থাকুন। নিজের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগান।
দ্বিতীয়ত,
অনেক সময় দেখা যায় যে, এসকল পীর, কবিরাজ তাদের কাজে মাঝে মধ্যে সফলতাও পায়। এর কারণ হচ্ছে, শয়তান জ্বিনদের সাথে তাদের যোগাযোগ। জ্বিনদের মধ্যেও মুসলিম এবং কাফির জ্বিন রয়েছে। একজন মুসলিম জ্বিন, সে কখনোই একজন প্রকৃত আলিমের সাথে তাঁর (আলিমের) ইচ্ছানুযায়ী দেখা করবে না কিংবা এমন কোন বাধ্যবাধকতা বা যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তাও নেই। তাই কোন প্রকৃত আলিম বলেন না যে, আমার কাছে জ্বিন বশ করে রেখেছি। এছাড়াও আমাদের মনে রাখা উচিত যে, জ্বিনদের উপর কর্তৃত্ব শুধু সুলাইমান আলাইহিস সালামকে দেয়া হয়েছিলো তাই রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার শয়তান জ্বিনের টুঁটি চেপে ধরেও সুলাইমান আলাইহিস সালামের মর্যাদার কথা মনে করে ছেড়ে দেন। তাই এমন দাবী নিঃসন্দেহে কুফরীর আলামত বহন করে।
যারা বলে এবং দেখায় যে জ্বিন তাদের বশে রয়েছে এবং যে কোন সময়ে তাকে হাজির করতে পারে সে হচ্ছে কালো যাদু'র সাথে সংশ্লিষ্ট, এবং উক্ত জ্বিন হচ্ছে শয়তান জ্বিন। সে উক্ত শয়তান জ্বিনের মাধ্যমেই কাজ সম্পাদন করে। পাঠকের সুবিধার্থে এখানে প্রথম প্রক্রিয়ার কিয়দাংশ ব্যাখ্যা করা হলোঃ
সহিহ হাদিসে উল্লেখ আছে যে, প্রতিটি মানুষের সাথে 'কারিন' নামে একটি জ্বিন রয়েছে যে আমাদের সবসময় কুমন্ত্রনা দান করে। যখন কোন কালো যাদুকারী কারোও নাম এবং তাঁর মাতার নাম জেনে নেয় তখন সে উক্ত 'কারিন' জ্বিনের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে।
এখানে, মাতার নাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা জানি যে, সন্তান তাঁর পিতার নামের মাধ্যমে পরিচিত হয়। কিন্তু এখানে মাতার নাম সন্তানের নামের সাথে যুক্ত করে কালো যাদুকারী বাংশীয় ধারাকে অসম্পূর্ণ রূপ দান করে এবং এখানে দেখানো হয় যে, সে একজন ব্যভিচারিনীর সন্তান, তাঁর পিতা র্যানডোম কোন ব্যক্তি, এভাবে বংশীয় ধারার চুত্যি ঘটিয়ে শয়তানের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা হয়।
এরপর সে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে উক্ত ব্যক্তির নামের সংখ্যাগত ভাল্যু নির্ধারণ করে। এরপর সে তার কাছে থাকা কালো যাদু ছকের বিভিন্ন ধরনের তারকার চিহ্নের সাহায্যে সেই সংখ্যাগত মানের জন্য তার কি করা দরকার (পুতুল মাটিতে পোঁতা, পুড়িয়ে ফেলা, পানিতে ডোবানো বা গাছে লটকানো ইত্যাদি) সেটা নির্ধারন করে, এভাবে পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলো সে সম্পাদন করতে থাকে। এবং এসব কিছুই শয়তানের উপাসনার সাথে সংশ্লিষ্ট।
সুতরাং, এরকম অসংলগ্ন কার্যকলাপ যদি কারোও মধ্যে দেখতে পান তবে তার দেখে দূরে থাকুন। নিজে সতর্ক হোন এবং অপরকেও সতর্ক করুন।
এবং আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন।
LTA-106.179
© 2015 by Ask Islam Bangla.