প্রশ্ন ১০০ --> জিহাদ কে শুরু করতে পারবে ?
উত্তর :
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
জিহাদের অনুমতি:
নিজের ইচ্ছামত কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অনুমতি ইসলামে নেই। ইসলাম যুদ্ধ করার জন্য বেশ কিছু নীতিমালা নির্ধারণ করে দিয়েছে। তন্মধ্যে জিহাদের অনুমতি নেয়ার বিধানও রয়েছে। কেউ যদি যুদ্ধে যেতে চায় তাহলে তাকে বেশ কয়েকটি স্থান থেকে অনুমতি নিতে হয়। সেগুলো হল-
১. পিতামাতার কাছ থেকে অনুমতি: মুসলিম পিতামাতার অনুমতি ব্যতিত জিহাদে অংশগ্রহণ করা বৈধ নয়। বুখারী ও মুসলিম শরীফের হাদীসে এসেছে- রাসুল (সাঃ) এর কাছে এক ব্যক্তি এসে জিহাদে শরীক হওয়ার জন্য অনুমতি চাইলেন। রাসুল (সাঃ) বললেন: তোমার পিতামাতা কি বেঁচে আছেন? তিনি বললেন: জি, তারা বেঁচে আছেন। রাসুল (সাঃ) বললেন: তাহলে তাদের মাঝেই জিহাদ কর। (তাদের খেদমতে আত্মনিয়োগ কর। তোমার জিহাদে যাওয়া লাগবে না) । (বুখারী, মুসলিম, তিরমীজি, নাসায়ী, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ, ইবনে হিব্বান)
২. ঋণদাতার কাছ থেকে অনুমতি: সমস্ত ইসলামিক স্কলার এ কথায় একমত পোষণ করেছেন যে, যদি কোন ব্যক্তি অন্য কারো কাছে ঋণী থাকে এবং তাৎক্ষনিকভাবে ঋণ পরিশোধ করার কথা থাকে তাহলে, জিহাদে যেতে হলে ঋণদাতার অনুমতি লাগবে। তবে, যদি কথা থাকে যে, পরে পরিশোধ করবে তাহলে, এ অনুমতির কোন দরকার নেই।
৩. সবচেয়ে বড় ও আসল ব্যাপার হল রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষ থেকে অনুমতিগ্রহণ করা। অনেকেই এটাতে ভুল করে বসেন।
# রাসুল (সাঃ) বলেছেন: নিশ্চয় রাষ্ট্রপ্রধান ঢালের মত। তার পিছনে থেকে যুদ্ধ করতে হয় এবং তার মাধ্যমেই নিরাপত্তা পাওয়া যায়। যদি তিনি আল্লাহ ভীতির কোন বিষয়ে নির্দেশ দেন এবং ন্যায় বিচার করেন তাহলে, তিনি সাওয়াবের অধিকারী হবেন। আর যদি এর বিপরীত কোন নির্দেশ দেন তাহলে, তিনি গুণাহের পাত্র বিবেচিত হবেন। (বুখারী, মুসলিম, নাসায়ী, মুসনাদে আহমদ)
রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি থাকলে আর কেউ এটা নিয়ে কোন কথা বলতে পারবে না। এটা তখন বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যশীল বলেই গণ্য হবে।
আল্লামা ইবনে কুদামাহ (রহঃ) বলেন: জিহাদের বিষয়টা ইমাম তথা রাষ্ট্রপ্রধানের ব্যাপার। রাষ্ট্রের অধিবাসীদের জন্য তার আনুগত্য করা অবশ্য কর্তব্য। তিনি আরও বলেন: আমীরের (দায়িত্বশীল; আমরা এখানে বাহিনীপ্রধান বুঝতে পারি) অনুমতি ছাড়া সেনাদলের তাবু থেকে বের হওয়াও বৈধ নয়।(আল-মুগনী) কেননা, শত্রুর গতিবিধি তিনিই ভালো করে জানেন। অনুমতি ছাড়া বের হলে উক্ত ব্যক্তি শত্রুদলের শিকারে পরিণত হতে পারে।(আল-মুগনী)
ইসলামিক স্কলারদের সতর্কবাণী:
ইসলামিক স্কলারগণ জিহাদে যাওয়ার সময় বেশ কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-
ইসলামিক স্কলারদের মতামত থেকেও এ কথাটা উচ্চারিত হয়েছে। তারা বলেছেন: জিহাদের চিন্তা-ভাবনা ও সিদ্ধান্তের ব্যাপার রাষ্ট্রপ্রধানের। রাষ্ট্রের প্রজাদের দায়িত্ব হচ্ছে (ভালো ও কল্যাণকর কাজে) তাদের আনুগত্য করা। (আল-মুগনী, আশ-শারহুল কাবীর, কাশশাফুল কেনা’আ)
উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, মুসলিম শাসক; হোক না সে মহাপাপী তবুও তার অনুমতি ছাড়া জিহাদে বের হওয়া যাবে না। রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি ব্যতিত কোন ব্যক্তির জন্য বৈধ নয় জিহাদের ডাক দেয়া কিংবা তাতে শরীক হওয়া। কেননা, তাতে ফিতনা ফাসাদ ও বিপদের আশংকা রয়েছে।
সূত্র: ইসমাইল জাবীহুল্লাহর বই হতে
পড়ুন
জিহাদ কি?
জিহাদ কি ফরজ ? জিহাদের উদ্দেশ্য কি ? কাদের বিরুদ্ধে করতে হয় ?
STA-15.51
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
জিহাদের অনুমতি:
নিজের ইচ্ছামত কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অনুমতি ইসলামে নেই। ইসলাম যুদ্ধ করার জন্য বেশ কিছু নীতিমালা নির্ধারণ করে দিয়েছে। তন্মধ্যে জিহাদের অনুমতি নেয়ার বিধানও রয়েছে। কেউ যদি যুদ্ধে যেতে চায় তাহলে তাকে বেশ কয়েকটি স্থান থেকে অনুমতি নিতে হয়। সেগুলো হল-
১. পিতামাতার কাছ থেকে অনুমতি: মুসলিম পিতামাতার অনুমতি ব্যতিত জিহাদে অংশগ্রহণ করা বৈধ নয়। বুখারী ও মুসলিম শরীফের হাদীসে এসেছে- রাসুল (সাঃ) এর কাছে এক ব্যক্তি এসে জিহাদে শরীক হওয়ার জন্য অনুমতি চাইলেন। রাসুল (সাঃ) বললেন: তোমার পিতামাতা কি বেঁচে আছেন? তিনি বললেন: জি, তারা বেঁচে আছেন। রাসুল (সাঃ) বললেন: তাহলে তাদের মাঝেই জিহাদ কর। (তাদের খেদমতে আত্মনিয়োগ কর। তোমার জিহাদে যাওয়া লাগবে না) । (বুখারী, মুসলিম, তিরমীজি, নাসায়ী, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ, ইবনে হিব্বান)
২. ঋণদাতার কাছ থেকে অনুমতি: সমস্ত ইসলামিক স্কলার এ কথায় একমত পোষণ করেছেন যে, যদি কোন ব্যক্তি অন্য কারো কাছে ঋণী থাকে এবং তাৎক্ষনিকভাবে ঋণ পরিশোধ করার কথা থাকে তাহলে, জিহাদে যেতে হলে ঋণদাতার অনুমতি লাগবে। তবে, যদি কথা থাকে যে, পরে পরিশোধ করবে তাহলে, এ অনুমতির কোন দরকার নেই।
৩. সবচেয়ে বড় ও আসল ব্যাপার হল রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষ থেকে অনুমতিগ্রহণ করা। অনেকেই এটাতে ভুল করে বসেন।
# রাসুল (সাঃ) বলেছেন: নিশ্চয় রাষ্ট্রপ্রধান ঢালের মত। তার পিছনে থেকে যুদ্ধ করতে হয় এবং তার মাধ্যমেই নিরাপত্তা পাওয়া যায়। যদি তিনি আল্লাহ ভীতির কোন বিষয়ে নির্দেশ দেন এবং ন্যায় বিচার করেন তাহলে, তিনি সাওয়াবের অধিকারী হবেন। আর যদি এর বিপরীত কোন নির্দেশ দেন তাহলে, তিনি গুণাহের পাত্র বিবেচিত হবেন। (বুখারী, মুসলিম, নাসায়ী, মুসনাদে আহমদ)
রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি থাকলে আর কেউ এটা নিয়ে কোন কথা বলতে পারবে না। এটা তখন বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যশীল বলেই গণ্য হবে।
আল্লামা ইবনে কুদামাহ (রহঃ) বলেন: জিহাদের বিষয়টা ইমাম তথা রাষ্ট্রপ্রধানের ব্যাপার। রাষ্ট্রের অধিবাসীদের জন্য তার আনুগত্য করা অবশ্য কর্তব্য। তিনি আরও বলেন: আমীরের (দায়িত্বশীল; আমরা এখানে বাহিনীপ্রধান বুঝতে পারি) অনুমতি ছাড়া সেনাদলের তাবু থেকে বের হওয়াও বৈধ নয়।(আল-মুগনী) কেননা, শত্রুর গতিবিধি তিনিই ভালো করে জানেন। অনুমতি ছাড়া বের হলে উক্ত ব্যক্তি শত্রুদলের শিকারে পরিণত হতে পারে।(আল-মুগনী)
ইসলামিক স্কলারদের সতর্কবাণী:
ইসলামিক স্কলারগণ জিহাদে যাওয়ার সময় বেশ কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-
- আজকাল জিহাদ ফরজ হওয়া কিংবা না হওয়ার ব্যাপারে হুকুম দেয়ার অধিকার রয়েছে শুধুমাত্র ইসলাম সম্বন্ধে জ্ঞানী ইসলামিক স্কলারদের। কেননা, এটা আল্লাহ তায়ালার হুকুম নিয়ে কথা বলার সমান। আল্লাহ তায়ালা বলেন:
• যদি তোমরা নিজেরা না জান তাহলে, দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা কর। (সুরা নাহল: ৪৩) - তোমার মতের বিরুদ্ধে কোন জ্ঞানীর মত গেলে তার নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়াইও না। কেননা, এটা আল্লাহ তায়ালার বান্দাদের কাজ নয়। আলেমগণ যদি মানুষের ইচ্ছা খুশির ভিত্তিতে কথা বলত তাহলে, ইসলামী শরীয়ত বলে কিছুই অবশিষ্ট্য থাকত না। এজন্য যে কোন বিষয়ের মানদন্ড অবশ্যই কুরআন ও হাদিস দিয়েই নির্নয় করতে হবে।
- জেনে রাখ! জিহাদের বিষয়টা রাষ্ট্রপ্রধানের ব্যাপার। কোন সাধারণ মানুষের সামান্যতম অধিকার নেই কাউকে জিহাদে যাওয়ার অর্ডার দেবে কিংবা জিহাদের ডাক দেবে। এটার দায়িত্ব একমাত্র রাষ্ট্রপ্রধানের।
# রাসুল (সাঃ) বলেন: নিশ্চয় রাষ্ট্রপ্রধান ঢালের মত। তার পিছনে থেকে যুদ্ধ করতে হয় এবং তার মাধ্যমেই নিরাপত্তা পাওয়া যায়। যদি তিনি আল্লাহ ভীতির কোন বিষয়ে নির্দেশ দেন এবং ন্যায় বিচার করেন তাহলে, তিনি এর দ্বারা সাওয়াবের অধিকারী হবেন। আর যদি এর বিপরীত কোন নির্দেশ দেন তাহলে, তিনি গুণাহের পাত্র বিবেচিত হবেন।(বুখারী, মুসলিম, নাসায়ী, মুসনাদে আহমদ)
ইসলামিক স্কলারদের মতামত থেকেও এ কথাটা উচ্চারিত হয়েছে। তারা বলেছেন: জিহাদের চিন্তা-ভাবনা ও সিদ্ধান্তের ব্যাপার রাষ্ট্রপ্রধানের। রাষ্ট্রের প্রজাদের দায়িত্ব হচ্ছে (ভালো ও কল্যাণকর কাজে) তাদের আনুগত্য করা। (আল-মুগনী, আশ-শারহুল কাবীর, কাশশাফুল কেনা’আ)
উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, মুসলিম শাসক; হোক না সে মহাপাপী তবুও তার অনুমতি ছাড়া জিহাদে বের হওয়া যাবে না। রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি ব্যতিত কোন ব্যক্তির জন্য বৈধ নয় জিহাদের ডাক দেয়া কিংবা তাতে শরীক হওয়া। কেননা, তাতে ফিতনা ফাসাদ ও বিপদের আশংকা রয়েছে।
সূত্র: ইসমাইল জাবীহুল্লাহর বই হতে
পড়ুন
জিহাদ কি?
জিহাদ কি ফরজ ? জিহাদের উদ্দেশ্য কি ? কাদের বিরুদ্ধে করতে হয় ?
STA-15.51
© 2013 by Ask Islam Bangla.