অলৌকিক কুর'আন ১ম পর্ব- আল্লাহর কথা বলার সৌন্দর্যঃ
প্রথম উদাহরনঃ ঈসা(আ) কে যেভাবে আল্লাহ্ বর্ননা করেছেন কুর'আন এ-
নবী মূসা(আ) বনী ইসরাইল জাতির মেসেঞ্জার ছিলেন। নবী ঈসাও বনী ইসরাইল জাতির মেসেঞ্জার ছিলেন। ৬১ নম্বর সূরা হচ্ছে আস-সফ। আমরা এই সূরার ৫ আর ৬ নম্বর আয়াত দুটি দেখব। ৫ নম্বর আয়াতে মূসা(আ) তার গোত্রকে ( আরবিতে "কওম") উদ্দেশ্য করে একটা কথা বলেছেন । ৬ নম্বর আয়াতে ঈসা(আ) তার গোত্রকে উদ্দেশ্য করে একটা কথা বলেছেন। দুজনের গোত্র একই, ইসরাইল জাতি, যদিও নবী মূসা আর নবী ঈসা এর সময়ের মধ্যে অনেক অনেক পার্থক্য।
আয়াত ৫( অংশবিশেষ) -
Wa-ith qala moosa liqawmihi ya qawmi
যখন মূসা তাঁর জাতিকে বললঃ হে আমার জাতি
When Moosa said to His Nation - " O My Nation !"
আয়াত ৬ ( অংশবিশেষ) -
Wa-ith qala AAeesa ibnu maryama ya banee isra-eela
যখন মারিয়াম এর পুত্র ঈসা বলল- হে ইসরাইল এর সন্তানেরা!
When Eesa , Son of Mary, said, "O Children of Israel ! "
দুইটি বাক্য একদম পর পর। কিন্তু কেন ঈসা(আ) মূসা (আ) এর মতন করে বললেন না- "হে আমার সম্প্রদায় "? কেন তিনি তাদেরকে Children Of Israel (Banee Israel) বলে সম্বোধন করলেন?
মানুষের আইডেন্টিটি আসে বাবার কাছ থেকে। যেমন- মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল্লাহ, আলী ইবন আবু তালিব। আমাদেরকেও বলা হয়- বনী আদম, মানে আদমের সন্তান। আমাদেরকে কখনো বলা হয় না- বনী হাওয়া। এটা পৃথিবীর শুরু থেকেই হয়ে আসছে।
মূসা(আ) যখন তাঁর জাতিকে "হে আমার জাতি" বলে ডাকলেন, তিনি এটাই বুঝালেন যে, তাঁর পিতাও ইসরাইল জাতির একজন। কিন্তু পুরো কুর'আনে কোথাও ঈসা (আ) কখনই তাঁর জাতিকে " হে আমার জাতি" বলে ডাকেন নি। যতবারই তিনি তাদেরকে সম্বোধন করেছেন, তিনি বলেছেন "O Children Of Israel". কিন্তু কেন???
কারন, ঈসা(আ) কখনই বলতে পারেন না "হে আমার জাতি" , কারন তাঁর পিতা ইসরাইল জাতির কেউ ছিলেন না। তাঁর কোন পিতা ছিল না। তিনি কোন পিতা ছাড়াই অলৌকিক উপায়ে মারিয়াম (আ) এর গর্ভে জন্ম নেন। তাই তিনি যতবারই ইসরাইল জাতিকে কিছু বলেছেন , তিনি বলেছেন "হে ইসরাইল এর সন্তানেরা" . এছাড়াও আল্লাহ্ বলেছেন- ঈসা ইবন মারিয়াম। প্রচলিত "পিতা থেকে আইডেন্টিটি আসে" এই নিয়ম ভেঙ্গে আল্লাহ্ তাঁকে তার মায়ের পদবি দিয়ে নামকরন করেছেন। মাত্র একটি দুইটি শব্দ হেরফের করে মহান আল্লাহ্ নবী ঈসা(আ) এর আসল পরিচয় আমাদের দিয়ে দিয়েছেন এখানে।
উদাহরন ২- দুইটি হৃৎপিণ্ড।
সূরা আহযাব। আয়াত নম্বর ৪. প্রথম অংশবিশেষ-
Ma jaAAala Allahu lirajulin min qalbayni fee jawfihi
আল্লাহ কোন পুরুষ মানুষের দেহের মধ্যে দুটি হৃৎপিণ্ড স্থাপন করেননি ।
Allah did not place two hearts inside the body of any man.
আসুন দেখা যাক। "Rajul" শব্দটির মানে হচ্ছে পুরুষ মানুষ। আল্লাহ এখানে রাজুল না বলে "নাস( ManKind) " বলতে পারতেন। কিন্তু তিনি বলেননি। তিনি বিশেষভাবে পুরুষকে বুঝিয়েছেন এখানে। যদিও এই আয়াতের বাকি অংশটুকুতে নারীদের কথা বলা আছে। কেন আল্লাহ একটি রহস্য করলেন??
হৃৎপিণ্ড বুকের ভিতর থাকে। যখনি কুর'আনে হৃৎপিণ্ড-এর প্রসঙ্গ এসেছে, আল্লাহ্ সবসময় বলেছেন - "Kulubullati FisSudur- বুকের ভিতর যে হৃৎপিণ্ড". কিন্তু এই আয়াতে, আল্লাহ্ বুকের ভিতর না বলে "দেহের ভিতর" বলেছেন। তিনি বলেছেন- " Jawf- পূরো দেহ" | কেন তিনি আরো একটি রহস্য করলেন? স্বাভাবিকভাবে বললেন না কেন আল্লাহ?
আল্লাহ্ ঠিকই বলেছেন। কোন পুরুষ মানুষের শরীরে দুইটি হৃৎপিণ্ড থাকে না। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে একজন নারীর শরীরে দুইটি হৃৎপিণ্ড থাকে। কারন, নারীরা গর্ভধারন করতে পারে। আর প্রেগন্যান্ট হলে তার শরীরে আরেকটি হৃৎপিণ্ড জন্ম হয়। কিন্তু, সেই দুইটি হৃৎপিণ্ড একটি থাকে তার বুকের ভেতর, আরেকটি থাকে তার জরায়ুর ভেতর। কাজেই আল্লাহ্ "কালব(বুক)" ব্যবহার না করে " "জাউফ( শরীর)" কথাটি ব্যবহার করেছেন।
এভাবে সাহিত্য সৃষ্টি করতে কি আপনি কাউকে দেখেছেন কখনো???
অনুবাদ পড়ে কখনো কি জীবনেও আপনি এই অসাধারন জিনিসগুলো খেয়াল করতে পেরেছেন? একমাত্র আল্লাহর লেখা ভাষা বাদে আর কোন ভাষাতেই এগুলো ফুটে ঊঠবে না । পবিত্র কুরানে ছন্দের সাথে সাথে টপিক চেইঞ্জ হয়ে যাওয়ার যে অসাধারণত্ব, সেটাও কখনো কোনোদিনও অনুবাদে ফুটে ওঠা সম্ভব না। তাই নিরপেক্ষভাবে যদি কেউ সত্যি সত্যি কুর'আন বুঝতে চায়, তাকে আরবি শিখতেই হবে। এবং সে শিখবেই। কারন আল্লাহ্ "সূরা কামার" এ কমপক্ষে ৪ বার বলেছেন- "আমরা কুর'আন কে মনে রাখার জন্য সহজ করে তৈরী করেছি , কেউ কি আছে যে এটা থেকে শিক্ষা গ্রহন করবে? "
Bayyinah TV তে প্রতি মাসে ১১ডলার দিয়ে সাবস্ক্রাইব করে যে কেউ আরবি শিখতে পারে অল্প অল্প করে। এরাবিক উইথ হুসনার প্রতিটা ক্লাস ১০-১৫মিনিটের। প্রতিদিন একটা করেও যদি কেউ ক্লাস করেন তাহলে ৫ মাসেই সে অনেক অনেক আরবী জেনে যাবে ইনশাল্লাহ। আপনি আল্লাহকে কিছু টাকা ধার দিন, আপনি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারবেন না এই টাকা কত কোটি গুনে বৃদ্ধি পেয়ে আপনার আখিরাতের একাউন্ট এ চলে যাচ্ছে।
২য় পর্ব
সব পর্ব পড়তে চাইলে
নবী মূসা(আ) বনী ইসরাইল জাতির মেসেঞ্জার ছিলেন। নবী ঈসাও বনী ইসরাইল জাতির মেসেঞ্জার ছিলেন। ৬১ নম্বর সূরা হচ্ছে আস-সফ। আমরা এই সূরার ৫ আর ৬ নম্বর আয়াত দুটি দেখব। ৫ নম্বর আয়াতে মূসা(আ) তার গোত্রকে ( আরবিতে "কওম") উদ্দেশ্য করে একটা কথা বলেছেন । ৬ নম্বর আয়াতে ঈসা(আ) তার গোত্রকে উদ্দেশ্য করে একটা কথা বলেছেন। দুজনের গোত্র একই, ইসরাইল জাতি, যদিও নবী মূসা আর নবী ঈসা এর সময়ের মধ্যে অনেক অনেক পার্থক্য।
আয়াত ৫( অংশবিশেষ) -
Wa-ith qala moosa liqawmihi ya qawmi
যখন মূসা তাঁর জাতিকে বললঃ হে আমার জাতি
When Moosa said to His Nation - " O My Nation !"
আয়াত ৬ ( অংশবিশেষ) -
Wa-ith qala AAeesa ibnu maryama ya banee isra-eela
যখন মারিয়াম এর পুত্র ঈসা বলল- হে ইসরাইল এর সন্তানেরা!
When Eesa , Son of Mary, said, "O Children of Israel ! "
দুইটি বাক্য একদম পর পর। কিন্তু কেন ঈসা(আ) মূসা (আ) এর মতন করে বললেন না- "হে আমার সম্প্রদায় "? কেন তিনি তাদেরকে Children Of Israel (Banee Israel) বলে সম্বোধন করলেন?
মানুষের আইডেন্টিটি আসে বাবার কাছ থেকে। যেমন- মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল্লাহ, আলী ইবন আবু তালিব। আমাদেরকেও বলা হয়- বনী আদম, মানে আদমের সন্তান। আমাদেরকে কখনো বলা হয় না- বনী হাওয়া। এটা পৃথিবীর শুরু থেকেই হয়ে আসছে।
মূসা(আ) যখন তাঁর জাতিকে "হে আমার জাতি" বলে ডাকলেন, তিনি এটাই বুঝালেন যে, তাঁর পিতাও ইসরাইল জাতির একজন। কিন্তু পুরো কুর'আনে কোথাও ঈসা (আ) কখনই তাঁর জাতিকে " হে আমার জাতি" বলে ডাকেন নি। যতবারই তিনি তাদেরকে সম্বোধন করেছেন, তিনি বলেছেন "O Children Of Israel". কিন্তু কেন???
কারন, ঈসা(আ) কখনই বলতে পারেন না "হে আমার জাতি" , কারন তাঁর পিতা ইসরাইল জাতির কেউ ছিলেন না। তাঁর কোন পিতা ছিল না। তিনি কোন পিতা ছাড়াই অলৌকিক উপায়ে মারিয়াম (আ) এর গর্ভে জন্ম নেন। তাই তিনি যতবারই ইসরাইল জাতিকে কিছু বলেছেন , তিনি বলেছেন "হে ইসরাইল এর সন্তানেরা" . এছাড়াও আল্লাহ্ বলেছেন- ঈসা ইবন মারিয়াম। প্রচলিত "পিতা থেকে আইডেন্টিটি আসে" এই নিয়ম ভেঙ্গে আল্লাহ্ তাঁকে তার মায়ের পদবি দিয়ে নামকরন করেছেন। মাত্র একটি দুইটি শব্দ হেরফের করে মহান আল্লাহ্ নবী ঈসা(আ) এর আসল পরিচয় আমাদের দিয়ে দিয়েছেন এখানে।
উদাহরন ২- দুইটি হৃৎপিণ্ড।
সূরা আহযাব। আয়াত নম্বর ৪. প্রথম অংশবিশেষ-
Ma jaAAala Allahu lirajulin min qalbayni fee jawfihi
আল্লাহ কোন পুরুষ মানুষের দেহের মধ্যে দুটি হৃৎপিণ্ড স্থাপন করেননি ।
Allah did not place two hearts inside the body of any man.
আসুন দেখা যাক। "Rajul" শব্দটির মানে হচ্ছে পুরুষ মানুষ। আল্লাহ এখানে রাজুল না বলে "নাস( ManKind) " বলতে পারতেন। কিন্তু তিনি বলেননি। তিনি বিশেষভাবে পুরুষকে বুঝিয়েছেন এখানে। যদিও এই আয়াতের বাকি অংশটুকুতে নারীদের কথা বলা আছে। কেন আল্লাহ একটি রহস্য করলেন??
হৃৎপিণ্ড বুকের ভিতর থাকে। যখনি কুর'আনে হৃৎপিণ্ড-এর প্রসঙ্গ এসেছে, আল্লাহ্ সবসময় বলেছেন - "Kulubullati FisSudur- বুকের ভিতর যে হৃৎপিণ্ড". কিন্তু এই আয়াতে, আল্লাহ্ বুকের ভিতর না বলে "দেহের ভিতর" বলেছেন। তিনি বলেছেন- " Jawf- পূরো দেহ" | কেন তিনি আরো একটি রহস্য করলেন? স্বাভাবিকভাবে বললেন না কেন আল্লাহ?
আল্লাহ্ ঠিকই বলেছেন। কোন পুরুষ মানুষের শরীরে দুইটি হৃৎপিণ্ড থাকে না। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে একজন নারীর শরীরে দুইটি হৃৎপিণ্ড থাকে। কারন, নারীরা গর্ভধারন করতে পারে। আর প্রেগন্যান্ট হলে তার শরীরে আরেকটি হৃৎপিণ্ড জন্ম হয়। কিন্তু, সেই দুইটি হৃৎপিণ্ড একটি থাকে তার বুকের ভেতর, আরেকটি থাকে তার জরায়ুর ভেতর। কাজেই আল্লাহ্ "কালব(বুক)" ব্যবহার না করে " "জাউফ( শরীর)" কথাটি ব্যবহার করেছেন।
এভাবে সাহিত্য সৃষ্টি করতে কি আপনি কাউকে দেখেছেন কখনো???
অনুবাদ পড়ে কখনো কি জীবনেও আপনি এই অসাধারন জিনিসগুলো খেয়াল করতে পেরেছেন? একমাত্র আল্লাহর লেখা ভাষা বাদে আর কোন ভাষাতেই এগুলো ফুটে ঊঠবে না । পবিত্র কুরানে ছন্দের সাথে সাথে টপিক চেইঞ্জ হয়ে যাওয়ার যে অসাধারণত্ব, সেটাও কখনো কোনোদিনও অনুবাদে ফুটে ওঠা সম্ভব না। তাই নিরপেক্ষভাবে যদি কেউ সত্যি সত্যি কুর'আন বুঝতে চায়, তাকে আরবি শিখতেই হবে। এবং সে শিখবেই। কারন আল্লাহ্ "সূরা কামার" এ কমপক্ষে ৪ বার বলেছেন- "আমরা কুর'আন কে মনে রাখার জন্য সহজ করে তৈরী করেছি , কেউ কি আছে যে এটা থেকে শিক্ষা গ্রহন করবে? "
Bayyinah TV তে প্রতি মাসে ১১ডলার দিয়ে সাবস্ক্রাইব করে যে কেউ আরবি শিখতে পারে অল্প অল্প করে। এরাবিক উইথ হুসনার প্রতিটা ক্লাস ১০-১৫মিনিটের। প্রতিদিন একটা করেও যদি কেউ ক্লাস করেন তাহলে ৫ মাসেই সে অনেক অনেক আরবী জেনে যাবে ইনশাল্লাহ। আপনি আল্লাহকে কিছু টাকা ধার দিন, আপনি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারবেন না এই টাকা কত কোটি গুনে বৃদ্ধি পেয়ে আপনার আখিরাতের একাউন্ট এ চলে যাচ্ছে।
২য় পর্ব
সব পর্ব পড়তে চাইলে
লেখককে ফলো করুন
|
© 2014 by Ask Islam Bangla.