কাহিনী ৭ --> স্বপ্ন যখন সত্য হল
রাসুলুল্লাহ (সা) এর এক খালা ছিলেন। নাম, উম্মে হারাম বিনতে মিলহান (রা)।
রাসুল (সা) প্রায়ই তার বাসায় থাকতেন, দুপুরে ঘুমুতেনও মাঝে মধ্যে। একদিন খালার বাসায় খাওয়ার পর তিনি শুলেন, খালা উম্মে হারাম তার চুলে উঁকুন বেছে দিচ্ছিলেন। ঘুমিয়ে পড়লেন নবী (সা)।
এটা নিশ্চয়ই অনেকের জানা আছে, আল্লাহ তাঁকে স্বপ্নে অনেক সময় ভবিষ্যতে কী হবে তা দেখাতেন, খণ্ড খণ্ড।
হঠাৎ তার ঘুম ভেঙে গেল আর উঠে বসলেন তিনি। মুচকি হাসছেন। উম্মে হারাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! হাসির কারণ কি?’
‘আমার উম্মাতের কিছু লোককে আল্লাহর পথে জিহাদরত অবস্থায় আমার সামনে পেশ করা হয়। তারা এ সমুদ্রের মঝে এমনভাবে আরোহী যেমন বাদশাহ তখতের উপর অথবা বলেছেন, বাদশাহর মত তখতে উপবিষ্ট।’
“ইয়া রাসূলুল্লাহ! আল্লাহর কাছে দু’আ করুন যেন আমাকে তিনি তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন।“ নবিজী দুয়া করে আবার শুয়ে পড়লেন।
কিছুক্ষণ পর আবার ঘুম ভেঙে হাসিমুখে রইলেন, এবারো খালা জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনার হাসার কারণ কি?’
"আমি দেখলাম তারা যুদ্ধ করছে আল্লাহ্র রাস্তায়।"
ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি আল্লাহর কাছে দু’আ করুন, যেন আমাকে তিনি তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রাসুল বললেন, “তুমি তো প্রথম দলের মধ্যেই আছ।“
বহুকাল পরে, রাসুলের মৃত্যুর পর, ইসলামি রাজ্য যখন সিরিয়া ছুঁই ছুঁই করছে, তখন মুয়াবিয়া (রা) গিয়ে উমার (রা)কে বুঝানোর চেষ্টা করলেন, সামুদ্রিক যুদ্ধে সাইপ্রাসকে পরাজিত করতে হবে, কারণ বাইজান্টিন সাম্রাজ্য বারবার সাইপ্রাসকে ব্যবহার করে ইসলামি রাজ্যকে আক্রমণ করছে।
কিন্তু, উমার রাজি হলেন না, কারণ নৌসমরে এ কোনই অভিজ্ঞতা নাই মুসলিমদের।
উমার মারা যাবার পর যখন উসমান (রা) খলিফা হলেন, তখন মুওাবিয়া তাঁকে রাজি করিয়ে ফেললেন।
মুওাবিয়া (রা) এই অভিযানের জন্য সেনাপতি নির্বাচন করলেন উবাদা বিন সামিত (রা)কে। উবাদা (রা) এর নেতৃত্বে প্রথমবারের মত মুসলিম নৌবাহিনী পাঠানো হল। সাইপ্রাসে।
কাকতালীয় ব্যাপার ছিল, উবাদার স্ত্রী ছিলেন সেই উম্মে হারাম (রা)। তিনি সেচ্ছায় স্বামীকে সঙ্গ দেবার জন্য তার সাথে রওনা হলেন। ঠিক যেমনটা রাসুল (সা) স্বপ্নে দেখেছিলেন।
যেদিন জাহাজগুলো তীর ছেড়ে চলে যাচ্ছিল আর সবাই তাদের বিদায় দিতে এসেছিল, সেই দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে জাহাজের কিনারে দাঁড়ানো উম্মে হারামের গাল বেয়ে অশ্রু ঝড়ে পড়ছিল। তিনি বিড়বিড় করছিলেন, "আপনি সত্য বলেছিলেন, রাসুলুল্লাহ (সা)"
দ্বীপের কাছে পৌঁছানোর পর কোস্টগার্ডরা অ্যাটাক করে তাদের। কোস্ট গার্ডদের পরাজিত করার পর তীরে নামলেন তাঁরা।
নামার পর তিনি ঘোড়ায় চড়ে এগুচ্ছিলেন। হঠাৎ ঘোড়াটা ভয় পেয়ে লাফ দেয়, আর উম্মে হারাম পড়ে যান ঘোড়া থেকে। আহত হয়ে মারা যান তিনি। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর লাশ যখন নিতে এলেন অন্যরা, দেখলেন, তিনি মুচকি হাসতে হাসতে মারা গেছেন। তিনি স্বপ্নের বাকিটাও সত্য হতে দেখে গেছেন...
যেখানে তিনি মারা গিয়েছিলেন, ঠিক সে জায়গায় আজ উম্মে হারাম মসজিদ, তাঁর স্মরণে।
সূত্রঃ সহীহ বুখারি ৪/৫২/৪৭
AIM-1.31
রাসুল (সা) প্রায়ই তার বাসায় থাকতেন, দুপুরে ঘুমুতেনও মাঝে মধ্যে। একদিন খালার বাসায় খাওয়ার পর তিনি শুলেন, খালা উম্মে হারাম তার চুলে উঁকুন বেছে দিচ্ছিলেন। ঘুমিয়ে পড়লেন নবী (সা)।
এটা নিশ্চয়ই অনেকের জানা আছে, আল্লাহ তাঁকে স্বপ্নে অনেক সময় ভবিষ্যতে কী হবে তা দেখাতেন, খণ্ড খণ্ড।
হঠাৎ তার ঘুম ভেঙে গেল আর উঠে বসলেন তিনি। মুচকি হাসছেন। উম্মে হারাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! হাসির কারণ কি?’
‘আমার উম্মাতের কিছু লোককে আল্লাহর পথে জিহাদরত অবস্থায় আমার সামনে পেশ করা হয়। তারা এ সমুদ্রের মঝে এমনভাবে আরোহী যেমন বাদশাহ তখতের উপর অথবা বলেছেন, বাদশাহর মত তখতে উপবিষ্ট।’
“ইয়া রাসূলুল্লাহ! আল্লাহর কাছে দু’আ করুন যেন আমাকে তিনি তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন।“ নবিজী দুয়া করে আবার শুয়ে পড়লেন।
কিছুক্ষণ পর আবার ঘুম ভেঙে হাসিমুখে রইলেন, এবারো খালা জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনার হাসার কারণ কি?’
"আমি দেখলাম তারা যুদ্ধ করছে আল্লাহ্র রাস্তায়।"
ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি আল্লাহর কাছে দু’আ করুন, যেন আমাকে তিনি তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রাসুল বললেন, “তুমি তো প্রথম দলের মধ্যেই আছ।“
বহুকাল পরে, রাসুলের মৃত্যুর পর, ইসলামি রাজ্য যখন সিরিয়া ছুঁই ছুঁই করছে, তখন মুয়াবিয়া (রা) গিয়ে উমার (রা)কে বুঝানোর চেষ্টা করলেন, সামুদ্রিক যুদ্ধে সাইপ্রাসকে পরাজিত করতে হবে, কারণ বাইজান্টিন সাম্রাজ্য বারবার সাইপ্রাসকে ব্যবহার করে ইসলামি রাজ্যকে আক্রমণ করছে।
কিন্তু, উমার রাজি হলেন না, কারণ নৌসমরে এ কোনই অভিজ্ঞতা নাই মুসলিমদের।
উমার মারা যাবার পর যখন উসমান (রা) খলিফা হলেন, তখন মুওাবিয়া তাঁকে রাজি করিয়ে ফেললেন।
মুওাবিয়া (রা) এই অভিযানের জন্য সেনাপতি নির্বাচন করলেন উবাদা বিন সামিত (রা)কে। উবাদা (রা) এর নেতৃত্বে প্রথমবারের মত মুসলিম নৌবাহিনী পাঠানো হল। সাইপ্রাসে।
কাকতালীয় ব্যাপার ছিল, উবাদার স্ত্রী ছিলেন সেই উম্মে হারাম (রা)। তিনি সেচ্ছায় স্বামীকে সঙ্গ দেবার জন্য তার সাথে রওনা হলেন। ঠিক যেমনটা রাসুল (সা) স্বপ্নে দেখেছিলেন।
যেদিন জাহাজগুলো তীর ছেড়ে চলে যাচ্ছিল আর সবাই তাদের বিদায় দিতে এসেছিল, সেই দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে জাহাজের কিনারে দাঁড়ানো উম্মে হারামের গাল বেয়ে অশ্রু ঝড়ে পড়ছিল। তিনি বিড়বিড় করছিলেন, "আপনি সত্য বলেছিলেন, রাসুলুল্লাহ (সা)"
দ্বীপের কাছে পৌঁছানোর পর কোস্টগার্ডরা অ্যাটাক করে তাদের। কোস্ট গার্ডদের পরাজিত করার পর তীরে নামলেন তাঁরা।
নামার পর তিনি ঘোড়ায় চড়ে এগুচ্ছিলেন। হঠাৎ ঘোড়াটা ভয় পেয়ে লাফ দেয়, আর উম্মে হারাম পড়ে যান ঘোড়া থেকে। আহত হয়ে মারা যান তিনি। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর লাশ যখন নিতে এলেন অন্যরা, দেখলেন, তিনি মুচকি হাসতে হাসতে মারা গেছেন। তিনি স্বপ্নের বাকিটাও সত্য হতে দেখে গেছেন...
যেখানে তিনি মারা গিয়েছিলেন, ঠিক সে জায়গায় আজ উম্মে হারাম মসজিদ, তাঁর স্মরণে।
সূত্রঃ সহীহ বুখারি ৪/৫২/৪৭
AIM-1.31
© 2015 by Ask Islam Bangla.