কাহিনী ৪ --> এক ধনীর দুলাল
সকল প্রশংসা আল্লাহ'র। সময়ের পরিক্রমায় কৈশোর পেরিয়ে তারুণ্যে পদার্পন হয়েছে অনেকের। আমাদের সমাজ তারুণ্যকে উপভোগ করতে শিখিয়েছে। একজন ২০-২২ বছরের যুবককে যদি কল্পনা করতে বলা হয় তবে আমাদের চোখে সানগ্লাস চোখে, স্পাইক করা চুল, ক্লিন শেভড, ড্যাশিং লুকিং ব্রান্ডের শার্ট-জিন্স-জুতা পরিহিত কানে হেডফোন ঝুলানো ইয়ো ইয়ো টাইপের একজন আড্ডাবাজ, আমুদে চিন্তাহীন যুবকের প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠবে। হাজারো মেয়ে ড্রিমবয় হিসেবে এমন কোন যুবককে তার কল্পনায় ছবি আঁকে।
আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর পূর্বে মক্কার অভিজাত পরিবারের তেমনি একজন অত্যন্ত সুদর্শন যুবক ছিলেন মুস'আব ইবন উমাইর(রাঃ)। সম্পদশালী মাতার অতি আদরের সন্তানের গায়ে চরত চমৎকার সব পোশাক, সেসময়ের উৎকৃষ্ট সুগন্ধি ব্যবহার ছিল তার নিত্যদিনের অভ্যাস। মক্কার নারীদের চোখে তিনি ছিলেন স্বপ্ন পুরুষ। মুহাম্মাদ(সাঃ) বলেন, "মক্কায় মুস'আবের চেয়ে সুদর্শন ও উৎকৃষ্টপোশাকধারী আর কেউ ছিল না।" ইতিহাসবিদরা বলেন, "তিনি ছিলেন মক্কার সর্বোৎকৃষ্ট সুগন্ধী ব্যবহারকারী"
সেই মানুষটি আল্লাহ'র রহমতে ইসলাম গ্রহণ করেন। যখন উনার মা উনার ইসলাম গ্রহণের খবরটি শুনলেন তখন তিনি উনাকে ঘরে আবদ্ধ করে রাখলেন। এরপর তিনি সুযোগ বুঝে আবিসিনিয়াতে পালিয়ে যান। এরপর তিনি যখন মক্কায় ফিরে আসেন তখন উনার মা উনাকে ২য় বার অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করেন কিন্তু ব্যর্থ হন। তখন তিনি বলেন, "তোমার যেখানে খুশি সেখানে যাও,তুমি আমার সন্তান না। তুমি এই কাপড়-চোপড় ছেড়ে চলে যাও।" মুস'আব ইবন উমাইর(রাঃ) যখন উনার চাচার কাপড় পরে বেরিয়ে যেতে চাইলেন তখন উনার মা বললেন,"এগুলো তোমার চাচার কাপড় এবং এখন তোমার এসবের কোন অধিকার নেই" একথা শুনে মুস'আব ইবন উমাইর(রাঃ) সব কাপড় ছেড়ে উনার হাত দিয়ে লজ্জাস্থান ঢেকে সেখান থেকে প্রস্থান করেন!
সুবহানআল্লাহ! এযুগের কোন মিউজিক স্টার কিংবা মুভিস্টারকে কল্পনা করুন যার সৌন্দর্য-অর্থ-খ্যাতি-ক্ষমতা কোনটারই কোন অভাব নেই, হাজারো নারী তার পেছনে লাইন দিয়ে আছে, জগতের সমস্ত সুখ-শান্তি যেন তার হাতের মুঠোয়। এমন একজন ব্যক্তি তার প্রাণপ্রিয় পরিবার পরিজনকে ছেড়ে শুধুমাত্র আল্লাহ'কে খুশি করতে জগতের সকল আনন্দকে বিসর্জন দিয়ে বস্ত্রহীন অবস্থায় বেরিয়ে যাচ্ছে কোটি ডলার মূল্যের রাজপ্রাসাদ, স্টাইলিশ গাড়িকে তুচ্ছজ্ঞান করে। এমন একটি চিত্র মনের মধ্যে আঁকার চেষ্টা করুন। এমন কঠিনই ছিল সাহাবাগণের বিসর্জন। শুধুমাত্র এক আল্লাহ'কে খুশি করতে। আর উনাদের গড়ে দেয়া প্লাটফর্মের উপর দাঁড়িয়ে আজ আমরা নিজেদের মুসলিম হিসেবে পরিচয় দিতে পারছি।
আজ এই উদাহরণটা সামনে আনার কারণ হল, আমাদের সমাজের মধ্যে 'দুনিয়াপ্রীতির' একটি ব্যধি ছড়িয়ে পরেছে। যখন কোন ২০-২২ বছরের যুবক ইসলামকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করে, বিলাসিতা ছেড়ে সাধারণ জীবন-যাপনের চেষ্টা করে, একমুঠো দাঁড়ি রেখে আল্লাহ'কে খুশি করার চেষ্টা করে তখন তাকে গেঁয়ো,ব্যাকডেটেড মনে হতে শুরু করে। ছেলেটা গোল্লায় গেল বা আহ! ছেলেটা কত স্মার্ট ছিল আর এখন! ইত্যাদি ইত্যাদি কথাবার্তা। এমন ধারণা আসাটা স্বাভাবিক কেননা আমাদের সমাজ এমনটা ভাবতে শিখিয়েছে। দুনিয়াকে আঁকড়ে ধরতে শিখিয়েছে কিন্তু জান্নাতকে খুঁজতে শেখায় নি। জান্নাতের পথ চিনতে শেখায় নি। জান্নাত যেন রূপকথার গল্প। ধর্ম পালন যেন একটা চ্যান্স নেয়া, যদি পরকালে কিছু থাকে তাহলে যেন কোন মতে পার হয়ে যেতে পারি! আফসোস! কারোও এমন পরিবর্তন দেখলে নিজেদের মধ্যে একটা ধাক্কা লাগে। মুস'আব ইবন উমাইর(রাঃ) পরিবর্তন দেখে সাহাবীদের মনেও ধাক্কা লেগেছিল। তবে এই দুই ধাক্কার মধ্যে পার্থক্য আছে। আমরা ধাক্কা খাই ছেলেটা গোল্লায় গেল এই ভেবে আর সাহাবীগণ ধাক্কা খেয়েছেন আল্লাহ'র সন্তুষ্টিতে উনার সাক্রিফাইস ও দৃঢ়তা দেখে। ঘটনাটি এমনঃ
একদিন কয়েকজন সাহাবা মুহাম্মাদ(সাঃ) এর পাশে বসে ছিলেন। এমন সময় শত তালি দেয়া জীর্ণ-শীর্ণ কাপড় পরিহিত অবস্থায় সেখানে মুস'আব ইবন উমাইর(রাঃ) উপস্থিত হলেন। তাকে এবস্থায় দেখে সাহাবীগণের দৃষ্টিনত হয়ে এলো, তাদের চোখ দিয়ে অশ্রুধারা বইতে শুরু করল। উনারা সেই বিত্তশালী স্টাইলিশ মুস'আব এর সাথে হতদরিদ্র মুস'আব(রাঃ) মেলাতে পারছিলেন না। উনাদের চোখ এটা সহ্য করতে পারছিল না। মুহাম্মাদ(সাঃ) তখন বলেন, "মক্কায় আমি মু'আব কে দেখেছি। মক্কায় তার চেয়ে পিতা-মাতার বেশি আদরের যুবক আর কেউ ছিল না।আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালোবাসায় সে সব ত্যাগ করেছে।"
সুবহানআল্লাহ! আপনার মস্তিস্কের চাকাটা ঘুরিয়ে একবার বিল গেটস কিংবা বারাক ওবামাকে একজন রিকসাওয়ালা হিসেবে চিন্তা করুন! জুকারবার্গকে পানের বাদাম বিক্রেতা হিসেবে চিন্তা করুন! কল্পনা করতে পারছেন মুস'আব ইবন উমাইর(রাঃ) কে দেখতে সাহাবীগণের ঠিক তেমনটিই হয়ত লেগেছিল।
না, বর্ণনা এখানেই শেষ নয়। সেই অভিজাত মুস'আব ইবন উমাইর(রাঃ) উহুদ যুদ্ধে যখন শাহাদাত বরণ করেন তখন উনাকে দাফন করার জন্য যথেষ্ট কাপড় পাওয়া যায় নি। যে চাদরটি ছিল তা দিয়ে উনার মাথা ঢাকা হলে পা বের হয়ে যায়। পা ঢাকা হলে মাথা বের হয়ে যায়। তখন মুহাম্মাদ(সাঃ) নির্দেশ দেন উনার মাথার দিকে ঢেকে যতটুকু বাকী থাকে তা ঘাস দিয়ে আবৃত করে দিতে!
আল্লাহু আকবার! চিন্তা করতে পারছেন এমন পরিস্থিতিটা। যাকে ২০-২২টা বছর সাহাবীগণ সবচেয়ে উত্তম কাপড় পরিধান করতে দেখেছেন, চাকচিক্য আর আভিজাত্যের মাঝে বেড়ে উঠতে দেখেছেন সেই মুস'আব(রাঃ) এর দাফনের জন্য প্রয়োজনীয় কাপড় তখন ছিল না। আপনি কি এই যন্ত্রনার ব্যপকতা আঁচ করতে পারছেন? আপনার এলাকার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির কথা চিন্তা করুন যাকে আপনি এক কাপড় দু'বার পরতে দেখেন নাই, গাড়ি ছাড়া কোথাও যেতে দেখেন নাই তার দাফন হচ্ছে এমন একটি পুরোনো চাদর দিয়ে যা কি না তার পুরো শরীরকেই ঢাকতে সক্ষম না!
মুহাম্মাদ(সাঃ) এজন্য বলেছিলেন, "আমি তোমাকে মক্কায় দেখেছি। সেখানে তোমার চেয়ে কোমল চাদড় ও কোমল যুলফী আর কারোও ছিল না। আর আজ তুমি এখানে এই চাদরে ধুলি মলিন অবস্থায় পড়ে আছ।" তিনি আরোও বললেন,"আল্লাহ'র রাসূল সাক্ষ্য দিচ্ছে ,কিয়ামতের দিন তোমরা সবাই আল্লাহ'র সাক্ষ্যদানকারী হবে।"
তারপর তিনি সাহাবীদের দিকে ফিরে বলেন, "ওহে, জনমন্ডলী! তোমরা যিয়ারত কর, তাদের কাছে এসো, তাদের উপর সালাম পেশ কর। যার হাতে আমার জীবন সেই সত্তার কসম, কিয়ামত পর্যন্ত যে কেউ তাঁদের উপর সালাম পেশ করবে তারা সেই সালামের জবাব দেবে। তোমার উপর শান্তি বর্ষিত হোক, হে মুস'আব। তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক, হে শহীদগণ। তোমাদের সকলের উপর আল্লাহ'র শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক।"
MMM-1.1
আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর পূর্বে মক্কার অভিজাত পরিবারের তেমনি একজন অত্যন্ত সুদর্শন যুবক ছিলেন মুস'আব ইবন উমাইর(রাঃ)। সম্পদশালী মাতার অতি আদরের সন্তানের গায়ে চরত চমৎকার সব পোশাক, সেসময়ের উৎকৃষ্ট সুগন্ধি ব্যবহার ছিল তার নিত্যদিনের অভ্যাস। মক্কার নারীদের চোখে তিনি ছিলেন স্বপ্ন পুরুষ। মুহাম্মাদ(সাঃ) বলেন, "মক্কায় মুস'আবের চেয়ে সুদর্শন ও উৎকৃষ্টপোশাকধারী আর কেউ ছিল না।" ইতিহাসবিদরা বলেন, "তিনি ছিলেন মক্কার সর্বোৎকৃষ্ট সুগন্ধী ব্যবহারকারী"
সেই মানুষটি আল্লাহ'র রহমতে ইসলাম গ্রহণ করেন। যখন উনার মা উনার ইসলাম গ্রহণের খবরটি শুনলেন তখন তিনি উনাকে ঘরে আবদ্ধ করে রাখলেন। এরপর তিনি সুযোগ বুঝে আবিসিনিয়াতে পালিয়ে যান। এরপর তিনি যখন মক্কায় ফিরে আসেন তখন উনার মা উনাকে ২য় বার অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করেন কিন্তু ব্যর্থ হন। তখন তিনি বলেন, "তোমার যেখানে খুশি সেখানে যাও,তুমি আমার সন্তান না। তুমি এই কাপড়-চোপড় ছেড়ে চলে যাও।" মুস'আব ইবন উমাইর(রাঃ) যখন উনার চাচার কাপড় পরে বেরিয়ে যেতে চাইলেন তখন উনার মা বললেন,"এগুলো তোমার চাচার কাপড় এবং এখন তোমার এসবের কোন অধিকার নেই" একথা শুনে মুস'আব ইবন উমাইর(রাঃ) সব কাপড় ছেড়ে উনার হাত দিয়ে লজ্জাস্থান ঢেকে সেখান থেকে প্রস্থান করেন!
সুবহানআল্লাহ! এযুগের কোন মিউজিক স্টার কিংবা মুভিস্টারকে কল্পনা করুন যার সৌন্দর্য-অর্থ-খ্যাতি-ক্ষমতা কোনটারই কোন অভাব নেই, হাজারো নারী তার পেছনে লাইন দিয়ে আছে, জগতের সমস্ত সুখ-শান্তি যেন তার হাতের মুঠোয়। এমন একজন ব্যক্তি তার প্রাণপ্রিয় পরিবার পরিজনকে ছেড়ে শুধুমাত্র আল্লাহ'কে খুশি করতে জগতের সকল আনন্দকে বিসর্জন দিয়ে বস্ত্রহীন অবস্থায় বেরিয়ে যাচ্ছে কোটি ডলার মূল্যের রাজপ্রাসাদ, স্টাইলিশ গাড়িকে তুচ্ছজ্ঞান করে। এমন একটি চিত্র মনের মধ্যে আঁকার চেষ্টা করুন। এমন কঠিনই ছিল সাহাবাগণের বিসর্জন। শুধুমাত্র এক আল্লাহ'কে খুশি করতে। আর উনাদের গড়ে দেয়া প্লাটফর্মের উপর দাঁড়িয়ে আজ আমরা নিজেদের মুসলিম হিসেবে পরিচয় দিতে পারছি।
আজ এই উদাহরণটা সামনে আনার কারণ হল, আমাদের সমাজের মধ্যে 'দুনিয়াপ্রীতির' একটি ব্যধি ছড়িয়ে পরেছে। যখন কোন ২০-২২ বছরের যুবক ইসলামকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করে, বিলাসিতা ছেড়ে সাধারণ জীবন-যাপনের চেষ্টা করে, একমুঠো দাঁড়ি রেখে আল্লাহ'কে খুশি করার চেষ্টা করে তখন তাকে গেঁয়ো,ব্যাকডেটেড মনে হতে শুরু করে। ছেলেটা গোল্লায় গেল বা আহ! ছেলেটা কত স্মার্ট ছিল আর এখন! ইত্যাদি ইত্যাদি কথাবার্তা। এমন ধারণা আসাটা স্বাভাবিক কেননা আমাদের সমাজ এমনটা ভাবতে শিখিয়েছে। দুনিয়াকে আঁকড়ে ধরতে শিখিয়েছে কিন্তু জান্নাতকে খুঁজতে শেখায় নি। জান্নাতের পথ চিনতে শেখায় নি। জান্নাত যেন রূপকথার গল্প। ধর্ম পালন যেন একটা চ্যান্স নেয়া, যদি পরকালে কিছু থাকে তাহলে যেন কোন মতে পার হয়ে যেতে পারি! আফসোস! কারোও এমন পরিবর্তন দেখলে নিজেদের মধ্যে একটা ধাক্কা লাগে। মুস'আব ইবন উমাইর(রাঃ) পরিবর্তন দেখে সাহাবীদের মনেও ধাক্কা লেগেছিল। তবে এই দুই ধাক্কার মধ্যে পার্থক্য আছে। আমরা ধাক্কা খাই ছেলেটা গোল্লায় গেল এই ভেবে আর সাহাবীগণ ধাক্কা খেয়েছেন আল্লাহ'র সন্তুষ্টিতে উনার সাক্রিফাইস ও দৃঢ়তা দেখে। ঘটনাটি এমনঃ
একদিন কয়েকজন সাহাবা মুহাম্মাদ(সাঃ) এর পাশে বসে ছিলেন। এমন সময় শত তালি দেয়া জীর্ণ-শীর্ণ কাপড় পরিহিত অবস্থায় সেখানে মুস'আব ইবন উমাইর(রাঃ) উপস্থিত হলেন। তাকে এবস্থায় দেখে সাহাবীগণের দৃষ্টিনত হয়ে এলো, তাদের চোখ দিয়ে অশ্রুধারা বইতে শুরু করল। উনারা সেই বিত্তশালী স্টাইলিশ মুস'আব এর সাথে হতদরিদ্র মুস'আব(রাঃ) মেলাতে পারছিলেন না। উনাদের চোখ এটা সহ্য করতে পারছিল না। মুহাম্মাদ(সাঃ) তখন বলেন, "মক্কায় আমি মু'আব কে দেখেছি। মক্কায় তার চেয়ে পিতা-মাতার বেশি আদরের যুবক আর কেউ ছিল না।আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালোবাসায় সে সব ত্যাগ করেছে।"
সুবহানআল্লাহ! আপনার মস্তিস্কের চাকাটা ঘুরিয়ে একবার বিল গেটস কিংবা বারাক ওবামাকে একজন রিকসাওয়ালা হিসেবে চিন্তা করুন! জুকারবার্গকে পানের বাদাম বিক্রেতা হিসেবে চিন্তা করুন! কল্পনা করতে পারছেন মুস'আব ইবন উমাইর(রাঃ) কে দেখতে সাহাবীগণের ঠিক তেমনটিই হয়ত লেগেছিল।
না, বর্ণনা এখানেই শেষ নয়। সেই অভিজাত মুস'আব ইবন উমাইর(রাঃ) উহুদ যুদ্ধে যখন শাহাদাত বরণ করেন তখন উনাকে দাফন করার জন্য যথেষ্ট কাপড় পাওয়া যায় নি। যে চাদরটি ছিল তা দিয়ে উনার মাথা ঢাকা হলে পা বের হয়ে যায়। পা ঢাকা হলে মাথা বের হয়ে যায়। তখন মুহাম্মাদ(সাঃ) নির্দেশ দেন উনার মাথার দিকে ঢেকে যতটুকু বাকী থাকে তা ঘাস দিয়ে আবৃত করে দিতে!
আল্লাহু আকবার! চিন্তা করতে পারছেন এমন পরিস্থিতিটা। যাকে ২০-২২টা বছর সাহাবীগণ সবচেয়ে উত্তম কাপড় পরিধান করতে দেখেছেন, চাকচিক্য আর আভিজাত্যের মাঝে বেড়ে উঠতে দেখেছেন সেই মুস'আব(রাঃ) এর দাফনের জন্য প্রয়োজনীয় কাপড় তখন ছিল না। আপনি কি এই যন্ত্রনার ব্যপকতা আঁচ করতে পারছেন? আপনার এলাকার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির কথা চিন্তা করুন যাকে আপনি এক কাপড় দু'বার পরতে দেখেন নাই, গাড়ি ছাড়া কোথাও যেতে দেখেন নাই তার দাফন হচ্ছে এমন একটি পুরোনো চাদর দিয়ে যা কি না তার পুরো শরীরকেই ঢাকতে সক্ষম না!
মুহাম্মাদ(সাঃ) এজন্য বলেছিলেন, "আমি তোমাকে মক্কায় দেখেছি। সেখানে তোমার চেয়ে কোমল চাদড় ও কোমল যুলফী আর কারোও ছিল না। আর আজ তুমি এখানে এই চাদরে ধুলি মলিন অবস্থায় পড়ে আছ।" তিনি আরোও বললেন,"আল্লাহ'র রাসূল সাক্ষ্য দিচ্ছে ,কিয়ামতের দিন তোমরা সবাই আল্লাহ'র সাক্ষ্যদানকারী হবে।"
তারপর তিনি সাহাবীদের দিকে ফিরে বলেন, "ওহে, জনমন্ডলী! তোমরা যিয়ারত কর, তাদের কাছে এসো, তাদের উপর সালাম পেশ কর। যার হাতে আমার জীবন সেই সত্তার কসম, কিয়ামত পর্যন্ত যে কেউ তাঁদের উপর সালাম পেশ করবে তারা সেই সালামের জবাব দেবে। তোমার উপর শান্তি বর্ষিত হোক, হে মুস'আব। তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক, হে শহীদগণ। তোমাদের সকলের উপর আল্লাহ'র শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক।"
MMM-1.1
© 2014 by Ask Islam Bangla.