কাহিনী ৩ --> জিরানা শিবিরের বন্দী মুক্তি
তায়েফের সন্নিকটবর্তী জিরানা লোকালয়। হুনাইন যুদ্ধের ছ’হাজার বন্দী এখনও জিরানার মুসলিম শিবিরে বন্দী। তায়েফের অবরোধ শেষ করে মহানবী (সাঃ) ফিরে এলেন জিরানার শিবিরে।
জিরানায় যারা বন্দী ছিল সবাই হওয়াযেন গোত্রের লোক। হাওয়াযেন গোত্রের একটি শাখা বনু সা’দ। এই বনু সা’দ মহানবীর (সাঃ) দুধমাতা হালিমার কবিলা। এদের সাথেই হেসে-খেলে মহানবীর (সাঃ) শিশুকালের ৫টি বছর কেটেছে।বনু সা’দ কবিলার লোকেরাও হাওয়াযিনদের সাথে বন্দী ছিল জিরানায়।
মহানবী (সাঃ) জিরানায় ফিরে এলে হাওয়াযেনদের একটি সম্মানিত প্রতিনিধিদল মহানবী (সাঃ) এর সাথে এসে দেখা করলেন। প্রতিনিধি দলের নেতা যুহাইর ইবন সা’দ মহানবী (সাঃ) এর কাছে এসে আরজ করলেন, “যারা বন্দী শিবিরে অবস্থান করছে, তাদের মধ্যে আপনার ফুফু ও খালাও রয়েছেন। আল্লাহুর কসম, যদি আরবের সুলতানদের মধ্য থেকে কেউ আমার বংশের দুধ পান করতেন, তাহলে তাঁর কাছে আমাদের অনেক আকাংখা আবদার থাকতো। আর আপনার কাছ থেকে আমরা আরও বেশী আশা রাখি।”
মহানবী (সাঃ) সাগ্রহে তাদের কথা শুনলেন। বোধ হয় তাঁর মন ছুটে গেল সুদূর অতীতের এক দৃশ্যে। ভেসে উঠল তাঁর চোখে, হাওয়াযেনদের উপত্যকা ও প্রান্তর ভূমি। ফুফু-খালা যারা বন্দী তাদের স্নেহ তাঁকে কতইনা শান্তির স্নিগ্ধ পরশ বুলেয়েছে। কিন্তু তিনি তো কোন রাজা নন, কিংবা নন কোন ডিক্টেটর অথবা স্বেচ্ছাচারী সম্রাট। সব মুসলমানের স্বার্থ ও মতামত যে বন্দিমুক্তির সাথে জড়িত সে বন্দীদের তো তিনি তাঁর একার ইচ্ছায় ছেড়ে দিতে পারেন না। এ অধিকার সকলের, সকলের সামনে এটা পেশ করা দরকার। মহানবী (সা) শান্ত স্নিগ্ধ কন্ঠে বললেন, “ ‘যুহাইর’ ! যুদ্ধ বন্দীদের উপর আবদুল মুত্তালিবের বংশধরদের অধিকার যতটুকু, তা আমি এই মুহুর্তে ত্যাগ করছি। আর অন্যান্য সকল যুদ্ধ বন্দীর মুক্তির জন্য যোহরের নামাযের পর সমবেত মুসলমানদের কাছে আবেদন কর।”
সে দিনই যোহরের নামাযের পর হাওয়াযেনদের প্রতিনিধি দলটি এসে মুসলমানদের সামনে দাঁড়াল। আবেদন জানাল তারা বন্দীদের মুক্তির জন্য আগের মত করেই। মহানবী (সাঃ) ঠিক আগের মত করেই বললেন, “আমি আমার কবিলার লোকেদের অধিকার রাখি, আমি তাদের দাবী পরিত্যাগ করছি। আর মুসলমানদের সকলের কাছে বন্দীর মুক্তির জন্য সুফারিশ করছি।” সমবেত আনসার ও মুহাজির সবাই এক বাক্যে বলে উঠল, “আপনার কবিলার মত আমদের অধিকারও আপনার উপর অর্পিত হলো।”
এরপর মহানবী (সাঃ) ছ’হাজার বন্দীর সকলকেই মুক্তি দিলেন। মহানবী (সাঃ) ইচ্ছা করলেই সব বন্দীকে আগেই নিজের ইচ্ছায় মুক্তি দিতে পারতেন। কেউই প্রতিবাদ করতোনা। কিংবা অসন্তুষ্টও হতো না কেউ। কিন্তু সব যুগে সব মানুষের আদর্শ মহানবী (সাঃ) তা করেননি।
মুসলমানদের শাসক, অধিনায়ক যাঁরা তাঁরা মুসলমানদেরই একজন হবেন, তাঁর অধিকারের সীমাও সকলের চেয়ে বেশী কিছু হবে না, এ উজ্জল শিক্ষাই চিরন্তন করে রাখলেন তিনি পৃথিবীতে।
STA-3.119
জিরানায় যারা বন্দী ছিল সবাই হওয়াযেন গোত্রের লোক। হাওয়াযেন গোত্রের একটি শাখা বনু সা’দ। এই বনু সা’দ মহানবীর (সাঃ) দুধমাতা হালিমার কবিলা। এদের সাথেই হেসে-খেলে মহানবীর (সাঃ) শিশুকালের ৫টি বছর কেটেছে।বনু সা’দ কবিলার লোকেরাও হাওয়াযিনদের সাথে বন্দী ছিল জিরানায়।
মহানবী (সাঃ) জিরানায় ফিরে এলে হাওয়াযেনদের একটি সম্মানিত প্রতিনিধিদল মহানবী (সাঃ) এর সাথে এসে দেখা করলেন। প্রতিনিধি দলের নেতা যুহাইর ইবন সা’দ মহানবী (সাঃ) এর কাছে এসে আরজ করলেন, “যারা বন্দী শিবিরে অবস্থান করছে, তাদের মধ্যে আপনার ফুফু ও খালাও রয়েছেন। আল্লাহুর কসম, যদি আরবের সুলতানদের মধ্য থেকে কেউ আমার বংশের দুধ পান করতেন, তাহলে তাঁর কাছে আমাদের অনেক আকাংখা আবদার থাকতো। আর আপনার কাছ থেকে আমরা আরও বেশী আশা রাখি।”
মহানবী (সাঃ) সাগ্রহে তাদের কথা শুনলেন। বোধ হয় তাঁর মন ছুটে গেল সুদূর অতীতের এক দৃশ্যে। ভেসে উঠল তাঁর চোখে, হাওয়াযেনদের উপত্যকা ও প্রান্তর ভূমি। ফুফু-খালা যারা বন্দী তাদের স্নেহ তাঁকে কতইনা শান্তির স্নিগ্ধ পরশ বুলেয়েছে। কিন্তু তিনি তো কোন রাজা নন, কিংবা নন কোন ডিক্টেটর অথবা স্বেচ্ছাচারী সম্রাট। সব মুসলমানের স্বার্থ ও মতামত যে বন্দিমুক্তির সাথে জড়িত সে বন্দীদের তো তিনি তাঁর একার ইচ্ছায় ছেড়ে দিতে পারেন না। এ অধিকার সকলের, সকলের সামনে এটা পেশ করা দরকার। মহানবী (সা) শান্ত স্নিগ্ধ কন্ঠে বললেন, “ ‘যুহাইর’ ! যুদ্ধ বন্দীদের উপর আবদুল মুত্তালিবের বংশধরদের অধিকার যতটুকু, তা আমি এই মুহুর্তে ত্যাগ করছি। আর অন্যান্য সকল যুদ্ধ বন্দীর মুক্তির জন্য যোহরের নামাযের পর সমবেত মুসলমানদের কাছে আবেদন কর।”
সে দিনই যোহরের নামাযের পর হাওয়াযেনদের প্রতিনিধি দলটি এসে মুসলমানদের সামনে দাঁড়াল। আবেদন জানাল তারা বন্দীদের মুক্তির জন্য আগের মত করেই। মহানবী (সাঃ) ঠিক আগের মত করেই বললেন, “আমি আমার কবিলার লোকেদের অধিকার রাখি, আমি তাদের দাবী পরিত্যাগ করছি। আর মুসলমানদের সকলের কাছে বন্দীর মুক্তির জন্য সুফারিশ করছি।” সমবেত আনসার ও মুহাজির সবাই এক বাক্যে বলে উঠল, “আপনার কবিলার মত আমদের অধিকারও আপনার উপর অর্পিত হলো।”
এরপর মহানবী (সাঃ) ছ’হাজার বন্দীর সকলকেই মুক্তি দিলেন। মহানবী (সাঃ) ইচ্ছা করলেই সব বন্দীকে আগেই নিজের ইচ্ছায় মুক্তি দিতে পারতেন। কেউই প্রতিবাদ করতোনা। কিংবা অসন্তুষ্টও হতো না কেউ। কিন্তু সব যুগে সব মানুষের আদর্শ মহানবী (সাঃ) তা করেননি।
মুসলমানদের শাসক, অধিনায়ক যাঁরা তাঁরা মুসলমানদেরই একজন হবেন, তাঁর অধিকারের সীমাও সকলের চেয়ে বেশী কিছু হবে না, এ উজ্জল শিক্ষাই চিরন্তন করে রাখলেন তিনি পৃথিবীতে।
STA-3.119
© 2013 by Ask Islam Bangla.