কাহিনী ৬ --> আল্লাহর বান্দা
আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক (রহ.) বলেন, “আমি এমন সময়টাতে মক্কায় আগমন করলাম যখন কিনা মক্কা অনাবৃষ্টিতে ভুগছিলো আর লোকেরা মাসজিদ আল-হারামে ইসতিসকা সালাত (বৃষ্টির জন্য দুয়া করে যে সালাত আদায় করা হয়) আদায় করছিলো। আমি বানি শাইবাহ’র প্রবেশপথের নিকটে থাকার সময় একজন কালো বর্ণের তরুণকে দেখতে পেলাম যার শরীরে ছিল দুই টুকরো বারল্যাপ (একটি পাতলা কাপড় যা সাধারণত ছালা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়), যার এক টুকরো তার কোমরের চারপাশে মোড়ানো ছিল আর আরেক টুকরো তার কাধের উপর ছিলো। সে আমার কাছাকাছি একটা নির্জন স্থানে দাঁড়িয়ে ছিলো আর আমি তাকে বলতে শুনলাম – ‘হে আমার রব, মুখগুলো তাদের পাপসমূহ ও তাদের কাজগুলোর অমঙ্গলের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হল, আর আপনি সৃষ্টির শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আমাদের কাছ থেকে বৃষ্টিকে বিরত রাখলেন, হে সবরকারী, আপনি তো তিনিই যার ব্যাপারে তার গোলামেরা সুন্দর ব্যাপারগুলো ছাড়া আর কিছুই জানে না, আমি আপনার নিকট দুয়া করছি যে আপনি তাদেরকে বৃষ্টি দান করুন, এই মুহূর্তে, এই মুহূর্তে …..’ ”
ইবনুল মুবারাক (রহ.) বলেন, “তিনি বলতেই থাকলেন – ‘এই মুহূর্তে’ – যতক্ষণ না আকাশ মেঘে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়ে প্রত্যেক দিক থেকেই বৃষ্টি বর্ষিত হতে থাকলো। এরপর তিনি তাসবিহ পাঠ করতে করতে তার স্থানেই বসে পড়লেন আর কাঁদা শুরু করলেন।
তিনি সেই স্থান থেকে সরে যাওয়ার পর থেকে আমি তাকে অনুসরণ করতে থাকলাম এটা জানার জন্য যে তিনি কোথায় বাস করেন। এরপর আমি ফুদাইল ইবন ‘ইয়াদ এর কাছে গেলে তিনি আমার কাছে জানতে চাইলেন, ‘আপনাকে এত বিষণ্ণ দেখাচ্ছে কেন ?’ ”
আমি তাকে বললাম, “আল্লাহ’র নিকট কেউ একজন আমাদের থেকে অগ্রগামী হয়ে গিয়েছে, তাই তিনি আমাদের বাদ দিয়ে সেই ব্যক্তিকেই নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করলেন।”
তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “সেটা কিভাবে বুঝলেন ?”
এরপর আমি তাকে ঘটনাটি বললাম আর তিনি আর্তনাদ করে আমাকে বললেন, “দুর্ভোগ আপনার জন্য হে ইবনুল মুবারাক, আমাকে তার কাছে নিয়ে যান।”
আমি বললাম, “এই মুহূর্তে সময় নেই, আমি তার ব্যাপারে আরও তথ্য খুঁজে বের করবো।”
পরদিন সকালে ফজরের সালাত আদায়ের পর আমি তার ঘরে গেলাম, সেখানে দরজায় একজন বৃদ্ধ ব্যক্তি বসে ছিলেন। তিনি আমাকে দেখেই চিনতে পারলেন আর জিজ্ঞেস করলেন, “স্বাগতম হে আবু ‘আবদির রাহমান, আপনার কি প্রয়োজন ?”
আমি বললাম, “আমার এক কালো ছেলের প্রয়োজন।”
তিনি বললেন, “আমার তো অনেক আছে।” এরপর তিনি চিৎকার করে ডাকলেন, “ছেলে।” এবং একটি শক্তিশালী তরুণ ব্যক্তি বের হয়ে আসলেন। তিনি বললেন, “ওকে নিলে আপনি ভালই ফলাফল পাবেন। সে আপনার জন্য ভালো হবে।”
আমি বললাম, “আমার তার কোন প্রয়োজন নেই।”
সুতরাং তিনি একটির পর একটি ছেলেকে বের করে বের করে আনতে থাকলেন যতক্ষণ না পর্যন্ত আমি সেই ছেলেকে দেখে চিনতে পেরে আমার চোখগুলো অস্রুশিক্ত হল।
তিনি জানতে চাইলেন, “এই ছেলে ?”
আমি বললাম, “জী।”
তিনি বললেন, “তাকে তো বিক্রি করার কোন উপায় নেই।”
আমি জানতে চাইলাম, “কেন নয় ?”
তিনি বললেন, “কারন আমার এই ঘরে তার উপস্থিতিকে আমি রহমত হিসেবে দেখি, আর সে আমার কাছে অমূল্য।”
আমি জিজ্ঞেস করলাম, “তিনি কোথা থেকে খাবার পান ?”
তিনি বললেন, “সে যে খাবারগুলো বিক্রি করে কিছু উপার্জন করে, সেগুলো দিয়ে সে খাবার কিনে। আর যদি সে বিক্রি করতে না পারে তবে সে সেই খাবারগুলো খায় আর সেটাই তার জন্য পর্যাপ্ত হয়। অন্যান্য ছেলেরা আমাকে বলেছে যে সে এই দীর্ঘ রাতগুলোতে ঘুম যায় না আর আর সে তাদের সাথে মিলেমিশেও থাকে না, সে নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকে, আর আমার অন্তর তাকে ভালোবেসে ফেলেছে।”
আমি বললাম, “আমি কি ফুদাইল ইবন ‘ইয়াদ আর সুফইয়ান আস-সাওরি’র কাছে ফিরে যাবো তাদের প্রয়োজন পূর্ণ করা ছাড়াই ?”
তিনি বললেন, “আমার নিকট আপনার আগমন করাই হল আমার জন্য এক বিরাট উপলক্ষ, আপনি যে মূল্যে চান তাকে গ্রহণ করতে পারেন।”
অতএব আমি তাকে কিনে নিলাম এবং তাকে ফুদাইলের কাছে নিয়ে গেলাম। তিনি কিছুদুর হেঁটে বললেন, “হে আমার মনিব।” আমি জবাব দিলাম, “আপনার খিদমতে উপস্থিত।”
তিনি বললেন, “দয়া করে আপনি এটা বলবেন না যে ‘আপনার খিদমতে উপস্থিত’, কারন গোলাম তো সে-ই যার উচিত তার মনিবের খিদমতে উপস্থিত থাকা।”
আমি বললাম, “হে আমার প্রিয়জন, আপনার কি প্রয়োজন ?”
তিনি বললেন, “আমি শারীরিকভাবে দুর্বল, আর আপনার খেদমতের জন্য আমার শক্তিও নেই, আমি ছাড়াও আপনার কাছে অন্য বিকল্প ছিলো। আমার থেকেও শক্তিশালী ব্যক্তিদের বের করে আনা হয়েছিলো।”
আমি বললাম, “আল্লাহ যেন আমার খেদমতের জন্য তোমাকে কখনোই দেখতে না পান, বরং আমি আপনার জন্য একটি ঘর কিনে দিয়ে আপনাকে বিয়ে করিয়ে দিবো এবং আমি নিজে আপনার খিদমত করবো।”
তিনি এই সময় কেঁদে উঠলেন, তাই আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, “আপনি কি কারনে কাঁদছেন ?”
তিনি বললেন, “আমার সাথে আল্লাহ’র যোগাযোগের মধ্যে একটি যোগাযোগ দেখা ছাড়া আপনি এটা করতেন না, নাহলে কেনি বা আপনি আমাকে অন্যদের ছেড়ে বেছে নিলেন ?”
আমি বললাম, “এই ব্যাপারে উদ্বেগ করো না।”
কিন্তু তিনি জিদ ধরে বললেন, “আল্লাহ’র নামে শপথ করে আমি আপনার কাছে এটা জানতে চাচ্ছি।”
আমি বললাম, “আপনার দুয়ার জবাব।”
তিনি বললেন, “আমি আপনাকে একজন সৎ করমপরায়ন বান্দা হিসেবেই চিনি। সৃষ্টির মাঝে আল্লাহ’র একটি বাছাইকৃত দল আছে, তিনি তার বান্দাদের মাঝে যাকে ভালোবাসেন তাকে ছাড়া তিনি তাদের মর্যাদা প্রকাশ করেন না।” এরপর তিনি বললেন, “আমরা যদি এক মুহূর্তের জন্য থামি তবে কি সেটা ঠিক হবে ? গতকাল থেকে ঋণী থাকা (সালাতের) কিছু রাকআত আমাকে আদায় করতে হবে।”
আমি বললাম, “ফুদাইলের ঘর নিকটেই।”
তিনি বললেন, “না, এখানেই আমার এর থেকেও প্রিয়তম আছেন। আল্লাহ’র আদেশ তো কখনোই বিলম্বিত হয় না।”
এরপর তিনি মাসজিদে প্রবেশ করে সালাত আদায় করা শুরু করলেন, তার সালাত আদায় শেষে তিনি আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “হে আবু ‘আবদির রহমান, আপনার কি কিছুর প্রয়োজন রয়েছে ?”
আমি জানতে চাইলাম, “কেন ?”
তিনি বললেন, “কারন আমি যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছি।” আমি জিজ্ঞেস করলাম, “কোথায় ?”
তিনি বললেন, “পরকালে।” আমি বললাম, “আমাকে আপনার সঙ্গ উপভোগ করতে দিন।”
তিনি বললেন, “জীবনের মধুরতা তো তখনই পেয়েছিলাম যখন কেবল আল্লাহ’র সাথেই আমার একে অপরের সম্পর্ক ছিল, এখন আপনি সেটা প্রকাশ করে দিলেন, অন্যরাও তা-ই করবে, আর আমার এটার কোন দরকারই নেই।”
তিনি এরপর তার মুখের উপরেই পতিত হয়ে গেলেন আর বললেন, “হে আমার রব, আপনি আমাকে আপনার কাছে নিয়ে যান এই মুহূর্তে, এই মুহূর্তে।”
আমি তার কাছে গিয়ে দেখলাম যে তিনি পরলোক গমন করেছেন।
আল্লাহ’র শপথ, তাকে স্মরণ করার প্রত্যেক সময়েই এক দীর্ঘ বিষণ্ণতা আমাকে আচ্ছাদিত করতো আর এই দুনিয়া আমার চোখে তুচ্ছ হয়ে ধরা দিতো।
[ সংগৃহীত অনুবাদ]
LTA-3.200
ইবনুল মুবারাক (রহ.) বলেন, “তিনি বলতেই থাকলেন – ‘এই মুহূর্তে’ – যতক্ষণ না আকাশ মেঘে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়ে প্রত্যেক দিক থেকেই বৃষ্টি বর্ষিত হতে থাকলো। এরপর তিনি তাসবিহ পাঠ করতে করতে তার স্থানেই বসে পড়লেন আর কাঁদা শুরু করলেন।
তিনি সেই স্থান থেকে সরে যাওয়ার পর থেকে আমি তাকে অনুসরণ করতে থাকলাম এটা জানার জন্য যে তিনি কোথায় বাস করেন। এরপর আমি ফুদাইল ইবন ‘ইয়াদ এর কাছে গেলে তিনি আমার কাছে জানতে চাইলেন, ‘আপনাকে এত বিষণ্ণ দেখাচ্ছে কেন ?’ ”
আমি তাকে বললাম, “আল্লাহ’র নিকট কেউ একজন আমাদের থেকে অগ্রগামী হয়ে গিয়েছে, তাই তিনি আমাদের বাদ দিয়ে সেই ব্যক্তিকেই নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করলেন।”
তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “সেটা কিভাবে বুঝলেন ?”
এরপর আমি তাকে ঘটনাটি বললাম আর তিনি আর্তনাদ করে আমাকে বললেন, “দুর্ভোগ আপনার জন্য হে ইবনুল মুবারাক, আমাকে তার কাছে নিয়ে যান।”
আমি বললাম, “এই মুহূর্তে সময় নেই, আমি তার ব্যাপারে আরও তথ্য খুঁজে বের করবো।”
পরদিন সকালে ফজরের সালাত আদায়ের পর আমি তার ঘরে গেলাম, সেখানে দরজায় একজন বৃদ্ধ ব্যক্তি বসে ছিলেন। তিনি আমাকে দেখেই চিনতে পারলেন আর জিজ্ঞেস করলেন, “স্বাগতম হে আবু ‘আবদির রাহমান, আপনার কি প্রয়োজন ?”
আমি বললাম, “আমার এক কালো ছেলের প্রয়োজন।”
তিনি বললেন, “আমার তো অনেক আছে।” এরপর তিনি চিৎকার করে ডাকলেন, “ছেলে।” এবং একটি শক্তিশালী তরুণ ব্যক্তি বের হয়ে আসলেন। তিনি বললেন, “ওকে নিলে আপনি ভালই ফলাফল পাবেন। সে আপনার জন্য ভালো হবে।”
আমি বললাম, “আমার তার কোন প্রয়োজন নেই।”
সুতরাং তিনি একটির পর একটি ছেলেকে বের করে বের করে আনতে থাকলেন যতক্ষণ না পর্যন্ত আমি সেই ছেলেকে দেখে চিনতে পেরে আমার চোখগুলো অস্রুশিক্ত হল।
তিনি জানতে চাইলেন, “এই ছেলে ?”
আমি বললাম, “জী।”
তিনি বললেন, “তাকে তো বিক্রি করার কোন উপায় নেই।”
আমি জানতে চাইলাম, “কেন নয় ?”
তিনি বললেন, “কারন আমার এই ঘরে তার উপস্থিতিকে আমি রহমত হিসেবে দেখি, আর সে আমার কাছে অমূল্য।”
আমি জিজ্ঞেস করলাম, “তিনি কোথা থেকে খাবার পান ?”
তিনি বললেন, “সে যে খাবারগুলো বিক্রি করে কিছু উপার্জন করে, সেগুলো দিয়ে সে খাবার কিনে। আর যদি সে বিক্রি করতে না পারে তবে সে সেই খাবারগুলো খায় আর সেটাই তার জন্য পর্যাপ্ত হয়। অন্যান্য ছেলেরা আমাকে বলেছে যে সে এই দীর্ঘ রাতগুলোতে ঘুম যায় না আর আর সে তাদের সাথে মিলেমিশেও থাকে না, সে নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকে, আর আমার অন্তর তাকে ভালোবেসে ফেলেছে।”
আমি বললাম, “আমি কি ফুদাইল ইবন ‘ইয়াদ আর সুফইয়ান আস-সাওরি’র কাছে ফিরে যাবো তাদের প্রয়োজন পূর্ণ করা ছাড়াই ?”
তিনি বললেন, “আমার নিকট আপনার আগমন করাই হল আমার জন্য এক বিরাট উপলক্ষ, আপনি যে মূল্যে চান তাকে গ্রহণ করতে পারেন।”
অতএব আমি তাকে কিনে নিলাম এবং তাকে ফুদাইলের কাছে নিয়ে গেলাম। তিনি কিছুদুর হেঁটে বললেন, “হে আমার মনিব।” আমি জবাব দিলাম, “আপনার খিদমতে উপস্থিত।”
তিনি বললেন, “দয়া করে আপনি এটা বলবেন না যে ‘আপনার খিদমতে উপস্থিত’, কারন গোলাম তো সে-ই যার উচিত তার মনিবের খিদমতে উপস্থিত থাকা।”
আমি বললাম, “হে আমার প্রিয়জন, আপনার কি প্রয়োজন ?”
তিনি বললেন, “আমি শারীরিকভাবে দুর্বল, আর আপনার খেদমতের জন্য আমার শক্তিও নেই, আমি ছাড়াও আপনার কাছে অন্য বিকল্প ছিলো। আমার থেকেও শক্তিশালী ব্যক্তিদের বের করে আনা হয়েছিলো।”
আমি বললাম, “আল্লাহ যেন আমার খেদমতের জন্য তোমাকে কখনোই দেখতে না পান, বরং আমি আপনার জন্য একটি ঘর কিনে দিয়ে আপনাকে বিয়ে করিয়ে দিবো এবং আমি নিজে আপনার খিদমত করবো।”
তিনি এই সময় কেঁদে উঠলেন, তাই আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, “আপনি কি কারনে কাঁদছেন ?”
তিনি বললেন, “আমার সাথে আল্লাহ’র যোগাযোগের মধ্যে একটি যোগাযোগ দেখা ছাড়া আপনি এটা করতেন না, নাহলে কেনি বা আপনি আমাকে অন্যদের ছেড়ে বেছে নিলেন ?”
আমি বললাম, “এই ব্যাপারে উদ্বেগ করো না।”
কিন্তু তিনি জিদ ধরে বললেন, “আল্লাহ’র নামে শপথ করে আমি আপনার কাছে এটা জানতে চাচ্ছি।”
আমি বললাম, “আপনার দুয়ার জবাব।”
তিনি বললেন, “আমি আপনাকে একজন সৎ করমপরায়ন বান্দা হিসেবেই চিনি। সৃষ্টির মাঝে আল্লাহ’র একটি বাছাইকৃত দল আছে, তিনি তার বান্দাদের মাঝে যাকে ভালোবাসেন তাকে ছাড়া তিনি তাদের মর্যাদা প্রকাশ করেন না।” এরপর তিনি বললেন, “আমরা যদি এক মুহূর্তের জন্য থামি তবে কি সেটা ঠিক হবে ? গতকাল থেকে ঋণী থাকা (সালাতের) কিছু রাকআত আমাকে আদায় করতে হবে।”
আমি বললাম, “ফুদাইলের ঘর নিকটেই।”
তিনি বললেন, “না, এখানেই আমার এর থেকেও প্রিয়তম আছেন। আল্লাহ’র আদেশ তো কখনোই বিলম্বিত হয় না।”
এরপর তিনি মাসজিদে প্রবেশ করে সালাত আদায় করা শুরু করলেন, তার সালাত আদায় শেষে তিনি আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “হে আবু ‘আবদির রহমান, আপনার কি কিছুর প্রয়োজন রয়েছে ?”
আমি জানতে চাইলাম, “কেন ?”
তিনি বললেন, “কারন আমি যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছি।” আমি জিজ্ঞেস করলাম, “কোথায় ?”
তিনি বললেন, “পরকালে।” আমি বললাম, “আমাকে আপনার সঙ্গ উপভোগ করতে দিন।”
তিনি বললেন, “জীবনের মধুরতা তো তখনই পেয়েছিলাম যখন কেবল আল্লাহ’র সাথেই আমার একে অপরের সম্পর্ক ছিল, এখন আপনি সেটা প্রকাশ করে দিলেন, অন্যরাও তা-ই করবে, আর আমার এটার কোন দরকারই নেই।”
তিনি এরপর তার মুখের উপরেই পতিত হয়ে গেলেন আর বললেন, “হে আমার রব, আপনি আমাকে আপনার কাছে নিয়ে যান এই মুহূর্তে, এই মুহূর্তে।”
আমি তার কাছে গিয়ে দেখলাম যে তিনি পরলোক গমন করেছেন।
আল্লাহ’র শপথ, তাকে স্মরণ করার প্রত্যেক সময়েই এক দীর্ঘ বিষণ্ণতা আমাকে আচ্ছাদিত করতো আর এই দুনিয়া আমার চোখে তুচ্ছ হয়ে ধরা দিতো।
[ সংগৃহীত অনুবাদ]
LTA-3.200
© 2015 by Ask Islam Bangla.