কাহিনী ৪ --> কুরআন যাদেরকে আটকিয়ে রাখবে তারা কখনো জাহান্নাম হতে মুক্তি পাবে না
আনাস ইবনে মালিক(রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষকে (হাশরের ময়দানে)সমবেত করবেন। তার এই বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য চেষ্টা করবে। অতবা তাদের অ্ন্তরে এই চিন্তা ঢেলে দেয়া হবে। তারা বলবে, আমরা যদি এখান থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য কারো মাধ্যমে আমাদের রবের কাছে সুফারিশ করাতাম তাহলে এ অসহণীয় অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পারতাম।
নবী (সা) বলেনঃ তারা আদম আলাইহিস সালামের কাছে গিয়ে বলবে আপনি আদম-সব মানুষের পিতা, আল্লাহ নিজ হাতে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন, আপনার মধ্যে স্বীয় রুহ ফুঁকে দিয়েছেন এবং ফিরিশতাদের নির্দেশ দিলে তারা সকলে আজনাকে সিজদা করেছে। আপনি আমাদের জন্যে আপনার রবের কাছে সুফারিশ করুন। তাহলো তিনি আমাদেরকে এই কষ্টদায়ক স্থান থেকে মুক্ত করে আরাম দান করবেন। তখন আদম (আ) বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযুক্ত নই। তিনি (নিষিদ্ধ গাছের ফল খাওয়ায়) নিজের কৃত অপরাধের কথা উল্লেখ করবেন এবং তিনি যে এ জন্যে তাঁর রবের কাছে লজ্জিত তাও বলবেন। তিনি আরো বলবেনঃ বরং তোমরা পৃথিবীবাসীর জন্যে প্রেরিত আল্লাহর সব প্রথম নবী নূহ্আলাইহিস সাল্লামের কাছে যাও।
রাসূলুল্লাহ্(সা) বলেনঃ সুতরাং তারা সবাই নূহ্ আলাইহিস সাল্লামের কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযুক্ত নই। তিনি সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কৃত অপরাধের কথা স্মরণ করবেন যা তিনি করেছিলেন। এতে তিনি যে তাঁর রবের কাছে লজ্জিত সে কাথাও বলবেন। আর বলবেনঃ তোমরা ইব্রাহীম আরঅইহিস সালামের কাছে যাও। তিনি এমন এক ব্যক্তি যাকে আল্লাহ খলীল (একান্ত বন্ধু) বানিয়েছেন। সুতরাং তারা সবাই ইবরাহীম আলাইহিস সালামের কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযুক্ত নই। তিনি তাঁর কৃত অপরাধের কথা স্মরণ করে, তাঁর প্রভুর কাছে যে লজ্জিত সে কথা বলবেন। তিনি আরো বলবেনঃ বরং তোমরা মূসা আলাইহিস সালামের কাছে যাও। তিনি আল্লাহর এমন এক বান্দা, আল্লাহ্তা’আলা স্বয়ং তাঁর সাথে কথা বলেছেন এবং তাওরাত কিতাব দান করেছেন।
রাসূলুল্লাহ্(সা) বলেনঃ সবাই তখন মূসা আলাইহিস সালামের কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযুক্ত নই। তিনি তাঁর কৃত অপরাধের কথা স্মরণ করে, তাঁর প্রভুর নিকট যে লজ্জিত সে কথা বলবেন এবং বলবেন, তোমরা বরং আল্লাহর বান্দাহ্এবং তাঁর কালেমা ও রুহ্ঈসা আলাইহিস সালামের কাছে যাও। অতঃপর তারা সবাই আল্লাহর রুহ ও কালেমা ঈসার (আ) কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযুক্ত নই। তোমরা বরং মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যাও। তিনি আল্লাহর এমন এক বান্দার আগের ও পরের সব গুণাহ মাফ করে দেয়া হয়েছে।
রাবী (আনাস রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তারা আমার কাছে আসবে। তখন আমি আমার রবের কাছে হাজির হওয়ার অনুমতি প্রাথর্না করবো। আমাকে তাঁর কাছে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। যখন আমি তাঁকে দেখতে পাব তখনই তাঁর সামনে সিজ্দায় লুটে পড়বো। আল্লাহ যতক্ষণ চাইবেন আমাকে ততক্ষণ এ অবস্থায় রাখবেন। তারপর বলবেনঃ হে মুহাম্মাদ, মাথা উঠাও! আর বলো তোমার কথা শুনা হবে। আর প্রাথর্না করো, যা চাইবে তা দেয়া হবে, এবং তুমি সুপারিশ করো, কবুল করা হবে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তখন আমি মাথা উঠাবো এবং আমার রবের এমন বাক্যে প্রশংসা করবো, যা আমার মাহাপরাক্রমশালী প্রভু আমাকে শিখিয়ে দেবেন। অতঃপর আমি শাফায়াত করবো। কিন্তু এ ব্যাপারে আমাকে একটি সীমা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। তখন আমি গিয়ে তাদেরকে দোযখ থেকে বের করে বেহেশ্তে প্রবেশ করাবো।
তারপুর আমি ফিরে এসে পুনরায় সিজদায় লুটে পড়বো। আর আল্লাহ যতক্ষণ চাইবেন ততক্ষণ আমাকে এ অবস্থায় রাখবেন। অতঃপর বলবেনঃ হে মুহাম্মাদ (সা) মাথা তোল, আর বলো, তোমার কথা শুনা হবে। প্রাথর্না করো যা চাইবে তা দেয়া হবে। সুপারিশ করো, তা কবুল করা হবে। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেনঃ অতঃপর আমি মাথা উঠাবো এবং এমন বাক্যে আমার রবের প্রশংসা করবো, যা তিনি আমাকে শিখিয়ে দেবেন। তারপর আমি সুপারিশ করবো, তবে এ ব্যাপারে আমাকে একটি সীমা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। অতঃপর আমি তাদেরকে দোযখ থেকে বের করে বেহেশ্তে প্রবেশ করিয়ে দেব।
আনাস (রা) বলেন, আমার জানা নেই রাসূলুল্লাহ্(সা) তৃতীয় অথবা চতুর্থবারে বলেছেনঃ এর পর আমি বলবো, হে আমার প্রভু, কুরআন যাদেরকে আটকিয়ে রেখেছে অর্থাৎ কুরআনের ঘোষণা অনুযায়ী যাদের জন্যে চিরস্থায়ী দোযখ বাস নির্ধারিত হয়ে গেছে তারা ব্যতীত আর কেউই দোযখে অবশিষ্ট নেই। ইবনে উবাঈদ বলেন, তাঁর বণর্নায় বলেছেন, কাতাদা বলেছেন, তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামে পড়ে থাকবে।
সূত্র :
সহিহ মুসলিম :: খন্ড ১ :: কিতাবুল ঈমান অধ্যায় :: হাদিস ৩৭৩
STA-2.122
নবী (সা) বলেনঃ তারা আদম আলাইহিস সালামের কাছে গিয়ে বলবে আপনি আদম-সব মানুষের পিতা, আল্লাহ নিজ হাতে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন, আপনার মধ্যে স্বীয় রুহ ফুঁকে দিয়েছেন এবং ফিরিশতাদের নির্দেশ দিলে তারা সকলে আজনাকে সিজদা করেছে। আপনি আমাদের জন্যে আপনার রবের কাছে সুফারিশ করুন। তাহলো তিনি আমাদেরকে এই কষ্টদায়ক স্থান থেকে মুক্ত করে আরাম দান করবেন। তখন আদম (আ) বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযুক্ত নই। তিনি (নিষিদ্ধ গাছের ফল খাওয়ায়) নিজের কৃত অপরাধের কথা উল্লেখ করবেন এবং তিনি যে এ জন্যে তাঁর রবের কাছে লজ্জিত তাও বলবেন। তিনি আরো বলবেনঃ বরং তোমরা পৃথিবীবাসীর জন্যে প্রেরিত আল্লাহর সব প্রথম নবী নূহ্আলাইহিস সাল্লামের কাছে যাও।
রাসূলুল্লাহ্(সা) বলেনঃ সুতরাং তারা সবাই নূহ্ আলাইহিস সাল্লামের কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযুক্ত নই। তিনি সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কৃত অপরাধের কথা স্মরণ করবেন যা তিনি করেছিলেন। এতে তিনি যে তাঁর রবের কাছে লজ্জিত সে কাথাও বলবেন। আর বলবেনঃ তোমরা ইব্রাহীম আরঅইহিস সালামের কাছে যাও। তিনি এমন এক ব্যক্তি যাকে আল্লাহ খলীল (একান্ত বন্ধু) বানিয়েছেন। সুতরাং তারা সবাই ইবরাহীম আলাইহিস সালামের কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযুক্ত নই। তিনি তাঁর কৃত অপরাধের কথা স্মরণ করে, তাঁর প্রভুর কাছে যে লজ্জিত সে কথা বলবেন। তিনি আরো বলবেনঃ বরং তোমরা মূসা আলাইহিস সালামের কাছে যাও। তিনি আল্লাহর এমন এক বান্দা, আল্লাহ্তা’আলা স্বয়ং তাঁর সাথে কথা বলেছেন এবং তাওরাত কিতাব দান করেছেন।
রাসূলুল্লাহ্(সা) বলেনঃ সবাই তখন মূসা আলাইহিস সালামের কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযুক্ত নই। তিনি তাঁর কৃত অপরাধের কথা স্মরণ করে, তাঁর প্রভুর নিকট যে লজ্জিত সে কথা বলবেন এবং বলবেন, তোমরা বরং আল্লাহর বান্দাহ্এবং তাঁর কালেমা ও রুহ্ঈসা আলাইহিস সালামের কাছে যাও। অতঃপর তারা সবাই আল্লাহর রুহ ও কালেমা ঈসার (আ) কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযুক্ত নই। তোমরা বরং মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যাও। তিনি আল্লাহর এমন এক বান্দার আগের ও পরের সব গুণাহ মাফ করে দেয়া হয়েছে।
রাবী (আনাস রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তারা আমার কাছে আসবে। তখন আমি আমার রবের কাছে হাজির হওয়ার অনুমতি প্রাথর্না করবো। আমাকে তাঁর কাছে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। যখন আমি তাঁকে দেখতে পাব তখনই তাঁর সামনে সিজ্দায় লুটে পড়বো। আল্লাহ যতক্ষণ চাইবেন আমাকে ততক্ষণ এ অবস্থায় রাখবেন। তারপর বলবেনঃ হে মুহাম্মাদ, মাথা উঠাও! আর বলো তোমার কথা শুনা হবে। আর প্রাথর্না করো, যা চাইবে তা দেয়া হবে, এবং তুমি সুপারিশ করো, কবুল করা হবে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তখন আমি মাথা উঠাবো এবং আমার রবের এমন বাক্যে প্রশংসা করবো, যা আমার মাহাপরাক্রমশালী প্রভু আমাকে শিখিয়ে দেবেন। অতঃপর আমি শাফায়াত করবো। কিন্তু এ ব্যাপারে আমাকে একটি সীমা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। তখন আমি গিয়ে তাদেরকে দোযখ থেকে বের করে বেহেশ্তে প্রবেশ করাবো।
তারপুর আমি ফিরে এসে পুনরায় সিজদায় লুটে পড়বো। আর আল্লাহ যতক্ষণ চাইবেন ততক্ষণ আমাকে এ অবস্থায় রাখবেন। অতঃপর বলবেনঃ হে মুহাম্মাদ (সা) মাথা তোল, আর বলো, তোমার কথা শুনা হবে। প্রাথর্না করো যা চাইবে তা দেয়া হবে। সুপারিশ করো, তা কবুল করা হবে। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেনঃ অতঃপর আমি মাথা উঠাবো এবং এমন বাক্যে আমার রবের প্রশংসা করবো, যা তিনি আমাকে শিখিয়ে দেবেন। তারপর আমি সুপারিশ করবো, তবে এ ব্যাপারে আমাকে একটি সীমা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। অতঃপর আমি তাদেরকে দোযখ থেকে বের করে বেহেশ্তে প্রবেশ করিয়ে দেব।
আনাস (রা) বলেন, আমার জানা নেই রাসূলুল্লাহ্(সা) তৃতীয় অথবা চতুর্থবারে বলেছেনঃ এর পর আমি বলবো, হে আমার প্রভু, কুরআন যাদেরকে আটকিয়ে রেখেছে অর্থাৎ কুরআনের ঘোষণা অনুযায়ী যাদের জন্যে চিরস্থায়ী দোযখ বাস নির্ধারিত হয়ে গেছে তারা ব্যতীত আর কেউই দোযখে অবশিষ্ট নেই। ইবনে উবাঈদ বলেন, তাঁর বণর্নায় বলেছেন, কাতাদা বলেছেন, তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামে পড়ে থাকবে।
সূত্র :
সহিহ মুসলিম :: খন্ড ১ :: কিতাবুল ঈমান অধ্যায় :: হাদিস ৩৭৩
STA-2.122
© 2013 by Ask Islam Bangla.