ASK ISLAM BANGLA
  • Home
  • রচনাবলী
  • সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর
  • ইসলামি সাধারণ জ্ঞান
  • ইসলাম বিরোধী প্রশ্নের জবাব
  • ইসলামের সেই কাহিনীগুলো
  • সাহাবীদের কাহিনী
  • গল্পে গল্পে শিখী
  • ROAD TO PEACE
  • Forum

প্রশ্ন ৫৫ --> বিয়ের পর স্বামী ও পিতামাতার মধ্যে কার আনুগত্য প্রাধান্য পাবে?

উত্তর :

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

কুরআন-সুন্নাহ থেকে এ কথা পরিষ্কার যে, স্বামী তার স্ত্রীর কাছে ভালো ব্যবহার এবং আনুগত্যের হক্বদার এবং এটা স্ত্রীর নিজের পিতা-মাতা-ভাই-বোনের চেয়ে অগ্রাধিকার পাবে। আল্লাহ্‌ বলেনঃ

"পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগত এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।" (সূরা নিসাঃ ৩৪)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ "কোন নারীর জন্য বৈধ নয় তার স্বামী উপস্থিত থাকাকালে তার অনুমতি ব্যতীত সিয়াম পালন, এবং স্বামীর অনুমতি ব্যতীত কাউকে ঘরে প্রবেশ করতে দেওয়া।" ( বুখারীঃ ৪৮৯৯)

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ “যখন নারী তার পাঁচ ওয়াক্তের সালাত আদায় করবে; তার (রমযান) মাসের সাওম পালন করবে; তার লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে এবং তার স্বামীর আনুগত্য করবে, তখন তাকে বলা হবে: তুমি জান্নাতের যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা কর, সে দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবশে কর।” (মুসনাদে আহমাদ ১৬৬১)

আব্দুল্লাহ ইবনে আবি আওফা (রা) বলেনঃ যখন মুয়ায (রা) সিরিয়া থেকে ফিরলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সিজদাহ করলেন। রাসূল (সা) প্রশ্ন করলেন-"একী করছ মুয়ায?" মুয়ায বললেনঃ "আমি সিরিয়ায় গিয়ে তাদের দেখেছি লোকেরা তাদের ধর্মগুরুদের সিজদাহ করে।" রাসূল (সা) বললেনঃ " কখনোই অমনটি করবে না। যদি আল্লাহ্‌ ব্যতীত কাউকে সিজদাহর অনুমতি থাকত, আমি নারীদের আদেশ করতাম স্বামীকে সিজদাহ করতে। শপথ সেই আল্লাহ্‌র যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! কোন নারী আল্লাহ্‌র প্রতি তার কর্তব্য পূর্ণ করতে পারে না যতক্ষণ না সে স্বামীর প্রতি কর্তব্য পূর্ণ করে। এমনকি উটে আরোহরণরত অবস্থায়ও যদি স্বামী তার সঙ্গ উপভোগের আকাঙ্ক্ষা করে, তবু স্ত্রীর উচিত তার চাহিদা পূর্ণ করা।" (ইবনে মাজাহঃ ১৮৫৩)

আল হুসাইন ইবনে মুহসীন (রা) থেকে বর্ণিত যে তাঁর চাচী (বা ফুপু) একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে কোন একটি ব্যাপারে আসলেন এবং তাঁর সে প্রয়োজনের কথা ব্যক্ত করলেন। রাসূল (সা) প্রশ্ন করলেনঃ "তোমার কি স্বামী রয়েছে?" মহিলা বললেনঃ "হ্যাঁ আছে।" রাসূল (সা) বললেনঃ "তুমি তার সাথে কীরূপ আচরণ কর?" মহিলা বললেন, "আমি নিতান্ত অক্ষম না হলে তার কোন অধিকার পূর্ণ করা থেকে বিরত থাকিনা।" রাসূল (সা) এরপর বললেন, "স্বামীর প্রতি নিজের কর্তব্য সম্পর্কে খেয়াল রেখ, কারণ সে ই তোমার জান্নাত এবং জাহান্নাম।" অর্থাৎ স্বামীর প্রতি দায়িত্ব পালন জান্নাতে যাবার কারণ হবে এবং এর অন্যথা জাহান্নামে যাবার কারণ হবে। (আহমাদ-১৯০২৫)

তিনি আরো বলেনঃ "কোন নারী যদি এরূপ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে যে তার স্বামী তার ওপর সন্তুষ্ট, তবে সে নারী জান্নাতে প্রবেশ করবে।" (তিরমিযী)

যদি স্বামী এবং পিতামাতার আদেশপালন কোনক্ষেত্রে সাংঘর্ষিক হয়, তবে স্বামীর নির্দেশ মানা অগ্রাধিকার পাবে। একজন মহিলা, যার স্বামী বর্তমান ছিল এবং অসুস্থ মা ছিল তার ব্যাপারে ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছিলেন, "মায়ের সেবা করার চেয়ে তার জন্য স্বামীর আনুগত্য করা অধিকতর জরুরি, যদি না সে অনুমতি দিয়ে থাকে।" (শারহ মুনতাহা আল ইরাদাত, ৩/৪৭)

আল ইনসাফ গ্রন্থে তিনি উল্লেখ করেন, "একজন নারীর জন্য বৈধ নয় স্বামীকে বাদ দিয়ে পিতামাতার আনুগত্য, বরং স্বামীর আনুগত্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ।"

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ) কে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল একজন বিবাহিত মহিলা, যে পিতামাতার কাছে থাকে না, তার জন্য পিতামাতা নাকি স্বামী-কার আনুগত্য অধিক শ্রেয়?

তিনি উত্তর দেনঃ "বিয়ের পর স্বামীর কর্তৃত্ব পিতামাতার ওপর স্থান পায় এবং তার আনুগত্য করা নারীর জন্য ফরয।"

তবে উল্লেখ্য, যদি পিতামাতার আদেশ আল্লাহ্‌র আদেশের সাথে মিলে যায় এবং স্বামীর আদেশ আল্লাহ্‌র আদেশের বিপরীতে যায়, তবে অবশ্যই আল্লাহ্‌র আদেশকে প্রাধান্য দিতে হবে। যেমন পিতামাতা বললেন পাঁচওয়াক্ত সালাত আদায় করতে কিন্তু স্বামী তাতে নিষেধ করল, তবে স্বামীর আদেশ উপেক্ষা করে সালাত আদায় করতে হবে। এটা এজন্য নয় যে স্বামীর ওপরে পিতামাতার আদেশকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, বরং এজন্য যে আল্লাহ্‌র আদেশের স্থান সবার ওপরে।

এবং আল্লাহ্‌ই সবচেয়ে ভালো জানেন।

অনুবাদ: জুবায়ের হোসেন 

মূলঃ IslamQA

IslamQA


STA-44.165
site search by freefind advanced

© 2014 by Ask Islam Bangla.
Powered by Create your own unique website with customizable templates.