প্রশ্ন ২২ --> আত্মহত্যাকারী,ফাসেক,ইসলামি রাষ্ট্রদ্রোহী, ডাকাত ইত্যাদি ব্যক্তিদের জানাযা সম্পর্কে জানতে চাই ?
উত্তর :
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
আত্মহত্যাকারীর জানাযা:
আত্মহত্যা মহা পাপ। তবে যদি কেউ আত্মহত্যা করে, যেহেতু মুসলমান তাই তার জানাযার নামায পড়তে হবে। তবে সমাজের মানুষকে আত্মহত্যার মত জঘন্য কাজ থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে কোন সধারণ লোকের দ্বারা তার জানাযার নামাযে ইমামতি করাবে। বিশিষ্ট কারো দ্বারা নয়। এমন লোক ইমামতির জন্য না পাওয়া গেলে যাকে পাওয়া যায়, তার দ্বারাই নামায পড়াতে হবে। জানাযা বিহীন দাফন করলে সকলেই গুনাহগার হবে।
ফাসিকদের জানাযা :
যারা শরীয়তের হুকুম আহকাম বিশ্বাস করে অথচ আমল করে না, এরূপ মুমিনদেরকে ফাসিক বলা হয়। ফাসিক, বিদআতী, গোনাহগারদের জানাযা আদায় করতে হবে। উত্তম হলো সাধারণ কোন লোক দ্বারা তার জানাযা পড়াবে, আর এরূপ না পাওয়া গেলে যাকে পাওয়া যায়, তার দ্বারাই জানাযা পড়াতে হবে। জানাযা না দিয়ে দাফন করলে সকলেই গোনাহগার হবে।
কবরস্থ লাশের জানাযা:
যে সমস্ত লাশের জানাযা আদায় করা ফরজে কেফায়া সে সমস্ত লাশ ভুলবশত: অথবা ইচ্ছাকৃত জানাযা ব্যতীত কবরে নামানোর পর মনে হলে, লাশ কবর থেকে বের করে, গোসল না দিয়ে থাকলে গোসল দিয়ে জানাযা আদায় করে দাফন করবে। অন্যথায় গোনাহ হবে। আর যদি দাফনের কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে, তাহলে পুনরায় কবর খনন করে লাশ বের করার অনুমতি নেই। এমতাবস্থায় কবরস্থ অবস্থায় জানাযা পড়তে হবে। কোন কোন কিতাবে কবরে জানাযা পড়ার সময়কাল তিনদিন বলা হয়েছে। কিন্তু সঠিক মতানুসারে লাশ ফেটে যাওয়ার ধারণা প্রবল হলে জানাযা নেই; অন্যথায় জানাযা দিতে হবে, যতদিনই হোক।( বুখারী , মুসলিম, নাসায়ী, মুসনাদে আহমাদ , মুস্তাদরাক, ইবনে মাজা, তাহাভী, বায়হাকী এবং ইবনে হাব্বান, যায়েদ ইবনে ছাবিত, আনাস, সুহাইল, আবু হুরাইরা এবং উবাদার হাদীসে এর প্রমাণ বিদ্যমান রয়েছে। )
মাতাপিতা হত্যকারীদের জানাযা:
মাতাপিতা হত্যকারীকে ইসলামী শরীয়ত অনুসারে ক্বেসাস হত্যা করা হলে তার জানাযা নেই। তবে যদি ক্বেসাস বিহীন মৃত্যুবরণ করে, তাহলে তার জানাযা পড়তে হবে। জানাযা না পড়ার হুকুম অন্যদেরকে সতর্ক করা এবং লাশের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন স্বরূপ; কেননা মাতা পিতাকে হত্যা করা মহাপাপ।
রাষ্ট্রদ্রোহীর জানাযা:
ন্যায় বিচারক, মুসলমান কর্তৃক নির্বাচিত রাষ্ট্র ও রাষ্ট্র প্রধানের বিরুদ্ধাচরণকারী যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ করলে তার জানাযা নেই। কিন্তু যুদ্ধের ময়দানে মৃত্যুবরণ না করলে অথবা গ্রেফতার হওয়ার পর ইসলামী বিধান মোতাবেক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলে তার গোসল এবং জানাযা উভয়টি হতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, ইসলামী রাষ্ট্রের এই বিধান অন্যথায় নয়।
ডাকাত ও ছিনতাইকারীর জানাযা:
ডাকাত এবং ছিনতাইকারীরা ডাকাতি এবং ছিনতাইয়ের সময় সংঘর্ষ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে শাস্তি এবং অসম্মান প্রদর্শন স্বরূপ জানাযা নেই, কিন্তু যদি ঐ অবস্থায় মৃত্যুবরণ না করে পরবর্তী সময় রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে তাকে হত্যা করা হয়, অথবা স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করে, তাহলে তার গোসল এবং জানাযা উভয়টিই হতে হবে।
সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের মৃতের জানাযা:
সাম্প্রদায়িক ঝগড়া বিবাদে জুলুম অত্যাচারের সময় চাই সরাসরি অংশগ্রহণ করুক অথবা সাহায্যকারী হোক, মৃত্যুবরণ করলে তাদের জানাযা নেই, অবশ্য সংঘর্ষের অবস্থায় মৃত্যুবরণ না করলে পরবর্তী সময় ইসলামী রাষ্ট্রের নির্দেশে তাদেরকে হত্যা করা হলে অথবা স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করলে তাদের জানাযা আদায় করতে হবে। যারা অস্ত্রে সজ্জিত সন্ত্রাসী তাদের হুকুমও অনুরূপ।
লাশের অংশবিশেষের জানাযা:
মাথাবিহীন অর্ধদেহ প্রসবের পর মৃত্যুবরণ করলে, অথবা সম্পূর্ণ মৃত্যু প্রসব হলে, কিংবা দাফনের পর দাফনকৃত লাশের কিছু অংশ পাওয়া গেলে জানাযার প্রয়োজন নেই।( তিরমিযী, মুস্তাদরাক, ইবনে মাজা, বায়হাকী, দারামী, তাহাভী, ইবনে আবী শায়বা, নাসায়ী, ইবনে হাব্বান, ইবনে আদী এবং বুখারীতে হযরত আলী, জাবির এবং ইবনে আব্বাসের হাদীসে এর সমর্থন বিদ্যমান রয়েছে।) যদি মৃত অসম্পূর্ণ সন্তান প্রসব করে তার হুকুমও অনুরুপ। গোসল, জানাযা, সুন্নতী কাফন, কোন কিছুই প্রয়োজন নেই।
পঁচা-গলা লাশের জানাযা:
পঁচা-কাটা দুর্গন্ধ, লাশ আগুনে পোড়া ছাই, গোস্ত বিহীন কংকাল ইত্যাদির জানাযা নেই।
জানাযার অনুপযুক্ত লাশ:
সূত্র: কাফন-দাফনের মাসআলা-মাসাইল,মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান দা. বা.
STA-13.35
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
আত্মহত্যাকারীর জানাযা:
আত্মহত্যা মহা পাপ। তবে যদি কেউ আত্মহত্যা করে, যেহেতু মুসলমান তাই তার জানাযার নামায পড়তে হবে। তবে সমাজের মানুষকে আত্মহত্যার মত জঘন্য কাজ থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে কোন সধারণ লোকের দ্বারা তার জানাযার নামাযে ইমামতি করাবে। বিশিষ্ট কারো দ্বারা নয়। এমন লোক ইমামতির জন্য না পাওয়া গেলে যাকে পাওয়া যায়, তার দ্বারাই নামায পড়াতে হবে। জানাযা বিহীন দাফন করলে সকলেই গুনাহগার হবে।
ফাসিকদের জানাযা :
যারা শরীয়তের হুকুম আহকাম বিশ্বাস করে অথচ আমল করে না, এরূপ মুমিনদেরকে ফাসিক বলা হয়। ফাসিক, বিদআতী, গোনাহগারদের জানাযা আদায় করতে হবে। উত্তম হলো সাধারণ কোন লোক দ্বারা তার জানাযা পড়াবে, আর এরূপ না পাওয়া গেলে যাকে পাওয়া যায়, তার দ্বারাই জানাযা পড়াতে হবে। জানাযা না দিয়ে দাফন করলে সকলেই গোনাহগার হবে।
কবরস্থ লাশের জানাযা:
যে সমস্ত লাশের জানাযা আদায় করা ফরজে কেফায়া সে সমস্ত লাশ ভুলবশত: অথবা ইচ্ছাকৃত জানাযা ব্যতীত কবরে নামানোর পর মনে হলে, লাশ কবর থেকে বের করে, গোসল না দিয়ে থাকলে গোসল দিয়ে জানাযা আদায় করে দাফন করবে। অন্যথায় গোনাহ হবে। আর যদি দাফনের কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে, তাহলে পুনরায় কবর খনন করে লাশ বের করার অনুমতি নেই। এমতাবস্থায় কবরস্থ অবস্থায় জানাযা পড়তে হবে। কোন কোন কিতাবে কবরে জানাযা পড়ার সময়কাল তিনদিন বলা হয়েছে। কিন্তু সঠিক মতানুসারে লাশ ফেটে যাওয়ার ধারণা প্রবল হলে জানাযা নেই; অন্যথায় জানাযা দিতে হবে, যতদিনই হোক।( বুখারী , মুসলিম, নাসায়ী, মুসনাদে আহমাদ , মুস্তাদরাক, ইবনে মাজা, তাহাভী, বায়হাকী এবং ইবনে হাব্বান, যায়েদ ইবনে ছাবিত, আনাস, সুহাইল, আবু হুরাইরা এবং উবাদার হাদীসে এর প্রমাণ বিদ্যমান রয়েছে। )
মাতাপিতা হত্যকারীদের জানাযা:
মাতাপিতা হত্যকারীকে ইসলামী শরীয়ত অনুসারে ক্বেসাস হত্যা করা হলে তার জানাযা নেই। তবে যদি ক্বেসাস বিহীন মৃত্যুবরণ করে, তাহলে তার জানাযা পড়তে হবে। জানাযা না পড়ার হুকুম অন্যদেরকে সতর্ক করা এবং লাশের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন স্বরূপ; কেননা মাতা পিতাকে হত্যা করা মহাপাপ।
রাষ্ট্রদ্রোহীর জানাযা:
ন্যায় বিচারক, মুসলমান কর্তৃক নির্বাচিত রাষ্ট্র ও রাষ্ট্র প্রধানের বিরুদ্ধাচরণকারী যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ করলে তার জানাযা নেই। কিন্তু যুদ্ধের ময়দানে মৃত্যুবরণ না করলে অথবা গ্রেফতার হওয়ার পর ইসলামী বিধান মোতাবেক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলে তার গোসল এবং জানাযা উভয়টি হতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, ইসলামী রাষ্ট্রের এই বিধান অন্যথায় নয়।
ডাকাত ও ছিনতাইকারীর জানাযা:
ডাকাত এবং ছিনতাইকারীরা ডাকাতি এবং ছিনতাইয়ের সময় সংঘর্ষ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে শাস্তি এবং অসম্মান প্রদর্শন স্বরূপ জানাযা নেই, কিন্তু যদি ঐ অবস্থায় মৃত্যুবরণ না করে পরবর্তী সময় রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে তাকে হত্যা করা হয়, অথবা স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করে, তাহলে তার গোসল এবং জানাযা উভয়টিই হতে হবে।
সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের মৃতের জানাযা:
সাম্প্রদায়িক ঝগড়া বিবাদে জুলুম অত্যাচারের সময় চাই সরাসরি অংশগ্রহণ করুক অথবা সাহায্যকারী হোক, মৃত্যুবরণ করলে তাদের জানাযা নেই, অবশ্য সংঘর্ষের অবস্থায় মৃত্যুবরণ না করলে পরবর্তী সময় ইসলামী রাষ্ট্রের নির্দেশে তাদেরকে হত্যা করা হলে অথবা স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করলে তাদের জানাযা আদায় করতে হবে। যারা অস্ত্রে সজ্জিত সন্ত্রাসী তাদের হুকুমও অনুরূপ।
লাশের অংশবিশেষের জানাযা:
মাথাবিহীন অর্ধদেহ প্রসবের পর মৃত্যুবরণ করলে, অথবা সম্পূর্ণ মৃত্যু প্রসব হলে, কিংবা দাফনের পর দাফনকৃত লাশের কিছু অংশ পাওয়া গেলে জানাযার প্রয়োজন নেই।( তিরমিযী, মুস্তাদরাক, ইবনে মাজা, বায়হাকী, দারামী, তাহাভী, ইবনে আবী শায়বা, নাসায়ী, ইবনে হাব্বান, ইবনে আদী এবং বুখারীতে হযরত আলী, জাবির এবং ইবনে আব্বাসের হাদীসে এর সমর্থন বিদ্যমান রয়েছে।) যদি মৃত অসম্পূর্ণ সন্তান প্রসব করে তার হুকুমও অনুরুপ। গোসল, জানাযা, সুন্নতী কাফন, কোন কিছুই প্রয়োজন নেই।
পঁচা-গলা লাশের জানাযা:
পঁচা-কাটা দুর্গন্ধ, লাশ আগুনে পোড়া ছাই, গোস্ত বিহীন কংকাল ইত্যাদির জানাযা নেই।
জানাযার অনুপযুক্ত লাশ:
- ইহুদী, নাসারা, মুশরিক অর্থাৎ সমস্ত বিধর্মী কাফেরদের জানাযা নেই, নাস্তিক এবং মুরতাদেরও জানাযা জায়েয নেই। এরূপ জানাযায় শরীক হওয়া কঠোর গোনাহ এবং জঘন্য অপরাধ।
- হাকীকী অথবা হুকমী নাপাকসহ বিনা গোসল অথবা বিনা তায়াম্মুমকে জানাযার নামায দুরুস্ত নয়। অবশ্য গোসলের পর লাশ থেকে নির্গত নাপাকী কাফনে লেগে গেলেও জানাযা পড়বে, এই নাপাকি নামাযের জন্য বাধা নয়।
- সতর না ঢেকে নাপাক খাটলীর উপর লোকের হাতে অথবা কাঁধে রেখে, মাটিকে না রেখে গাড়ীর উপর রেখে নামাযে জানাযা দুরুস্ত নয়।
সূত্র: কাফন-দাফনের মাসআলা-মাসাইল,মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান দা. বা.
STA-13.35
© 2013 by Ask Islam Bangla.