ASK ISLAM BANGLA
  • Home
  • রচনাবলী
  • সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর
  • ইসলামি সাধারণ জ্ঞান
  • ইসলাম বিরোধী প্রশ্নের জবাব
  • ইসলামের সেই কাহিনীগুলো
  • সাহাবীদের কাহিনী
  • গল্পে গল্পে শিখী
  • ROAD TO PEACE
  • Forum

প্রশ্ন ৪৫ --> অমুসলিমদের সাথে সবসময় মেলামেশা এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব করা কি জায়েজ?

উত্তর :

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

প্রথম কথা হল বন্ধু বলতে আমরা কি বুঝি । একজন মুমিনের নিকট সেই প্রকৃত বন্ধু যে তাকে টেনে হিচড়ে জান্নাতে নিতে চায় ও জাহান্নামে যাবার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় । 
আল্লাহ বলেন-
• তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ তাঁর রসূল এবং মুমিনবৃন্দ-যারা নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং বিনম্র। (আল মায়িদা: 55)

বন্ধুত্ব করার ব্যপারে সামগ্রিক ভাবে নিষেধজ্ঞা নিয়ে আয়াত হল । যা দিয়ে অনেকে বলেন যে সকল অমুসলিমের সাথে বন্ধুত্ব হারাম ।

• হে ঈমানদারগণ! তোমরা মুমিন ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না, তারা তোমাদের অমঙ্গল সাধনে কোন ক্রটি করে না-তোমরা কষ্টে থাক, তাতেই তাদের আনন্দ। শত্রুতাপ্রসুত বিদ্বেষ তাদের মুখেই ফুটে বেরোয়। আর যা কিছু তাদের মনে লুকিয়ে রয়েছে, তা আরো অনেকগুণ বেশী জঘন্য। তোমাদের জন্যে নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করে দেয়া হলো, যদি তোমরা তা অনুধাবন করতে সমর্থ হও। (আলে ইমরান: 118)

• হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। (আল মায়িদা: 51)

• মুমিনগণ, আল্লাহ যে জাতির প্রতি রুষ্ট, তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো না। তারা পরকাল সম্পর্কে নিরাশ হয়ে গেছে যেমন কবরস্থ কাফেররা নিরাশ হয়ে গেছে। (সূরা মুমতাহানা: 13)

তবে এটি কি পৃথিবীর সকল অমুসলিমের জন্য সর্বদা প্রযোজ্য ? অবশ্যই ‪#‎না‬ ! আয়াতগুলো মূলত রাষ্ট্রীয় বন্ধুত্বের জন্যই প্রযোজ্য ।

আল্লাহ বলেন-
• ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালবাসেন। আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেছে এবং বহিস্কারকার্যে সহায়তা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে তারাই জালেম। (সূরা মুমতাহানা: ৮-৯) 

অর্থাৎ তাদের সাথে বন্ধুত্ব করা যাবে না যে ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে , কাজ করে সর্বদা ।

• হে মুমিনগণ, আহলে কিতাবদের মধ্য থেকে যারা তোমাদের ধর্মকে উপহাস ও খেলা মনে করে, তাদেরকে এবং অন্যান্য কাফেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না। আল্লাহকে ভয় কর, যদি তোমরা ঈমানদার হও। (আল মায়িদা: 57)

অর্থাৎ যে ইসলামকে নিয়ে উপহাস করে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করা যাবে না ।

• তারা চায় যে, তারা যেমন কাফের, তোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাও, যাতে তোমরা এবং তারা সব সমান হয়ে যাও। অতএব, তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। (আন নিসা: 89)

আজকাল এমন অনেকেই আছে যারা নাস্তিক হইছে ও চায় অন্যরাও তাদের মত ইসলাম ত্যাগ করে নাস্তিক হোক । তাদের সাথেও বন্ধুত্ব করার সুযোগ নেই । 

• হে ঈমানদারগণ! তোমরা কাফেরদেরকে বন্ধু বানিও না মুসলমানদের বাদ দিয়ে। তোমরা কি এমনটি করে নিজের উপর আল্লাহর প্রকাশ্য দলীল কায়েম করে দেবে? (আন নিসা: 144)

• যারা মুসলমানদের বর্জন করে কাফেরদেরকে নিজেদের বন্ধু বানিয়ে নেয় এবং তাদেরই কাছে সম্মান প্রত্যাশা করে, অথচ যাবতীয় সম্মান শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য। (আন নিসা : 139)

আমরা অনেককে দেখি পার্থিব সুবিধার জন্য মুসলিমকে ত্যাগ করে অমুসলিম সঙ্গী নেয় যা অবশ্যই নিষেধ । 

এবং নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেও যারা উপরোক্ত শ্রেণীর মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করে তাদের পরিমাণ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন -
• আপনি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করেননি, যারা আল্লাহর গযবে নিপতিত সম্প্রদায়ের সাথে বন্ধুত্ব করে? তারা মুসলমানদের দলভুক্ত নয় এবং তাদেরও দলভূক্ত নয়। তারা জেনেশুনে মিথ্যা বিষয়ে শপথ করে। (আল মুযাদিলা: 14)

• আপনি তাদের অনেককে দেখবেন, কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করে। তারা নিজেদের জন্য যা পাঠিয়েছে তা অবশ্যই মন্দ। তা এই যে, তাদের প্রতি আল্লাহ ক্রোধান্বিত হয়েছেন এবং তারা চিরকাল আযাবে থাকবে। (আল মায়িদা: 80)

• যদি তারা আল্লাহর প্রতি ও রসূলের প্রতি অবতীর্ণ বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করত, তবে কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করত না। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকেই দুরাচার। (আল মায়িদা: 81)

বন্ধুত্বের ব্যাপারে দৃঢ় ঈমানদার সাহাবীদের ঘটনা আমরা পাই-

# হযরত উবাদা ইবনে সাবীত (রা) রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলেন: বহু ইহুদীর সাথে আমার বন্ধুত্ব আছে কিন্তু আমি তা ভেঙ্গে দিলাম। আল্লাহ ও রাসূলের বন্ধুত্বই আমার জন্য যথেষ্ট। তখন ওই মুনাফিক বলল: আগা পিছা চিন্তা করা আমার অভ্যাস। আমার দ্বারা এটা হতে পারে না। বলা যায় না কখন কি হয়। তখন রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, হে আবদুল্লাহ তুমি উবাদা হতে খুবই নিম্ন স্তরে নেমে গেছ। ( ইবনে কাসির ৫:৫১ আয়াতের শানে নুযুল)

অর্থাৎ সামগ্রিক ভাবে আমরা বুঝলাম এমন অমুসলিমের সাথে বন্ধুত্ব বা মেলামেশা করা যাবে যে ইসলামকে কটাক্ষ করে না , উপহাস করে না , কটুক্তি করে না, মুসলিমকে দ্বীন হতে দূরে সরিয়ে নিতে চায় না । 

দুইজনের বন্ধুত্বের মধ্যে আসলে কি হয় ? একজনের দ্বারা অপরজন প্রভাবিত হয় অথবা দুইজনই দুইজনের দ্বারা প্রভাবিত হয় । অমুসলিমের সাথে বন্ধুত্ব করার সময় এটাই দেখতে হবে যেন আপনি কোন ভাবেই তার দ্বারা প্রভাবিত না হন । আপনার দ্বারা তাকে প্রভাবিত করতে হবে । যদি আপনার সেই বন্ধুর (অমুসলিম , ফাসেক ) দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দ্বীন হতে দূরে সরে যাওয়ার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনাও থাকে তবে ত সে আপনার বন্ধু না । শত্রু !

আপনার প্রধান কাজ হবে তাকে দ্বীনের পথে নিয়ে আসা যা সত্যই একটি কঠিন কাজ । আল্লাহ আপনার সহায় হোন ।

আল্লাহ আমাদের সকলকে হিদায়েত দিন ।

আরো পড়ুন :
Answering Christianity

On Islam 

Dawa Net

দেখুন ভিডিও :


STA-27.67
site search by freefind advanced

© 2013 by Ask Islam Bangla.
Powered by Create your own unique website with customizable templates.