ASK ISLAM BANGLA
  • Home
  • রচনাবলী
  • সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর
  • ইসলামি সাধারণ জ্ঞান
  • ইসলাম বিরোধী প্রশ্নের জবাব
  • ইসলামের সেই কাহিনীগুলো
  • সাহাবীদের কাহিনী
  • গল্পে গল্পে শিখী
  • ROAD TO PEACE
  • Forum

প্রশ্ন ৩৬ --> তাবলীগ জামায়াত

উত্তর :

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

তাবলীগ জামাত; দ্বীনের প্রচারের জন্য নিরলস পরিশ্রম করা একটি দল। তাবলীগি  জামাত; সমাজের সর্বস্তরের লোকেদের জন্য চেষ্টা করে যায়, তাও আবার নিজের টাকা  খরচ করে, যা অন্য কোনদের দেখিনি।

দ্বীনকে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে সহজে পৌঁছে দেবার জন্য মাওলানা ইলিয়াস  সাহেব এই পদ্ধতির প্রণয়ন করেন।সমালোচনার দৃষ্টিতে নয় বরং একটু গবেষণামূলক  দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবুন।

শ্রদ্ধেয় চার ইমামগণ দ্বীন সম্পর্কিত যাবতীয় মাসলা-মাসয়ালা সাধারণ মানুষ যাতে  সহজেই পেতে পারে সেই কারণে নিজেদের জীবনকে বিলিয়ে দিয়ে কঠোর সাধনার  মাধ্যমে কিতাব লিখে গিয়েছেন। কিন্তু উনাদের কেউই একথা বলেছেন কি যে, "আমার  মতামতই চূড়ান্ত, যারা আমার মতামতের উপরে থাকবে তারা নিজেদের আমার অনুসারী  বলেই পরিচয় দিবে"। কিন্তু তাদের মৃত্যুর পর মুসলিমদের নিজেদের মধ্যেই শুরু হয় দলীয় কোন্দল। দ্বীনের দাঈদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা, তারা দ্বীন প্রচারের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করতে করতে মারা গেলেন আর তাদের মৃত্যুর পর ভক্তরা জাহেলিয়াত যুগের লোকেদের  মত কার্যকলাপ শুরু করল। ঠিক একইভাবে মাওলানা ইলিয়াস সাহেবও গবেষণা করে  মনে করেছেন "যদি দ্বীন শিক্ষা নিতে হয় তবে তার জন্য দরকার পরিবেশ, আর সে জন্যই  তিনদিন বা চল্লিশ দিনের প্রস্তুতি।" কিন্তু শেষে ফলাফল অন্যদিকে মোড় নিয়েছে।

একবার ভাবুন আমরা দ্বীন শিক্ষার জন্য পুরো সপ্তাহে কোন দিনটায় সময় দিয়ে থাকি?  জুমুআর দিন। খতিব সাহেব গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা রাখেন যা পুরো সপ্তাহজুড়ে আমাদেরকে চার্জ  দেয়। অতটুকুই কি সবার জন্য যথেষ্ট? যথেষ্ট হত যদি প্রত্যেকে নিজেও ইসলামী চর্চায়  মনোনিবেশ করত। কিন্তু তা অসম্ভব। কেননা আমাদের দেশের মাত্র ৬৩%  লোক শিক্ষিত। আর অধিকাংশই শিক্ষিতরাই "জ্ঞান অর্জন ফরজ" বলতে শুধুমাত্র দুনিয়াবি জ্ঞানকেই মনে করে  থাকে। ফলশ্রুতিতে ধর্মীয় জ্ঞানের গোড়াপত্তন ঐ পরিবার থেকে হলেও তার আর বেড়ে  হয়ে উঠা হয় না। তাই ধর্ম হয়ে যায় জন্মসূত্রে পাওয়া একটি বিষয় মাত্র।

 এখন কথা হচ্ছে, এই আমজনতাকে ইস্তেঞ্জা, অজু, গোসল, নামাজ ইত্যাদি বিষয়  হাতেকলমে শিক্ষা নেবার জন্য কিছু সময় বের করে নেয়া অবশ্যই দরকার। মাওলানা  ইলিয়াস সাহেব হয়ত এরকম মন-মানসিকতা হতেই চিল্লা পদ্ধতির সূচনা করেন।

ভুলত্রুটি নিয়েই মানুষ, চাই সে স্বীকার করুক বা না করুক। মাওলানা ইলিয়াস সাহেবের  হয়ত এ বিষয়টি খেয়াল ছিল না যে, তার এ পদ্ধতিতে কোন একসময় জামাতবদ্ধ ঐ  লোকেরা সমাজ থেকে পৃথক হয়ে যাবে, তারা ঘড়ির কাটার মত এক কিতাব নিয়ে দিনের  পর দিন মসজিদে পড়ে থাকবে। আর পুরো ব্যাপারটিকে ফরজ মনে করে সারা জীবন  ইবাদাত হিসেবে পালন করতে থাকবে।

এবার একটু কল্পনায় ডুব দিন। ধরুন আপনি ও আপনার কয়েকজন বন্ধু মিলে সপ্তাহের  নির্দিষ্ট কয়েকটি দিনে দ্বীন শিক্ষার জন্য কোন আলেমের কাছে যান। এটা সবাই মেনে নিবে  যে, পদ্ধতিটি ইসলামে শরীয়াসম্মত। এবার চিল্লার সাথে এর তুলনা করা যাক। পার্থক্য কোথায়? জ্বী, হ্যাঁ। আপনি যা ভাবছেন তাই। আপনার ঐ দল আলেম সাহেবের কাছে শুধু  নির্দিষ্ট দিন নয় বরং নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সময় দ্বীন শিক্ষা করবে অতঃপর পরিবার  পরিজনের কাছে ফিরে আসবে। অন্যদিকে তাবলীগ জামাত পুরো দিনগুলিতে পরিবার পরিজন  থেকে পৃথক হয়ে মাসজিদে অবস্থান করবে। যা রাসুল সাঃ এর এই হাদিসের বিপরীত

#আনাস ইবনে মালিক রাযি. বলেন, ‘তিন ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের  ইবাদত সম্পর্কে জানার জন্য তাঁর স্ত্রীদের কাছে এল। তাদেরকে যখন এ ব্যাপারে অবগত  করানো হলো, তখন তারা  ভাবলেন যে, নবী আ.-এর আগে-পিছের সমস- গুনাহ মাফ।  তবুও তিনি এতো ইবাদত করেন! অথচ আমাদের গুনাহের কোন হিসাব নেই। তাহলে তো  আমাদের আরো বেশি ইবাদত করতে হবে। তাদের মধ্যে একজন বলল, ‘আমি আজীবন  রাতভর নামায পড়ব’। অন্যজন বলল, ‘আমি জীবনভর রোযা রাখব। কখনো  রোযা   ভাঙ্গব না’। তৃতীয়জন বলল,‘ আমি নারী সংসর্গ থেকে দূরে থাকব। কখনো বিয়ে করব না’। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের নিকট এলেন। তিনি বললেন,  ‘তোমরা এরূপ এরূপ কথা বলেছ! তাঁরা বলল, ‘জী হ্যাঁ, আমরা এমনটি বলেছি।রাসূলল্লাহ  সা. তাঁদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের মধ্যে অধিক আল্লাহ  ভীরু, অধিক তাকওয়াধারী। তবে আমি রোযা  রাখি ও রোযা  ভঙ্গ করি। নামায  পড়ি ও  নিদ্রা গমন করি এবং নারীকে বিবাহ করি। তাই যে ব্যক্তি আমার সুন্নত থেকে বিমুখ হবে,  সে আমার দলভুক্ত নয়’ (বুখারী)।

তাই এই পার্থক্যকে দূর করতে পারলেই চিল্লা নিয়ে আর কোন চিল্লাপাল্লা হবে না। জ্ঞান অর্জন ফরজ বলে তিন চিল্লা লাগানো যেমন ফরজ হয় না তেমনি মুসলিম ভাইয়ের উপর  ভাল ধারণা পোষণ করা ফরজ তাই বলে তাবলীগ জামাতের উপর ভালো ধারণা করা ফরজ এমন কথাও ভুল। তবে হ্যাঁ, ভুল বিষয়গুলোকে এড়িয়ে সঠিক বিষয়গুলোকে সাদরে গ্রহন করার  মন-মানসিকতা আমাদের সকলেরেই থাকা উচিত।

মাওলানা ইলিয়াস সাহেব নিজেই পীর ছিলেন কিনা বা অন্য কারো মুরিদ ছিলেন কিনা  সেটা কোন বড় কথা নয় বরং আসল কথা হচ্ছে তাবলীগ জামায়াতের সাথী ভাইয়েরা  পীর-মুরিদির সাথে জড়িত কিনা ? অনেকে হয়ত তাদের সাথে দেওবন্দি পীর সাহেবের  সম্পৃক্ততার কথা বলবেন। সে ক্ষেত্রে আমি বলব তারা অন্যদের চেয়ে একটু বেশি হলেও  প্রশংসার দাবি রাখে। কিতাবে যাই লেখা থাকুক না কেন কবর বা মাজার নিয়ে তাদের কোন বাড়াবাড়ি নেই। কারো ভিন্নমত থাকলে বলতে পারেন।

সবশেষে কয়েকটি বহুল আলোচিত বিষয় নিয়ে না বললেই নয়

১. একজন মুসলিমকে ইস্তেঞ্জা, অজু, গোসল, নামাজ ইত্যাদি সম্পর্কে অবশ্যই সঠিকভাবে  জানতে হবে, তবে সবার আগে তাকে দুটি পার্থক্য অবশ্যই জানতে হবে আর তা হল  তাওহীদ বনাম শিরক এবং সুন্নাহ বনাম বিদআত। এক শায়খের মুখে শুনেছিলাম "বাবা  নিজেই বুঝে না শিরক কি,ছেলেকে কি শিখাবে"। আর এজন্য জামাতে অবশ্যই একজন  সহিহ আক্বিদার মুরুব্বী থাকতে হবে।

২. "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" কোন কিছুই কিছু থেকে হয়না সব কিছু আল্লাহর পক্ষ হতে  হয়। অতি মজবুত তাওয়াক্কুল সম্পন্ন বক্তব্য। কিন্তু এই কালেমার তাৎপর্য আরো ব্যাপক

 ক) "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। সাথে সাথে এই কালেমার তাৎপর্য   এই বিষয়টিও নির্দেশ করে আল্লাহ ছাড়া গায়েব জানলে ওয়ালা কেউ নেই।তবে তিনি   যাকে জানান সে ব্যতীত।

 •তারা(মানুষ) তাঁর জ্ঞানের কিছুই নিজেদের জ্ঞানের মধ্যে আনতে সক্ষম নয়, তবে তিনি  যাকে ইচ্ছা করেন। ২-২৫৫

 তাই কাশফ  নয় আল্লাহর পক্ষ হতে একমাত্র আসে ওহী এবং তা নবী ও   রাসুলদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল। আর ইলহাম বা সত্যস্বপ্ন যে কেউ দেখতে পারে : স্বপ্ন সত্য হওয়ার ব্যাপারে জাতি-ধর্মের কোনো ভেদাভেদ নেই। গুনাহগার এমনকি কাফের ব্যক্তিও সত্য স্বপ্ন দেখতে পারে। হজরত আমবিয়া আলাইহিস সালামদের সব স্বপ্ন ছিল বিশুদ্ধ ও সত্য। তাই তাদের স্বপ্ন অহিরূপে গণ্য। কিন্তু সাধারণ মানুষের স্বপ্নে বিভিন্ন সম্ভাবনা থাকে। বহুবিধ কারণে বিশুদ্ধ ব্যাখ্যাও পাওয়া যায় না। তাই তা কারও জন্য সত্যরূপে অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয় না।

 খ). "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। সাথে সাথে এই কালেমার  তাৎপর্য এই বিষয়টিও নির্দেশ করে আল্লাহ ছাড়া দেয়ার ক্ষমতা কারো নেই।

 •আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।১-০৫।

 তাই হোক সে স্বয়ং রাসুল সাঃ তার কাছেও কিছু চাওয়া যাবে না।

 গ) "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। সাথে সাথে এই কালেমার তাৎপর্য  এই বিষয়টিও নির্দেশ করে যে, আল্লাহর যত সিফাত তথা সুন্দরতম নাম আছে সেই   নামে  প্রত্যক্ষ পরোক্ষ কোন ভাবেই আর কারো কোন প্রকার অংশীদারিত্ব নেই।

৩. আল্লাহর রাসুল সাঃ কবরে বারজাখের জীবনে জীবিত। আর বারজাখের জীবনে প্রতিটি মানুষই জীবিত থাকবে। তবে নাবী-রাসুল, শহীদান, আউলিয়া কেরাম, মুমিন, ফাসিক, মুশরিক, মুনাফিক, কাফির ইত্যাদি প্রকারভেদ অনুযায়ী  মর্যাদা ও শানের পার্থক্য হবে। তাদেরকে হাশরের ময়দানে ডাকা হবে।ফয়সালা অনুযায়ী আখেরাতেও তারা জান্নাত বা জাহান্নামে জীবিত থাকবে।কিন্তু বারজাখের  জীবন ইহকালের মত নয়। কি অবস্থায় আছেন তা  আল্লাহই ভালো জানেন।তাই কুরআনের ২:১৫৪ শেষ অংশ(তোমরা অবগত নও) বাদ  দিয়ে রাসুল সাঃ কে নিয়ে বিভিন্ন কাহিনী প্রচার না করাই উচিত।বলা বাহুল্য যে, কারামাতকে অস্বিকার  করার  সামর্থ্য কারো নাই।তদুপরি আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তার দ্বারা তাঁর ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ করেন।  কিন্তু এটাও জ্ঞাতব্য থাকা উচিত যে, মুজিযা ও কেরামত ব্যক্তির ইচ্ছার  উপর নির্ভর করে না। ব্যক্তি নিজেও জানেন না তা কখন হবে, কিভাবে হবে।যদি তাই হত  তাহলে মুসা আ. তার হাতের লাঠিকে সাপ হয়ে যাওয়া দেখে উল্টো দিকে দৌড় দিতেন  না।

৪. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ।তাই বলে "এক হোক্ববা"-র ভয় দেখিয়ে নয়  বরং কাফের হয়ে যাওয়ার ভয় দেখানো উচিত।বলা বাহুল্য যে 

(( بَيْنَ الرَّجُلِ وَالْكُفْرِ وَالشِّرْكِ تَرْكُ الصَّلاَةِ ))             

“(মুসলিম)ব্যক্তি এবং শিরক ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত ছেড়ে দেয়া৷” [মুসলিম]  

এই হাদিসে শিরক ও কুফরী শব্দ দুটি আলিফ-লাম-ক্বফ-ফা-র দিয়ে লিখিত  আর এই আলিফ-লাম এর তাৎপর্য হচ্ছে ইহা বড় শিরক ও কুফরী।

৫. জিহাদের কয়েকটি ভাগ রয়েছে।তবে জিহাদে ফিসাবি লিল্লাহ দ্বারা একমাত্র কিতাল বা  শশস্ত্র জিহাদকেই বোঝায়।পাশাপাশি দ্বীনের দাওয়াতকে অনেকে "জান ও মাল ব্যয়ের  মাধ্যমে জিহাদ" আবার কেউ "নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ" বলে উল্লেখ করে থাকেন।এখন  প্রশ্ন হচ্ছে তাবলীগ জামাতে মালের তথা অর্থের ব্যয় না হয় বুঝলাম কিন্তু জানের ব্যয়টা  কোথায়?মসজিদ থেকে মসজিদে যেতে শারীরিক শক্তির প্রয়োজন আছে কিন্তু এর দ্বারা  "জানের ব্যয়" বিষয়টি আদায় হয়ে যায় কি? আর নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ মানে তো  'তাকওয়া অর্জন' -এর সাথে দ্বীনের দাওয়াতের কোন সম্পর্ক থাকতে পারে কি?

৬. দ্বীনের দাওয়াত অন্যের নিকট পৌঁছে দেয়া ফরজ।যে যতটুকু সঠিকভাবে জানে সে ততটুকু অন্যের কাছে পৌঁছে দিবে।সবাইকে এই হাদিসটির প্রথম ও শেষ অংশ জেনেই আমল করতে হবে। 

# আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, একটি আয়াত হ’লেও তোমরা আমার পক্ষ থেকে পৌঁছে দাও। বনী ইসরাঈলের নিকট থেকে বর্ণনা কর, কোন দোষ নেই। কিন্তু যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে আমার উপরে মিথ্যা আরোপ করবে, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে নির্ধারণ করে নিল। [বুখারী, কিতাবুল আম্বিয়া হা/৩৪৬১; আহমাদ হা/৬৪৮৬] 

হাদীছটিতে দাওয়াতের গুরুত্ব ফুটে ওঠেছে। সেই সাথে এ বিষয়েও সাবধান করা হয়েছে যে, তাতে যেন মিথ্যার লেশমাত্র না থাকে। নতুবা তাকে জাহান্নামে যেতে হবে।তাই কিতাবুল জিহাদের হাদিসের ফজিলত বয়ান করে দ্বীনের দাওয়াতের জন্য সবাইকে আগ্রহী করে তোলা নয় বরং আপনি একটি ফরজ আদায় করছেন এই নিয়তেই আপনাকে এই কাজটি করতে হবে।

৭. একজন মুসলিম আরেকজনের জন্য দু'আ করবে এটাই ইসলামী শরীয়াহ। তাই বলে  জীবনের ঝুকি নিয়ে বাস ট্রেনে হুড়োহুড়ি করে পীর সাহেবদের ওরসের দিনের মত ইজতেমার শেষ দিনে সমবেত হতেই হবে, লাখো  লাখো মানুষের মাঝে আমীন আমীন বলে নিজের সব গুনাহ মাফ করে মনের আশা কবুল  হবার লাইসেন্স পেতেই হবে এমন মনোভাব রাখা সত্যিই বোকামি।

৮. ওয়াজ-মাহফিলে গিয়ে দ্বীন সম্পর্কে জানা অবশ্যই দোষনীয় কিছু নয়। কিন্তু ইজতেমাকে "ছোট হজ্ব" নামকরণ করা নিশ্চিত গুনাহের কাজ। পাশাপাশি জীবনে তিন চিল্লা লাগানো ফরজ এমন কথা বলাও নিশ্চিত গুনাহের কাজ।

সবশেষে যারা নিজেদেরকে সহিহ আক্বিদার মুসলিম বলে দাবি করি তাদের কাছে কিছু  মতামত পেশ করছি।

দাওয়াতের দুটি পথ হতে পারে।

 ক). হক্ব বিষয়টি বার বার প্রচার করা

 খ). বাতিল বিষয়টির সরূপ উন্মোচন করা।
 
আমরা মানুষ তাই স্বভাবতই কেউ মতের বিপরীতে হলেই আমরা রেগে যাই। তাছাড়া হক্ব  কথাও কটু লাগে এটাও সত্য। তাই বলে কারো প্রতি আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে  আপনি দ্বীনের দাওয়াত  দিবেন তাতে আমি পুরোপুরি একমত নই। আগে প্রথম পথে চেষ্টা করুন তারপর না হয়  দ্বিতীয়টাতে যাবেন।আর মাদানী সাহেবকে নিয়ে টানা-হেঁচড়ার কি দরকার। তিনি ২য়  পদ্ধতিকে দাওয়াতের ক্ষেত্রে উপযুক্ত মনে করেছেন বলে তেমনটি করেছেন। তাই বলে  আপনিও অমনটি করবেন তা কেন?

তাবলীগি ভাইয়েরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।কিন্তু কার জন্য? কাকে রাজী-খুশি করার  জন্য? পদ্ধতি ভুল তাইতো ?

  • আপনি কেন সঠিক পদ্ধতির প্রচার করছেন না? লক্ষ্য করুন,  আমি সঠিক বিষয়য়ের নয় সঠিক পদ্ধতিটির প্রচারের কথা বলছি।
  • কি জানা আছে সেই পদ্ধতি? জানলে কমেন্টে অবশ্যই ব্যাখ্যা করবেন।
  • আপনি  করেছন তো সেইভাবে ?
  • আপনার দাওয়াতে ধৈর্য, নম্রতা, বিনয়ের প্রতিফলন ঘটে তো ?(তাবলীগি ভাইদের এজন্যই আমি পছন্দ করি)।
  • আপনার দাওয়াত কি পৌঁছেছে রিকশাওয়ালা বা দিনমজুরের  কাছে? নাকি ডিভিডি আর মেমোরি কার্ডে লেকচার ধরিয়ে বা ফেবুতে পোস্ট দিয়ে দিয়েই  কেল্লা ফতে।
  • ভাই আমাকে ভুল বুঝবেন  না। আপনার দাওয়াতের পদ্ধতি অবশ্যই ভালো কিন্তু এভাবে কতজনের কাছে আপনি  দাওয়াত পৌঁছাবেন। সমাজের সবার কাছে পৌঁছাবে তো ????
লিখলে হয়ত আরো অনেক লিখা যাবে তাই এই আমার কাছে এই মুহূর্তে যতটুকু না  বললেই নয় বলে মনে হল তাই উল্লেখ করলাম।

আল্লাহ আমাদেরকে মাফ করুন।আমাদেরকে হেদায়েত দিন।দ্বীনকে সঠিকভাবে বুঝার  তৌফিক দান করুন। আমিন।

প্রথম প্রকাশ : তাবলীগ ও আমি


STA-21.61
site search by freefind advanced

© 2013 by Ask Islam Bangla.
Powered by Create your own unique website with customizable templates.