প্রশ্ন ৩১ --> সিগারেট কি হারাম??
উত্তর :
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
ধূমপান বর্তমানে প্রচুর সমস্যা ও ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে সেই সাথে ধূমপানের সমস্যাগুলো অনেক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ধূমপান হারাম না হালাল সেটা ব্যাখ্যা করার আগে একটা ব্যাপার বলে নেয়া জরুরি, আল্লাহ পৃথিবীর সকল কিছুকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। ভালো বা হালাল এবং খারাপ বা হারাম। এখানে তৃতীয় কোন প্রকার নেই। আল্লাহ বলেনঃ
• তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষনা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ (সূরা আরাফ :১৫৭)
সুতরাং ধূমপান হয় হালাল হবে নতুবা হারাম হবে। অন্য আর যে যা বলে তা গ্রহনযোগ্য হবে না।
এবার আসুন ধূমপান এর ব্যাপারে বর্তমানে বিজ্ঞানী এবং ডাক্তাররা একমত যে স্বাস্থ্যের জন্য ধুপমান মারাত্মক ক্ষতিকর। ফুসফুসের ক্যান্সারসহ আরো মারাত্মক রোগের মূল কারন ধূমপান। ধূমপায়ী মায়েদের সন্তান বিকলাঙ্গ হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি। স্কুল কলেজে ধূমপান এর অপকারিতা নিয়ে অনেক রচনা অনেকেই লিখেছেন। আর এটা তো জানাই যে ধূমপান মৃত্যুর একটা বড় কারন। CDC (Center for Disease Control) এর হিসাবে প্রতি বছর বার্ধক্যজনিত কারন, দূর্ঘটনা, HIV তে যত মানুষ মারা যায় তার মোট সংখ্যার চেয়ে শুধুমাত্র ধূমপানে বেশি মানুষ মারা যায়। লেখার শেষে লিঙ্ক দেয়া আছে, আরো বিস্তারিত আছে সেই ব্যাপারে। American Cancer Society এর হিসাবে ২০১৩ সালেই ২২৮১৯০ জন ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে তামাকের কারনে। আর ১৫৯৪৮০ জন মারা গেছেন একই কারনে। সুতরাং ধূমপান যে কতটা ভয়াবহ তা বুঝতে পারার কথা। খুব স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় ধূমপান হচ্ছে বিষপান, আত্মহত্যার একটা দীর্ঘ উপায়। আর আল্লাহ বলেছেন,
• তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। (কোরান নিসা :২৯)।
এছাড়াও নবী মুহাম্মদ(সা) বলেছেন,
# এখানে (ইসলামে ) এমন কিছুই নেই যা খারাপ বা খারাপ করতে পারে । (Arabic "laa darar wa laa diraar")
তিনি আরো বলেন, “তোমার শরীরের তোমার উপর অধিকার আছে।” একটু আগেই দেখিয়েছি কিভাবে ধূমপান মানুষকে শেষ করে দেয়। ধূমপান করা মানে হচ্ছে শরীরের উপর অত্যাচার করা। সুতরাং ধূমপানের মধ্য দিয়ে আমরা শরীরের অধিকার নষ্ট করছি, বিচারের দিনে এর হিসাব আমাদের দিতে হবে।
আর যেখানে সেখানে ধূমপান যে অধূমপায়ীদের অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে তা না বললেই চলে। সিগারেটের বাজে গন্ধ অনেকের সহ্য হয় না আবার অনেকের অ্যাজমা থাকলে তাদেরও সমস্যা হয়। আর সিগারেটের বাজে গন্ধ ফেরেশতাদেরও সমস্যা করে। আর এই ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন,
• যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। (সূরা আহযাব :৫৮)।
আর CDC এর হিসেবে প্রতি বছর গড়ে ৪৯৪০০ অধূমপায়ী মারা যায় ধুমপায়ীদের ধোঁয়ার কারনে আক্রান্ত হয়ে। এই মানুষগুলোকে আসলে হত্যা করে ধুমপায়ীরা বিনা কারনে। আর বিনা কারনে কাউকে হত্যার ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন-
• যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবাপৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। (সূরা মায়িদা :৩২)
যে জিনিস এতো সমস্যার সৃষ্টি করে তা না বললেও চলে। সুতরাং এই পথে অর্থ ব্যায় অপব্যায় হিসেবেই গন্য হবে। আর এটা তো জানাই যে
• নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। (সূরা বনী ইসরাইল:২৭)
# আর মুহাম্মদ(সা) বলছেন, “শেষ বিচারের দিন একজন মানুষকেও অগ্রসর হতে দেয়া হবে না যতক্ষন না সে হিসাব দেবে সে তার অর্জিত অর্থ কিভাবে খরচ করেছে”।
# হযরত নুমান ইবনে বাশীর (রা) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: হালাল বা বৈধ সুস্পষ্ট এবং হারাম বা অবৈধও স্পষ্ট, আর এ দু’এর মধ্যবর্তী বিষয়গুলো হলো সন্দেহজনক। আর বেশীরভাগ লোকই সেগুলো (সম্পর্কে সঠিক পরিচয়) জানে না। অতএব যে ব্যক্তি ঐ সন্দেহজনক জিনিসিগুলোকে পরিহার করলো সে তার দ্বীন ও মান-সম্মানকে পবিত্র রাখলো। আর যে ব্যক্তি সন্দেহজনক জিনিসে জড়িয়ে পড়লো সে হারামের মধ্যে পড়ে গেল। (মুত্তাফিক আলাইহি)
উপরের আলোচনা থেকে আশা করি বুঝে যাবার কথা সিগারেট হারাম নাকি হালাল।
অনেকেই আছে নিজেদের সুবিধায় বলে যে সিগারেট মাকরুহ কিন্তু আগেই বলে দিয়েছি হয় হালাল না হয় হারাম। মাঝামাঝি কিছু নাই। হালালের বিভিন্ন শ্রেণীই হচ্ছে মুস্তাহাব, মুবাহ , মাকরূহ । তাই যারা ধূমপান করে তাদের উচিৎ যত দ্রুত সম্ভব ধূমপান ছেড়ে দেয়া। কাজটা অনেক কঠিন কিন্তু একেবারেই অসম্ভব না। । আল্লাহ আমাদের সকল হারাম থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুক ।
সূত্র :
MMS-1.1
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
ধূমপান বর্তমানে প্রচুর সমস্যা ও ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে সেই সাথে ধূমপানের সমস্যাগুলো অনেক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ধূমপান হারাম না হালাল সেটা ব্যাখ্যা করার আগে একটা ব্যাপার বলে নেয়া জরুরি, আল্লাহ পৃথিবীর সকল কিছুকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। ভালো বা হালাল এবং খারাপ বা হারাম। এখানে তৃতীয় কোন প্রকার নেই। আল্লাহ বলেনঃ
• তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষনা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ (সূরা আরাফ :১৫৭)
সুতরাং ধূমপান হয় হালাল হবে নতুবা হারাম হবে। অন্য আর যে যা বলে তা গ্রহনযোগ্য হবে না।
এবার আসুন ধূমপান এর ব্যাপারে বর্তমানে বিজ্ঞানী এবং ডাক্তাররা একমত যে স্বাস্থ্যের জন্য ধুপমান মারাত্মক ক্ষতিকর। ফুসফুসের ক্যান্সারসহ আরো মারাত্মক রোগের মূল কারন ধূমপান। ধূমপায়ী মায়েদের সন্তান বিকলাঙ্গ হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি। স্কুল কলেজে ধূমপান এর অপকারিতা নিয়ে অনেক রচনা অনেকেই লিখেছেন। আর এটা তো জানাই যে ধূমপান মৃত্যুর একটা বড় কারন। CDC (Center for Disease Control) এর হিসাবে প্রতি বছর বার্ধক্যজনিত কারন, দূর্ঘটনা, HIV তে যত মানুষ মারা যায় তার মোট সংখ্যার চেয়ে শুধুমাত্র ধূমপানে বেশি মানুষ মারা যায়। লেখার শেষে লিঙ্ক দেয়া আছে, আরো বিস্তারিত আছে সেই ব্যাপারে। American Cancer Society এর হিসাবে ২০১৩ সালেই ২২৮১৯০ জন ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে তামাকের কারনে। আর ১৫৯৪৮০ জন মারা গেছেন একই কারনে। সুতরাং ধূমপান যে কতটা ভয়াবহ তা বুঝতে পারার কথা। খুব স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় ধূমপান হচ্ছে বিষপান, আত্মহত্যার একটা দীর্ঘ উপায়। আর আল্লাহ বলেছেন,
• তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। (কোরান নিসা :২৯)।
এছাড়াও নবী মুহাম্মদ(সা) বলেছেন,
# এখানে (ইসলামে ) এমন কিছুই নেই যা খারাপ বা খারাপ করতে পারে । (Arabic "laa darar wa laa diraar")
তিনি আরো বলেন, “তোমার শরীরের তোমার উপর অধিকার আছে।” একটু আগেই দেখিয়েছি কিভাবে ধূমপান মানুষকে শেষ করে দেয়। ধূমপান করা মানে হচ্ছে শরীরের উপর অত্যাচার করা। সুতরাং ধূমপানের মধ্য দিয়ে আমরা শরীরের অধিকার নষ্ট করছি, বিচারের দিনে এর হিসাব আমাদের দিতে হবে।
আর যেখানে সেখানে ধূমপান যে অধূমপায়ীদের অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে তা না বললেই চলে। সিগারেটের বাজে গন্ধ অনেকের সহ্য হয় না আবার অনেকের অ্যাজমা থাকলে তাদেরও সমস্যা হয়। আর সিগারেটের বাজে গন্ধ ফেরেশতাদেরও সমস্যা করে। আর এই ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন,
• যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। (সূরা আহযাব :৫৮)।
আর CDC এর হিসেবে প্রতি বছর গড়ে ৪৯৪০০ অধূমপায়ী মারা যায় ধুমপায়ীদের ধোঁয়ার কারনে আক্রান্ত হয়ে। এই মানুষগুলোকে আসলে হত্যা করে ধুমপায়ীরা বিনা কারনে। আর বিনা কারনে কাউকে হত্যার ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন-
• যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবাপৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। (সূরা মায়িদা :৩২)
যে জিনিস এতো সমস্যার সৃষ্টি করে তা না বললেও চলে। সুতরাং এই পথে অর্থ ব্যায় অপব্যায় হিসেবেই গন্য হবে। আর এটা তো জানাই যে
• নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। (সূরা বনী ইসরাইল:২৭)
# আর মুহাম্মদ(সা) বলছেন, “শেষ বিচারের দিন একজন মানুষকেও অগ্রসর হতে দেয়া হবে না যতক্ষন না সে হিসাব দেবে সে তার অর্জিত অর্থ কিভাবে খরচ করেছে”।
# হযরত নুমান ইবনে বাশীর (রা) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: হালাল বা বৈধ সুস্পষ্ট এবং হারাম বা অবৈধও স্পষ্ট, আর এ দু’এর মধ্যবর্তী বিষয়গুলো হলো সন্দেহজনক। আর বেশীরভাগ লোকই সেগুলো (সম্পর্কে সঠিক পরিচয়) জানে না। অতএব যে ব্যক্তি ঐ সন্দেহজনক জিনিসিগুলোকে পরিহার করলো সে তার দ্বীন ও মান-সম্মানকে পবিত্র রাখলো। আর যে ব্যক্তি সন্দেহজনক জিনিসে জড়িয়ে পড়লো সে হারামের মধ্যে পড়ে গেল। (মুত্তাফিক আলাইহি)
উপরের আলোচনা থেকে আশা করি বুঝে যাবার কথা সিগারেট হারাম নাকি হালাল।
অনেকেই আছে নিজেদের সুবিধায় বলে যে সিগারেট মাকরুহ কিন্তু আগেই বলে দিয়েছি হয় হালাল না হয় হারাম। মাঝামাঝি কিছু নাই। হালালের বিভিন্ন শ্রেণীই হচ্ছে মুস্তাহাব, মুবাহ , মাকরূহ । তাই যারা ধূমপান করে তাদের উচিৎ যত দ্রুত সম্ভব ধূমপান ছেড়ে দেয়া। কাজটা অনেক কঠিন কিন্তু একেবারেই অসম্ভব না। । আল্লাহ আমাদের সকল হারাম থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুক ।
সূত্র :
- Tobacco-Related Cancers Fact Sheet
- Tobacco - Related Mortality
- Islam QA - Ruling on smoking
- ধূমপান হারাম কেনো?
MMS-1.1
© 2013 by Ask Islam Bangla.