ASK ISLAM BANGLA
  • Home
  • রচনাবলী
  • সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর
  • ইসলামি সাধারণ জ্ঞান
  • ইসলাম বিরোধী প্রশ্নের জবাব
  • ইসলামের সেই কাহিনীগুলো
  • সাহাবীদের কাহিনী
  • গল্পে গল্পে শিখী
  • ROAD TO PEACE
  • Forum

প্রশ্ন ১৫০ --> আমি যাকে পছন্দ করি ভালবাসি তার পরিবার আমার সাথে তাকে বিয়ে দিতে রাজি না। কি করব?

উত্তর :

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

আমাদের সমাজে বিয়ে নিয়ে বা রিলেশন থেকে তা বিয়ে পর্যন্ত গড়ানোর প্রক্রিয়ায় কিছু অযাচিত ঘটনা ঘটে যেটা ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের জীবনে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। বাস্তবতাকে সামনে রেখে সকলের মাঝে কিছুটা সতর্কতা এবং এসম্পর্কিত মানসিক প্রস্তুতি অর্জনে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে আজকের এই পোষ্টটি লেখা।

প্রথমেই অহরহ ঘটে চলা ঘটনা থেকে দুটি ঘটনা শেয়ার করি...

১। দুইজন এক সাথে প্রেম করে ভার্সিটিতে। একসাথে লেখা পড়া করে দুইজনই ভার্সিটির টিচার হলো। এবার তাদের বিয়ে করার পালা। কিন্তু বিয়ে হল না। মেয়ের বাবা ছেলেকে পছন্দ করললেন না। মেয়েকে আরেক ডিপার্টমেন্টের টিচারের সাথে বিয়ে দিয়ে দিল জোর করে।

২। এক জুগল পুরো ভার্সিটি লাইফ একসাথে কাটালো। বিয়ে করে সংসার সাজানোর বিশাল প্ল্যান তাদের। কিন্তু যেই না পাশ করল, মেয়ের পরিবার জোর করে আরেকজনের সাথে বিয়ে দিয়ে দিল।

এরকম ঘটনা আমাদের আশেপাশে খুবই কমন। আপনারা আপনাদের আত্মীয়-স্বজনের থেকে এমন অনেক ঘটনাই শুনে থাকতে পারেন, দেখে থাকতে পারেন।

যা হোক, বিয়ের আগে প্রেম করা যে হারাম এটা নতুন করে বলার কিছু নাই। এটা সবাই জানে। কিন্তু, কথা হলো- যখন কোন মেয়ে কোন ছেলেকে পছন্দ করে তার পরিবারকে সেকথা জানায়, তখন (আমাদের দেশে) সাধারণত মেয়ের পরিবার কোন ভাবেই তা মানতে চায় না। ছেলে ভাল হলেও মেয়ে যেহেতু পছন্দ করেছে তাই সে ভাল না। এটা একটা সাইকোলজিক্যাল ইস্যু। নিজেদেরকে বাবা-মার পর্যায়ে বসিয়ে চিন্তা করলে হয়ত অনেকে একই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। কারণ, সমাজে এমন ধরনের চিন্তা-ভাবনার প্রভাব অনেক বেশি।

ছেলের পরিবারেও এমনটা ঘটে। তবে, এখানে একটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। ছেলের ও মেয়ের কন্ডিশনের মধ্যে একটি বড় বেশী পার্থক্য হচ্ছে- পরিবার ছেলেদের উপর বেশী চাপ দিতে পারে না, চাপ বাড়ালে ছেলে বিগড়ে যাবার ভয় থাকে। আবার, ইসলামও বলে- ছেলেরা কারো অনুমতি ছাড়া একা বিয়ে করতে পারে। এদিক থেকে মেয়েরা একটু নেগেটিভ কন্ডিশনে থাকে। মেয়েদের পরিবারে অনেক সমস্যা হয়। আবার, সাধারণত, মেয়েদের মন অনেক নরম হয়। তাই, পরিবার থেকে খুব বেশি চাপ দিলে তারা সেটা নিতে পারে না। চাপে পড়ে অনেক সময় নিজের ইচ্ছা মরে যায়। অন্যের কথা মেনে নিতে হয়। এমন চাপের বিরুদ্ধে খুব বড় স্কেলে বিদ্রোহ করতে পারে না তারা। বাবা-মা-স্বামী যে দিক থেকেই চাপটা আসুক না কেন। অবশ্য, খুব বেশি বিদ্রোহী মনোভাব দেখানো উচিতও না, (পরিস্থিতি বিবেচ্য)

তো, এমন সমস্যা সমাধানে প্রাকটিক্যালি চিন্তা করলে দেখা যায়, মূল বোঝার দায়িত্ব হল মেয়ের অভিভাবকের। যদিও আমাদের সমাজ ব্যবস্থা বলে যে উনারা এটা বুঝতে চান না। ভাবেন-
"মেয়ে মানুষ। ছোট মানুষ। ও কি বুঝে। জীবনের কতটুকুই বা দেখছে। প্রেম-টেম, ভালোলাগা এইগুলান কিছু না। দুই দিন কেদেই সব ঠিক হয়ে হয়ে যাবে। "

আরেকটি ফ্যাক্ট হচ্ছে, সাধারণত যারা ভার্সিটিতে প্রেম করে তারা এক পর্যায়ে বাসায় জানিয়ে দেয়।এমন ক্ষেত্রে দেখায় যে, মেয়ের পরিবার প্রথমে সম্মত থাকে কিন্তু মেয়ের পড়াশোনা শেষ হবার সাথে সাথে তাদের মনোভাব পুরোপুরি চেঞ্জড। ব্যাপারটা এমন দাঁড়ায় যে, মেয়ের পড়ালেখার ক্ষতির কথা চিন্তা করে তারা প্রথমে সরাসরি না করতে চান না, কিন্তু যেই না পড়া শেষ হয়, সঙ্গে সঙ্গে আরেকজনের সাথে বিয়ে দিয়ে দেন। কিন্তু ভার্সিটি লাইফের তাদের একসাথে চলা যে বিয়ের পরে তাদের জীবনকে কঠিন করে তুলবে সেটা অনেক সময় চিন্তার মধ্যে আনেন না। এমন পক্ষপাতমূলক চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত।

আবার, অনেকে অবশ্য বলেন- মেয়েদের সাইকোলজির আরেকটা দিক হলঃ কথা দিয়ে তাদের অনেক প্রভাবিত করা যায়। তারা মিস্টি মিস্টি কথায় খুব দ্রুত গলে যায়। এই কারণে একটা কথা নাকি প্রচলিত আছে- ছেলেরা পটে চেহারা দেখে, মেয়েরা পটে ছেলের কথা শুনে। tongue emoticon এই কারণে অনেক সুন্দরী মেয়েদের প্রেমিক দেখা যায় নেশাখোর। এই ক্ষেত্রে পরিবারের কড়া একশনকই কাম্য। এমন ভুল ডিসিশনের ব্যাপারে মেয়েদের সতর্ক হওয়া উচিত।

যাই হোক মূল কথায় আসি। মেয়ের পরিবার যখন তার পছন্দের ছেলেকে বাদ দিয়ে অন্য কারোও সাথে বিয়ে দিতে চায় তখন একজন মেয়েকে অনেক কিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হয়, তাকে অনেকভাবে বোঝানো ও রাজি করানোর চেষ্টা করা হয়। এই ব্যাপারটা প্রেম করার সময় ছেলে বা মেয়েরা মাথাতেই আনে না, ফলে খুব বাজে সিচুয়েশন ফেস করতে হয়। বিয়ে হয় অন্য জায়গায়। যাহোক, মেয়েদের এসময়ে কি কি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে তার একটা রাফ ধারণা দেবার চেষ্টা করিম অনেক সময়ই মেয়েদের মূল চাহিদা থাকে যে তার স্বামী যেন তার অনেক কেয়ার নেয়, এজন্য মেয়েকে বুঝানো হয় যে তোমার পছন্দের ছেলে তোমার কেয়ার নিতে পারবে না, দেখানো হয় হাজারো যুক্তি। এখানে, সম্পদের ব্যাপারটা একটা ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। রিলেটিভলি ধনী ব্যক্তির সাথে বিয়ে হলে লাইফ এনজয় করার স্কোপ বেশি, এইটাকে অনেকক্ষেত্রে মেয়ের সামনে স্টাবলিশ করার চেষ্টা করা হয় এবং মেয়েরা একসময় সেটাতে যুক্তি খুঁজে পেতে শুরু করে। এভাবে কাজ না হলে মানসিক চাপ প্রয়োগ, ব্লাকমেইল, হুমকি তো আছেই। সব শেষে মেয়েটা রিলেশনে থাকা ছেলেকে বলতে বাধ্য হয়- "আমাকে মাফ করে দাও"

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মেয়ের নার্ভাস ব্রেক ডাউন হয়। আত্মহত্যার ঘটনাও খুব একটা অপরিচিত নয়।

তো, কথা হল, এমন সম্পর্ক প্রথম থেকেই হারাম। এটা শুরু করাই উচিত হয় নাই।

এপর্যায়ে এসে, মডার্ন পরিবারের নতুন ইসলাম বুঝা ছেলে-মেয়েদের এজাতীয় সমস্যা নিয়ে কথা বলা দরকার। ছেলেদের পরিবারের ক্ষেত্রে সমস্যা হয় যে, সে চায় মেয়ে খুব পর্দানশীল হবে, বিয়ে হবে সাদামাটাভাবে কিন্তু পরিবার চায় আর এক। বিয়ের ফরমেট নিয়ে না হয় আরেকদিন কথা বলা যাবে কিন্তু মেয়ের দ্বীনিদারিতার ব্যাপারে যেসব ভাইয়েরা সিনসিয়ারিটি দেখান তাদের জন্য (মদার্ন পরিবার হলে) অনেক ঝামেলা অপেক্ষা করছে। এজন্য, নিজের পরিবারকে এখন থেকেই সামলানোর চেষ্টা করুন। আর মেয়েদের দিকটা আগের মতই। এখানে, একটা জিনিস এড করা দরকার। দ্বীনদার ছেলেরা অর্থবিত্তের দিক থেকে অন্যদের তুলনায় একটু পিছিয়ে থাকে কারণ, সমাজের এত হারামের মধ্যে হালাল উপার্জনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সহজ নয়। তাই, মেয়ে চাইলেও পরিবার নাকচ করে দেয়।

যাহোক এইসব ঘটনা আমাদের একটুও কাম্য না। মূলত পোষ্টটাতে রিলেশনে থাকা ব্যক্তিদের জন্য সামনে আগত প্রাকটিক্যাল প্রবলেম নিয়ে ডিল করার চেষ্টা করা হয়েছে সেহেতু ছেলে-মেয়ে উভয়পক্ষকে কিছু উপদেশঃ

মেয়েদের জন্য-
১) কাউকে পছন্দ করলে, আগে নিজের পরিবারকে মানান। তাদেরকে আগে ভাল মত বোঝান। বিয়েতে মেয়ের বাবার সম্মতি অবশ্যই লাগবে (যদি না বাবা ফাসেক হয়। বাবা ফাসেক হলে, সে আর অভিভাবক থাকে না)

২) পরিবারকে মানাতে যদি না পারেন তাহলে কোন সম্পর্কে আগাবেন না বা প্রস্তাব আসলে নিষেধ করে দিবেন।

ছেলেদের জন্য-
১) কাউকে বিয়ে করতে চাইলে মেয়েকে না মানিয়ে, মেয়ের পরিবার বিশেষ করে তার মা কে মানানোর চেষ্টা করুন। কারণ, দীর্ঘ সংসার জীবনের পর পরিবারের কর্তৃত্ব সাধারণত মেয়েদের (মায়েদের) হাতেই চলে আসে। মা মানলেই সব ঠিক, নতুবা সবই নিরাশা। এজন্য একজন সালাফও বলতেন, কোন মেয়েকে পছন্দ হলে মেয়ের মাকে উপহার পাঠাও যেন তোমার প্রতি তার অন্তর নরিম হয়।

২) শুধু মেয়ের কথায় বসে থাকলে। যেকোনো সময় 'সরি' শোনার জন্য প্রস্তুত থাকুন। সরাসরি প্রস্তাব পাঠান নতুবা হারাম সম্পর্ক ত্যাগ করুন।

যারা প্রেমের মাঝে আছেন তাদের জন্য জোর উপদেশ "আকদ" করুন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। পারলে, দুই পরিবারে চাপ দিন। পড়ার মাঝে থাকলেও চাপ সৃষ্টি করুন। এতে আপনাদের সম্পর্ক হালাল হবে এবং পরিবারের আসল মনভাবও বুঝতে পারবেন। নতুবা ভবিষ্যতে পস্তাতে হবে।

ধন্যবাদ.

LTA-110.183
site search by freefind advanced

© 2015 by Ask Islam Bangla.
Powered by Create your own unique website with customizable templates.