প্রশ্ন ১৪৯ --> বিড়াল পালা কি জায়েজ?
উত্তর :
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
বিড়াল পালা জায়েজ। বিড়াল পালাতে কোন সমস্যা নেই। আমাদের সবার পরিচিত সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবী, আবু হুরাইরা (রা) এর নাম আবু হুরাইরা হয়েছিল কারণ তিনি বিড়াল পছন্দ করতেন খুব।
আবু হুরাইরা রা. এর নাম ছিল ‘আবদুশ শামস্ ইবনে ছখর। ইসলাম গ্রহণের পর আল্লাহর রাসূল সা. তাঁর নাম রাখেন ‘আবদুর রাহমান।’ ছোট বেলায় একটি বিড়াল শাবকের সাথে তিনি সবসময় খেলতেন। তা দেখে সাথীরা তাঁর নাম দেন আবু হুরাইরা (বিড়াল শাবকওয়ালা)। আস্তে আস্তে এ নামেই তিন সকলের মাঝে পরিচিত হন এবং তাঁর আসল নামটি ঢাকা পড়ে যায়। ইসলাম গ্রহণের পর রাসূলুল্লাহর সা. সাথে যখন তাঁর সম্পর্ক গভীর হয় তখন মাঝে মাঝে তিনি আদর করে ডাকতেন ‘আবু হিররিন’। তাই তিনি আবু হুরাইরার পরিবর্তে আবু হিররিন নামটিকেই প্রাধান্য দেন।
বিড়াল পবিত্র প্রাণী।
বিড়াল কোন খাবার বা পানিতে মুখ দিলে তা নষ্ট হয় না। তা ব্যবহার করা যায়।
# কাবশা বিনতে কাব ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবু কাতাদা তার নিকট আগমন করলেন, তারপর বর্ণনাকারী কিছু বললেনঃ যার অর্থ এই, আমি তার জন্য পানিভর্তি একটি উযুর পাত্র উপস্থিত করলাম। এমন সময় একটি বিড়াল তা হতে পান করল। তারপর তিনি ঐ বিড়ালটির জন্য পাত্রটি কাত করে দিলাম যাতে সে পান করতে পারে। কাবশা বলেন, তখন আবূ কাতাদা দেখেলেন, আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি, তিনি বললেন, হে ভাতিজী! তুমি কি আশ্চর্য বোধ করছ? আমি বলাম হ্যা। তিনি বললেনঃ রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ এরা (বিড়াল) অপবিত্র নয়, এরা তোমাদের আশেপাশে বিচরণকারী এবং বিচরণকারিনী। (সুনানু নাসাঈঃ ৩৪১)
# আব্দুল্লাহ্ইব্ন মাসলামা—দাউদ ইব্ন সালেহ্ইব্ন দীনার আত-তাম্মার হতে তার মাতার সূত্রে বর্ণিত । একদা তাঁর মনিব তাকে হযরত আয়েশা (রা)-র নিকট –“হারিসাহ্”-সহ প্রেরণ করেন। অতঃপর আমি তাঁর নিকট পৌছে দেখতে পাই যে, তিনি নামায রত আছেন। তিনি আমাকে (হারিসার পাত্রটি) রাখার জন্য ইশারা করলেন । ইত্যবসরে সেখানে একটি বিড়াল এসে তা হতে কিছু খেয়ে ফেললো হযরত আয়েশা (রা) নামায শেষে বিড়ালটি যে স্হান হতে খেয়েছিল সেখান হতেই খেলেন এবং বললেন- নিশ্চয়ই রাসূল্লুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ বিড়াল অপবিত্র নয় । এরা তোমাদের আশেপাশেই ঘুরাফেরা করে। অতঃপর হযরত আয়েশা (রা) আরো বলেন, আমি রাসূল্লুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামকে বিড়ালের উচ্ছিষ্ট পানি দ্বারা উযু করতে দেখেছি (সুনান আবু দাউদঃ ৭৬)
কিন্তু অপর দিকে কুকুর যদি কোন পাত্রে মুখ দেয় তা অপবিত্র হয়ে যায় এবং সাতবার গুনে গুনে ধুতে হবে।
# আবু হুরায়রা(রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ(সা) বলেন, তোমাদের কারো পাত্রে যখন কুকুর মুখ লাগিয়ে পানকরবে তখন সে পাত্রপবিত্র করার পদ্ধতি হল সাতবার তা ধূয়ে ফেলে । প্রথম বার মাটি দিয়ে (ঘষে ফেলবে) । (সহিহ মুসলিমঃ ৫৪৯)
মাটির জায়গায় এখন মডার্ন যে জিনিস গুলো পাওয়া যায় সেগুলো দিয়ে ধুলেই হবে প্রথম বার। পরের ছয়বার শুধু পানিই যথেষ্ট।
বিড়াল ঘরে থাকলে নামাজেও কোন সমস্যা হয় না।
# রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: বিড়াল সলাত বিনষ্ট করে না। কারণ তা ঘরের জিনিসপত্রের অন্তর্ভুক্ত। (সুনানু নাসাঈঃ ৩৬৮)
তবে ঘরে কুকুর থাকলে হবে না।
# আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ জিবরাঈল (আঃ) কোন নির্ধারিত সময়ে রাসুলুল্লাহ (সা) -এর কাছে আগমনের ওয়াদা করলেন কিন্তু যথাসময়ে তিনি এলেন না । রাসুলুল্লাহ (সা) -এর হাতে একটি লাঠি ছিল, তিনি তা তার হাত থেকে ফেলে দিয়ে বললেন, আল্লাহ তো তাঁর ওয়াদা খেলাফ করেন না; তাঁর রাসুলগণও না । এরপর তিনি লক্ষ্য করে তাঁর খাটের নিচে একটি কুকুর ছানা দেখতে পেলেন । তখন তিনি বললেনঃ হে আয়েশা! কুকুর (ছানা) টি এখানে ঢুকে পড়ল কখন? আয়েশা (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি জানি না । তখন তিনি আদেশ দিলে সেটিকে বের করে দেয়া হল । ইতিমধ্যে জিবরাঈল (আঃ) এলেন । রাসুলুল্লাহ (সা) বললেনঃ আপনি আমাকে ওয়াদা দিয়েছিলেন, তাই আমি আপনার প্রতীক্ষায় বসেছিলাম । কিন্তু আপনি এলেন না । তিনি বললেন, আপনার ঘরে (অবস্হানরত) কুকুরটি আমার জন্য প্রতিবন্ধক হয়েছিল । কারণ যে ঘরে কোন ছবি কিংবা কুকুর থাকে, সে ঘরে আমরা (রহমতের ফিরিশতারা) প্রবেশ করি না । (সহিহ মুসলিম ৫২৪৬)
বিড়াল ও কুকুর নিয়ে ব্যবসা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিড়াল, কুকুর কেনা বেচা করা হারাম।
# রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বিড়াল আহার করা ও এর মূল্য ভোগ করা নিষেধ করেছেন। (তিরমিজিঃ ১২৮০)
# রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কুকুর ও বিড়ালের বিক্রয় মূল্য নিষেধ করেছেন। (তিরমিজিঃ ১২৭৯)
কেউ বিড়াল পালতে চাইলে আসেপাশে লাখ লাখ বিড়াল রাস্তায় পাবে। এইসব বিড়ালদের ঘরে জায়গা দিন। তাদের থাকার ভাল জায়গা হবে। শুধু শুধু দামি দামি বিড়াল কিনে অপচয় এবং পাপ কামাই করার কোন দরকার নাই।
এই ফেসবুক গ্রুপে সব সময় অনেক বিড়াল পাবেন Adoption নেবার জন্য। ভুলেও বিড়াল কেনা বেচার কাছেও যাবেন না।
Cat Society Bangladesh
সবশেষে বিড়াল পালকদের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।
নিজের বিড়াল spay / neuter করতে ধর্মীয় কোন সমস্যা নাই। চাইলে এটা আপনারা করতে পারেন। আর অনেক ক্ষেত্রেই এটা ভাল অনেকের জন্য। এটা আপনার নিজের চয়েস।
আল্লাহ ভাল জানেন।
আল্লাহ আমাদের সকল সৃষ্টির প্রতি দয়াশীল হবার তাওফিক দিন। আমিন।
LTA-109.182
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
বিড়াল পালা জায়েজ। বিড়াল পালাতে কোন সমস্যা নেই। আমাদের সবার পরিচিত সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবী, আবু হুরাইরা (রা) এর নাম আবু হুরাইরা হয়েছিল কারণ তিনি বিড়াল পছন্দ করতেন খুব।
আবু হুরাইরা রা. এর নাম ছিল ‘আবদুশ শামস্ ইবনে ছখর। ইসলাম গ্রহণের পর আল্লাহর রাসূল সা. তাঁর নাম রাখেন ‘আবদুর রাহমান।’ ছোট বেলায় একটি বিড়াল শাবকের সাথে তিনি সবসময় খেলতেন। তা দেখে সাথীরা তাঁর নাম দেন আবু হুরাইরা (বিড়াল শাবকওয়ালা)। আস্তে আস্তে এ নামেই তিন সকলের মাঝে পরিচিত হন এবং তাঁর আসল নামটি ঢাকা পড়ে যায়। ইসলাম গ্রহণের পর রাসূলুল্লাহর সা. সাথে যখন তাঁর সম্পর্ক গভীর হয় তখন মাঝে মাঝে তিনি আদর করে ডাকতেন ‘আবু হিররিন’। তাই তিনি আবু হুরাইরার পরিবর্তে আবু হিররিন নামটিকেই প্রাধান্য দেন।
বিড়াল পবিত্র প্রাণী।
বিড়াল কোন খাবার বা পানিতে মুখ দিলে তা নষ্ট হয় না। তা ব্যবহার করা যায়।
# কাবশা বিনতে কাব ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবু কাতাদা তার নিকট আগমন করলেন, তারপর বর্ণনাকারী কিছু বললেনঃ যার অর্থ এই, আমি তার জন্য পানিভর্তি একটি উযুর পাত্র উপস্থিত করলাম। এমন সময় একটি বিড়াল তা হতে পান করল। তারপর তিনি ঐ বিড়ালটির জন্য পাত্রটি কাত করে দিলাম যাতে সে পান করতে পারে। কাবশা বলেন, তখন আবূ কাতাদা দেখেলেন, আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি, তিনি বললেন, হে ভাতিজী! তুমি কি আশ্চর্য বোধ করছ? আমি বলাম হ্যা। তিনি বললেনঃ রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ এরা (বিড়াল) অপবিত্র নয়, এরা তোমাদের আশেপাশে বিচরণকারী এবং বিচরণকারিনী। (সুনানু নাসাঈঃ ৩৪১)
# আব্দুল্লাহ্ইব্ন মাসলামা—দাউদ ইব্ন সালেহ্ইব্ন দীনার আত-তাম্মার হতে তার মাতার সূত্রে বর্ণিত । একদা তাঁর মনিব তাকে হযরত আয়েশা (রা)-র নিকট –“হারিসাহ্”-সহ প্রেরণ করেন। অতঃপর আমি তাঁর নিকট পৌছে দেখতে পাই যে, তিনি নামায রত আছেন। তিনি আমাকে (হারিসার পাত্রটি) রাখার জন্য ইশারা করলেন । ইত্যবসরে সেখানে একটি বিড়াল এসে তা হতে কিছু খেয়ে ফেললো হযরত আয়েশা (রা) নামায শেষে বিড়ালটি যে স্হান হতে খেয়েছিল সেখান হতেই খেলেন এবং বললেন- নিশ্চয়ই রাসূল্লুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ বিড়াল অপবিত্র নয় । এরা তোমাদের আশেপাশেই ঘুরাফেরা করে। অতঃপর হযরত আয়েশা (রা) আরো বলেন, আমি রাসূল্লুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামকে বিড়ালের উচ্ছিষ্ট পানি দ্বারা উযু করতে দেখেছি (সুনান আবু দাউদঃ ৭৬)
কিন্তু অপর দিকে কুকুর যদি কোন পাত্রে মুখ দেয় তা অপবিত্র হয়ে যায় এবং সাতবার গুনে গুনে ধুতে হবে।
# আবু হুরায়রা(রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ(সা) বলেন, তোমাদের কারো পাত্রে যখন কুকুর মুখ লাগিয়ে পানকরবে তখন সে পাত্রপবিত্র করার পদ্ধতি হল সাতবার তা ধূয়ে ফেলে । প্রথম বার মাটি দিয়ে (ঘষে ফেলবে) । (সহিহ মুসলিমঃ ৫৪৯)
মাটির জায়গায় এখন মডার্ন যে জিনিস গুলো পাওয়া যায় সেগুলো দিয়ে ধুলেই হবে প্রথম বার। পরের ছয়বার শুধু পানিই যথেষ্ট।
বিড়াল ঘরে থাকলে নামাজেও কোন সমস্যা হয় না।
# রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: বিড়াল সলাত বিনষ্ট করে না। কারণ তা ঘরের জিনিসপত্রের অন্তর্ভুক্ত। (সুনানু নাসাঈঃ ৩৬৮)
তবে ঘরে কুকুর থাকলে হবে না।
# আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ জিবরাঈল (আঃ) কোন নির্ধারিত সময়ে রাসুলুল্লাহ (সা) -এর কাছে আগমনের ওয়াদা করলেন কিন্তু যথাসময়ে তিনি এলেন না । রাসুলুল্লাহ (সা) -এর হাতে একটি লাঠি ছিল, তিনি তা তার হাত থেকে ফেলে দিয়ে বললেন, আল্লাহ তো তাঁর ওয়াদা খেলাফ করেন না; তাঁর রাসুলগণও না । এরপর তিনি লক্ষ্য করে তাঁর খাটের নিচে একটি কুকুর ছানা দেখতে পেলেন । তখন তিনি বললেনঃ হে আয়েশা! কুকুর (ছানা) টি এখানে ঢুকে পড়ল কখন? আয়েশা (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি জানি না । তখন তিনি আদেশ দিলে সেটিকে বের করে দেয়া হল । ইতিমধ্যে জিবরাঈল (আঃ) এলেন । রাসুলুল্লাহ (সা) বললেনঃ আপনি আমাকে ওয়াদা দিয়েছিলেন, তাই আমি আপনার প্রতীক্ষায় বসেছিলাম । কিন্তু আপনি এলেন না । তিনি বললেন, আপনার ঘরে (অবস্হানরত) কুকুরটি আমার জন্য প্রতিবন্ধক হয়েছিল । কারণ যে ঘরে কোন ছবি কিংবা কুকুর থাকে, সে ঘরে আমরা (রহমতের ফিরিশতারা) প্রবেশ করি না । (সহিহ মুসলিম ৫২৪৬)
বিড়াল ও কুকুর নিয়ে ব্যবসা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিড়াল, কুকুর কেনা বেচা করা হারাম।
# রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বিড়াল আহার করা ও এর মূল্য ভোগ করা নিষেধ করেছেন। (তিরমিজিঃ ১২৮০)
# রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কুকুর ও বিড়ালের বিক্রয় মূল্য নিষেধ করেছেন। (তিরমিজিঃ ১২৭৯)
কেউ বিড়াল পালতে চাইলে আসেপাশে লাখ লাখ বিড়াল রাস্তায় পাবে। এইসব বিড়ালদের ঘরে জায়গা দিন। তাদের থাকার ভাল জায়গা হবে। শুধু শুধু দামি দামি বিড়াল কিনে অপচয় এবং পাপ কামাই করার কোন দরকার নাই।
এই ফেসবুক গ্রুপে সব সময় অনেক বিড়াল পাবেন Adoption নেবার জন্য। ভুলেও বিড়াল কেনা বেচার কাছেও যাবেন না।
Cat Society Bangladesh
সবশেষে বিড়াল পালকদের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।
নিজের বিড়াল spay / neuter করতে ধর্মীয় কোন সমস্যা নাই। চাইলে এটা আপনারা করতে পারেন। আর অনেক ক্ষেত্রেই এটা ভাল অনেকের জন্য। এটা আপনার নিজের চয়েস।
আল্লাহ ভাল জানেন।
আল্লাহ আমাদের সকল সৃষ্টির প্রতি দয়াশীল হবার তাওফিক দিন। আমিন।
LTA-109.182
© 2015 by Ask Islam Bangla.