ASK ISLAM BANGLA
  • Home
  • রচনাবলী
  • সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর
  • ইসলামি সাধারণ জ্ঞান
  • ইসলাম বিরোধী প্রশ্নের জবাব
  • ইসলামের সেই কাহিনীগুলো
  • সাহাবীদের কাহিনী
  • গল্পে গল্পে শিখী
  • ROAD TO PEACE
  • Forum

প্রশ্ন ১৪৭ --> বর্তমানে খারেজীদের চিনব কি করে জানতে চাই। 

উত্তর :

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

ইসলামের আকিদা হতে প্রথম বিচ্যুত দল হল খারেজি। এদের শুরু হয় সিফফিনের যুদ্ধে আলি (রা) এর বাহিনীর মধ্যের একটি দল হতে। তারা আলি ও মুয়াবিয়া (রা) এর সমঝোতা মানতে অস্বীকৃতি জানায়। এবং তাদের কাফের ঘোষণা দিয়ে বেরিয়ে যায়। তাদের প্রধান আবদুল্লাহ ইবনে ওহাব আর রাসিবি।

তারা এরপর আলি (রা) কে শহীদ করে দেয়। এবং অরাজকতা চালাতে থাকে। তাদের অরাজকতা চরমে পৌঁছে আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা) এর এন্টি খিলাফতের সময়। হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ তাদের দমন করে তখন। এরপর থেকে খণ্ড খণ্ড ভাবে বর্তমান পর্যন্ত নানা জায়গায় খারেজিদের উদ্ভব ঘটছেই।

যারা ( লোক বা গুষ্টি বা দল ) ইসলামের পক্ষে কাজ করে বা করার জন্য চেষ্টা করে ,কিংবা ইসলামকে পূর্ণ বা আংশিক ভাবে মেনে চলে তাদের বিরুদ্ধে যারা সোচ্চার (কথা / কলমের মাধ্যমে বা বল প্রয়োগের মাধ্যমে ) তাদের কে খারেজী বলা হয়।ইসলামের প্রথম থেকে শুরু করে তারা এখন পর্যন্ত তারা বিদ্যমান । ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে তাদের কোন কথা নাই কিংবা কোন কর্ম পরিকল্পনা নাই । তারা শুধু বিরোধীটা করে তাদেরকে যারা ইসলামের আদেশ ও নিষেধ মেনে চলে বা চলার চেষ্টা করে। তারা কুরআন থেকে সেই সব আয়াত নেয় যেগুলো কাফেরদের জন্য নাযিল হইয়াছে এবং সেই সব আয়াত মুসলিম শাসক কিংবা মুসলিম দলের উপর চাপিয়ে দিয়ে তাদের হত্যা করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যায়।

আলী (রা) বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ কে বলতে শুনেছি, শেষ যুগে এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হবে যারা হবে অল্পবয়স্ক যুবক, নির্বোধ। তারা সৃষ্টির সবচাইতে শ্রেষ্ঠতম কথা থেকে আবৃত্তি করব। অথচ ঈমান তাদের গলদেশ অতিক্রম করবে না। তারা দীন থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বের হয়ে যায়। তাদেরকে যেখানেই তোমরা পাবে হত্যা করবে। কেননা তাদেরকে হত্যা করলে হত্যাকারীর জন্য কিয়ামত দিবসে প্রতিদান রয়েছে। (সহিহ বুখারী :: খন্ড ৮ :: অধ্যায় ৮৪ :: হাদিস ৬৪)

ইউসায়ের ইবন আমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাহল ইবন হুনায়েফ (রা) –কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি নবী –কে খারিজীদের সম্পর্কে কিছু বলতে শুনেছেন কি? তিনি বললেন, আমি তাকে বলতে শুনেছি, আর তখন তিনি তাঁর হাত ইরাকের দিকে বাড়িয়েছিলেন যে, সেখান থেকে এমন একটি কাওম বের হবে যারা কুরআন পড়বে সত্য, কিন্তু তা তাদের গলদেশ অতিক্রম করবে না, তারা ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়। (সহিহ বুখারী :: খন্ড ৮ :: অধ্যায় ৮৪ :: হাদিস ৬৮)

তাদের আকিদাঃ
১। যে কবিরা গুনাহ করবে সে মুরতাদ। চিরকাল জাহান্নামে থাকবে। তার জান ও মাল জিহাদে হালাল। এবং তার স্ত্রী- সন্তান সহ হত্যা করতে হবে।
২। সব নন খারেজি মুসলিম হল মুরতাদ।
৩। তাদের একটা নীতি হল ইশতিরাদ "ধর্মীও হত্যা"।
৪। ইমাম কোন গুনাহ করলে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ধর্মীয় দায়িত্ব মনে করে।
৫। তারা প্রচুর ইবাদত করে কিন্তু ভয় পায় কিছুই কবুল হবে না। একটু ভুল সব ধ্বংস করবে।
৬। আল্লাহর আরশের অস্তিত্ব অস্বীকার করে।
৭। কবরের আযাব অস্বীকার করে।
৮। রাসুল্লুল্লাহ (সা) গুনাহগার মুসলিমদের জন্য শাফায়েত করবেন না।

এই হল মূল কিছু পয়েন্ট তাদের ব্যাপারে। সব যুগের সব খারেজী
সব পয়েন্ট মানবে তা কিন্তু নয়। কিছু মানবে কিছু ত্যাগ করবে। আবার নতুন কিছু যোগ করছে।

যে ব্যক্তি সব সময় আল্লাহর আযাব কে ভয় পায়। আল্লাহ যে ক্ষমা করতে পারেন এই আশা রাখে না। তার অন্তরে খারেজী আকিদার একটি বড় ইস্যু আছে। সে তাই এক্সট্রিম কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে যেতে পারে সহজেই।

বর্তমানে যেসব খারেজী বৈশিষ্ট্য দেখা যায়-
# তাদের ডাক হবে কুর'আনের ঐ আয়াতের প্রতি যে- আল্লাহ'র আইন দ্বারা যে শাসন করে না সে কাফির, বর্তমান খারিজি'রা গনতন্ত্র অনুসরণ করলে বা ভোট দিলেই তাদের তাকফির করে

# আকিদাহ এর ক্ষেত্রে তাদের বৃহৎ কোন কাজ পাওয়া যায় না, ছোট-ছোট বুকলেট ব্যতীত। আকিদাহ এর কিতাবগুলোর ব্যাখ্যাগ্রন্থ তাদের থেকে আসে নাই। শুধুমাত্র তাওহিদ আল হাকামিয়াহ নিয়ে তারা কথা বলে

# সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ নিয়ে বক্তব্য প্রদান করে এবং সমাজে লোকজনদের ইসলামের সাথে কম সঙ্গযুক্তির জন্য তাদের প্রতি এক্সট্রিম আচরণ করে

# নিজেদের দখলকৃত এলাকাকে দারুল ইসলাম মনে করে আর তা ব্যতীত সকল মুসলিম অধ্যুষিত স্থান দারুল কুফর মনে করে, গনতন্ত্র দ্বারা শাসন করায় সকল মুসলিম দেশের শাসককে কাফির বলে

# বড় বড় আলিমদের ব্যাপারে অসম্মানসূচক বক্তব্য প্রদান করে, কখনোও কখনোও তাকফির করে। যারা ইসলামের জন্য বেশি কাজ করে বা যেখানে ইসলাম সবচেয়ে বেশি প্রাকটিস হয় তাদের প্রতি আক্রোশ প্রকাশ করে

# তারা দুনিয়া পরিত্যাগ করে দুনিয়া পাবার জন্য। অর্থাৎ তারা নিজেদের সুখ-শান্তির বিসর্জন দেয় দেশের শাসন ক্ষমতা অর্জনের জন্য

# তারা নিজেদের আলিমদের অপেক্ষা বেশি জ্ঞানী মনে করে এবং আলিমদের বিরুদ্ধে আক্রোশ প্রকাশ করে। তবে তাদের মধ্যে পরিচিত আলিম থাকে না। অর্থাৎ তারা যাদের আলিম বলে তাদের ইজাজাহ কোন আলিমের পক্ষ থেকে এসেছে তেমনটা দেখাতে পারে না, হয়ত কোন আলিমের ছাত্র ছিল কিন্তু ইজাজাহ দিয়েছে এমনটা খুবই বিরল এবং এসকল সয়ম্ভু আলিমদের মাদ্রাসার অস্তিত্ব দেখাতে পারে না

# আল্লাহ তাদের জীবন কিনে নিয়েছে মনে করে, মৃত্যুবরণ করুলেই সে শহীদ এমন ভাবে। নিজেদের অন্যান্যদের চেয়ে অধিক ঈমানদার মনে করে।

# নারী-শিশু-বৃদ্ধদের হত্যা জায়েজ ফাতাওয়া প্রদান করে এবং সর্বদা জিহাদ (মূলত রক্তপাত) এর দিকে ধাবিত হয়। যেদল বেশি রক্তপাত ঘটায় সেদলের অনুসরণ করে। হত্যাকে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ন ইবাদাহ মনে করে

# যুদ্ধক্ষেত্রে কোন বিরোধ দেখা দিলে সেজন্য শরিয়াহ কোর্ট এর দিকে আহ্ববান করা হলে তা প্রত্যাখ্যান করে অর্থাৎ যুদ্ধক্ষেত্রের কোন আমিরের আনুগত্য থেকে নিজেদের বের করে নিয়ে যায় এবং অন্যদের মুরতাদ সাব্যস্ত করে

# সমাজ থেকে নিজেদের আলাদা করে নেয় এবং অন্য কারোও সাথে দ্বীনি আলোচনায় তাকফিরের দিকে আহ্বান করে

# এমন দলের মধ্যে তরুণদের সংখ্যা অনেক বেশি কিন্তু বয়োজ্যেষ্টদের সংখ্যা যথেষ্ট কম। ৪০ বছর পার করে ব্যক্তির সংখ্যা আশংকাজনকভাবে কম। খারেজীরা সুনিপুন কৌশলে কথা বলে , অল্প ইসলামিক জ্ঞান সম্পূর্ণ মানুষকে তারা খুব সহজে ধোঁকা দেয় । বিশেষ করে মুসলমানদের মধ্যে অল্প বয়স্করা ও যারা ইসলাম সম্পর্কে কম জানে,তারা খারেজীদের দারা ইসলাম সম্পর্কে ভিব্রান্তির মধ্যে পড়ে যায় এবং ইসলাম সম্পর্কে বিরূপ ধারণা জন্ম নেয়। 

অনেকের মধ্যে এই খারেজী বৈশিষ্ট্য গুলো দেখা যেতে পারে। তারা তাদের কর্ম নিয়াত কাজের উপর ভিত্তি করে ফাসেক থেকে কাফের পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। 

আল্লাহ আমাদের সকল ভ্রান্তি হতে রক্ষা করুন। আমিন।



LTA-107.147
site search by freefind advanced

© 2015 by Ask Islam Bangla.
Powered by Create your own unique website with customizable templates.