প্রশ্ন ১৪৩ --> মুরতাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, তবে কেন আশেপাশের মুরতাদদের হত্যা করা হচ্ছে না?
উত্তর :
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
যারা ইসলাম ছেড়ে দিয়ে অন্য স্রষ্টার পূজা করা শুরু করে বা নাস্তিক হয়ে যায় এবং মানুষকে আল্লাহর আনুগত্য থেকে দূরে নিয়ে যায়—যারা মুরতাদ: তাদেরকে হত্যা করতে হবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, কখন এই কঠিন শাস্তিটি প্রয়োগ করা বৈধ। প্রথমত, কেউ যদি ঘোষণা দেয়: সে আজকে থেকে আর ইসলাম মানবে না, তাহলে সাথে সাথে তার উপর দা-কুড়াল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লে হবে না। এটা করা যাবে শুধু তাদেরই উপরে, যারা অন্য ধর্ম অনুসরণ করেই ক্ষান্ত দেয় না, একই সাথে ইসলামের বিরুদ্ধে মানুষকে উল্টো পাল্টা কথা বলতে থাকে এবং ইসলামিক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গোপনে বা প্রকাশ্যে কাজ করতে থাকে বা দলবল নিয়ে মুসলিমদেরকে আক্রমণ করে। ইসলাম সমর্থিত সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে: প্রথমে তাকে যথেষ্ট বোঝাতে হবে, ইসলামের বাণী সম্পর্কে তার ভুল ধারণাগুলোকে সংশোধন করার চেষ্টা করতে হবে। এতেও যদি না হয়, তাকে ইসলামিক আদালতে হাজির করে সাবধান করতে হবে যে, সে যদি তার অবস্থান পরিবর্তন না করে, তাহলে তাকে তিনদিনের নোটিশ দেওয়া হলো পুনরায় বিবেচনা করার জন্য। এরপরেও সে যদি নিজেকে না বদলায়, তার অন্যায় কাজগুলো করতেই থাকে, তাহলে তাকে ইসলামিক আদালতের নির্দেশ অনুসারে ইসলামিক সরকারের আয়োজনে হত্যা করতে হবে।
এখন তিনদিন সময় দেওয়ার পরে কেউ যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে, সে গোপনে অন্য ধর্ম অনুসরণ করবে, কিন্তু মানুষের কাছে নিজেকে মুসলিম বলে জাহির করবে, তাহলে কি আমরা মুনাফিক তৈরি করব না? হতে পারে। সেক্ষেত্রে আল্লাহ তাদের বিচার করবেন। মুনাফিকরা থাকবে জাহান্নামের সবচেয়ে নিচের, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর স্তরে, এমনকি কাফিরদের থেকেও অনেক বেশি কষ্টের মধ্যে। তাদেরকে নিয়ে আমাদের আর মাথা না ঘামালেও চলবে। যতক্ষণ সে মুরতাদ হয়ে সমাজে বিভ্রান্তি, দুর্নীতি না ছড়াচ্ছে, তাদেরকে হত্যা করার অধিকার ইসলাম দেয়নি।
একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায় যে, একজন ধর্মদ্রোহী বা মুরতাদকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত কখনও কোনো ব্যক্তি বা দল নিজে থেকে নিতে পারে না এবং মুরতাদকে হত্যা করা তখনি সম্ভব যখন দেশে ইসলামের আইন রয়েছে, যখন ইসলামিক আদালতে মুরতাদকে হাজির করে তাকে সাবধান করে তিন দিনের নোটিশ দেওয়া যায়।
মুরতাদ বা ধর্মদ্রোহীদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার জন্য যারা রঙিন স্বপ্ন দেখছেন, তাদের একশ বার ভেবে দেখা উচিত: তারা যেটা করতে যাচ্ছেন, সেটা সত্যিই নিশ্চিতভাবে জিহাদ, নাকি সারা মানবজাতিকে হত্যা করার একটা উদ্যোগ। যদি ধরুন কোনোভাবে হিসেবে ভুল হলো, এবং এমন কাউকে হত্যা করা হলো, যাকে হত্যা করার অধিকার আল্লাহ দেননি। তাহলে কী ভয়াবহ ফলাফল হবে তা ঠিকভাবে ভেবে দেখেছেন?
এখন আপনি যদি মনে করেন: আপনারা কয়েকজন যুবক মিলে একসাথে হয়ে একটা “মুরতাদ নির্মূল কমিটি” করবেন, তারপর মুরতাদদেরকে কমিটির পক্ষ থেকে হুমকি দিবেন, এবং তারপর সে না শুনলে কয়েকজন মিলে গিয়ে হত্যা করবেন; তাহলে হুমকি দেওয়ার পরের দিন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এসে আপনাদেরকে ধরে নিয়ে যাবে। তাছাড়া এই কাজটা করতে হবে আপনাদেরকে কু’রআনের অন্যান্য আয়াতের আদেশ ভেঙে এবং একই সাথে দেশের আইন ভেঙে। একজন মুসলিমের জন্য দেশের আইন মেনে চলা আবশ্যক, যদি তা কুরআনের পরিপন্থি না হয়। কোনো দেশের আইন ভাঙা, সেই দেশের সাথে করা অঙ্গীকার ভঙ্গ করার শামিল। যতক্ষণ পর্যন্ত দেশের আইন আপনাকে বাধ্য না করছে ইসলামের আইনের বিরুদ্ধে কিছু করতে, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি দেশের আইন ভাঙতে পারবেন না।
যারা মুরতাদকে হত্যা করা সমর্থন করে, তারা আসলে কু’রআনের একটি-দুটি আয়াতকে তাদের প্রেক্ষাপট ছাড়া বিবেচনা করে সিদ্ধান্তে চলে যায়। কেউ যদি মুরতাদ সম্পর্কিত কু’রআনের সবগুলো আয়াত, তাদের প্রেক্ষাপট অনুসারে ঠিকভাবে বিবেচনা করে, তাহলে তারা দেখবে যে, মুরতাদকে হত্যা করার জন্য প্রথমে একটি ইসলামিক আইন-ব্যবস্থা দরকার, একটি ইসলামিক সরকার দরকার এবং এইধরনের কোনো কাজ, কোনো ব্যক্তি বা দল নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে করতে পারে না। মুরতাদকে হত্যা করার রায় দেওয়া শুধু মাত্র একটি ইসলামিক আদালতের পক্ষেই সম্ভব।
- কুরআনের কথা
LTA-104.177
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
যারা ইসলাম ছেড়ে দিয়ে অন্য স্রষ্টার পূজা করা শুরু করে বা নাস্তিক হয়ে যায় এবং মানুষকে আল্লাহর আনুগত্য থেকে দূরে নিয়ে যায়—যারা মুরতাদ: তাদেরকে হত্যা করতে হবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, কখন এই কঠিন শাস্তিটি প্রয়োগ করা বৈধ। প্রথমত, কেউ যদি ঘোষণা দেয়: সে আজকে থেকে আর ইসলাম মানবে না, তাহলে সাথে সাথে তার উপর দা-কুড়াল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লে হবে না। এটা করা যাবে শুধু তাদেরই উপরে, যারা অন্য ধর্ম অনুসরণ করেই ক্ষান্ত দেয় না, একই সাথে ইসলামের বিরুদ্ধে মানুষকে উল্টো পাল্টা কথা বলতে থাকে এবং ইসলামিক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গোপনে বা প্রকাশ্যে কাজ করতে থাকে বা দলবল নিয়ে মুসলিমদেরকে আক্রমণ করে। ইসলাম সমর্থিত সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে: প্রথমে তাকে যথেষ্ট বোঝাতে হবে, ইসলামের বাণী সম্পর্কে তার ভুল ধারণাগুলোকে সংশোধন করার চেষ্টা করতে হবে। এতেও যদি না হয়, তাকে ইসলামিক আদালতে হাজির করে সাবধান করতে হবে যে, সে যদি তার অবস্থান পরিবর্তন না করে, তাহলে তাকে তিনদিনের নোটিশ দেওয়া হলো পুনরায় বিবেচনা করার জন্য। এরপরেও সে যদি নিজেকে না বদলায়, তার অন্যায় কাজগুলো করতেই থাকে, তাহলে তাকে ইসলামিক আদালতের নির্দেশ অনুসারে ইসলামিক সরকারের আয়োজনে হত্যা করতে হবে।
এখন তিনদিন সময় দেওয়ার পরে কেউ যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে, সে গোপনে অন্য ধর্ম অনুসরণ করবে, কিন্তু মানুষের কাছে নিজেকে মুসলিম বলে জাহির করবে, তাহলে কি আমরা মুনাফিক তৈরি করব না? হতে পারে। সেক্ষেত্রে আল্লাহ তাদের বিচার করবেন। মুনাফিকরা থাকবে জাহান্নামের সবচেয়ে নিচের, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর স্তরে, এমনকি কাফিরদের থেকেও অনেক বেশি কষ্টের মধ্যে। তাদেরকে নিয়ে আমাদের আর মাথা না ঘামালেও চলবে। যতক্ষণ সে মুরতাদ হয়ে সমাজে বিভ্রান্তি, দুর্নীতি না ছড়াচ্ছে, তাদেরকে হত্যা করার অধিকার ইসলাম দেয়নি।
একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায় যে, একজন ধর্মদ্রোহী বা মুরতাদকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত কখনও কোনো ব্যক্তি বা দল নিজে থেকে নিতে পারে না এবং মুরতাদকে হত্যা করা তখনি সম্ভব যখন দেশে ইসলামের আইন রয়েছে, যখন ইসলামিক আদালতে মুরতাদকে হাজির করে তাকে সাবধান করে তিন দিনের নোটিশ দেওয়া যায়।
মুরতাদ বা ধর্মদ্রোহীদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার জন্য যারা রঙিন স্বপ্ন দেখছেন, তাদের একশ বার ভেবে দেখা উচিত: তারা যেটা করতে যাচ্ছেন, সেটা সত্যিই নিশ্চিতভাবে জিহাদ, নাকি সারা মানবজাতিকে হত্যা করার একটা উদ্যোগ। যদি ধরুন কোনোভাবে হিসেবে ভুল হলো, এবং এমন কাউকে হত্যা করা হলো, যাকে হত্যা করার অধিকার আল্লাহ দেননি। তাহলে কী ভয়াবহ ফলাফল হবে তা ঠিকভাবে ভেবে দেখেছেন?
এখন আপনি যদি মনে করেন: আপনারা কয়েকজন যুবক মিলে একসাথে হয়ে একটা “মুরতাদ নির্মূল কমিটি” করবেন, তারপর মুরতাদদেরকে কমিটির পক্ষ থেকে হুমকি দিবেন, এবং তারপর সে না শুনলে কয়েকজন মিলে গিয়ে হত্যা করবেন; তাহলে হুমকি দেওয়ার পরের দিন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এসে আপনাদেরকে ধরে নিয়ে যাবে। তাছাড়া এই কাজটা করতে হবে আপনাদেরকে কু’রআনের অন্যান্য আয়াতের আদেশ ভেঙে এবং একই সাথে দেশের আইন ভেঙে। একজন মুসলিমের জন্য দেশের আইন মেনে চলা আবশ্যক, যদি তা কুরআনের পরিপন্থি না হয়। কোনো দেশের আইন ভাঙা, সেই দেশের সাথে করা অঙ্গীকার ভঙ্গ করার শামিল। যতক্ষণ পর্যন্ত দেশের আইন আপনাকে বাধ্য না করছে ইসলামের আইনের বিরুদ্ধে কিছু করতে, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি দেশের আইন ভাঙতে পারবেন না।
যারা মুরতাদকে হত্যা করা সমর্থন করে, তারা আসলে কু’রআনের একটি-দুটি আয়াতকে তাদের প্রেক্ষাপট ছাড়া বিবেচনা করে সিদ্ধান্তে চলে যায়। কেউ যদি মুরতাদ সম্পর্কিত কু’রআনের সবগুলো আয়াত, তাদের প্রেক্ষাপট অনুসারে ঠিকভাবে বিবেচনা করে, তাহলে তারা দেখবে যে, মুরতাদকে হত্যা করার জন্য প্রথমে একটি ইসলামিক আইন-ব্যবস্থা দরকার, একটি ইসলামিক সরকার দরকার এবং এইধরনের কোনো কাজ, কোনো ব্যক্তি বা দল নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে করতে পারে না। মুরতাদকে হত্যা করার রায় দেওয়া শুধু মাত্র একটি ইসলামিক আদালতের পক্ষেই সম্ভব।
- কুরআনের কথা
LTA-104.177
© 2015 by Ask Islam Bangla.