ASK ISLAM BANGLA
  • Home
  • রচনাবলী
  • সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর
  • ইসলামি সাধারণ জ্ঞান
  • ইসলাম বিরোধী প্রশ্নের জবাব
  • ইসলামের সেই কাহিনীগুলো
  • সাহাবীদের কাহিনী
  • গল্পে গল্পে শিখী
  • ROAD TO PEACE
  • Forum

প্রশ্ন ১৩৪ --> যিহার কি?

উত্তর :

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

যিহারﺍَ ‘যিহার’এর অর্থঃ নিজের স্ত্রীকে অথবা তার কোন অঙ্গকে ‘মা’এর সাথে অথবা ‘স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন কোন মহিলার পৃষ্ঠদেশের সমতুল্য
বলে আখ্যায়িত করাকে আরবীতে ‘যিহার’ বলা হয়। এ কথা বলার উদ্দেশ্য হলো, মায়ের সাথে মেলা-মেশা যেমন ইসলামী শরী‘য়াতে হারাম, ঠিক এমনিভাবে স্ত্রীর সাথেও মেলামেশাকে হারাম করা। ভারতীয় উপমহাদেশে এই যিহারের প্রচলন খুব একটা দেখা যায় না। বিশেষ করে আরবে জাহেলী যুগ
হতে এই যিহার প্রথা চলে আসছে। জাহেলী যুগে যিহারকে তালাক বলে গণ্য করা হতো। এই ‘যিহার’এর পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার আর কোন অবকাশ ছিল না।

কিন্তু ইসলামী বিধানে ‘যিহার’ দ্বারা তালাক হয় না, কেবল কাফ্ফারা ফরয হয়। কাফ্ফারা পরিশোধ না করা পর্যন্ত স্ত্রী সাময়িকভাবে স্বামীর জন্য নিষিদ্ধ থাকে। কাফফারা পরিশোধের পর স্বামীর জন্য স্ত্রীর সাথে যথাযথভাবে ঘর-সংসার করা হালাল হয়ে যায়।

জাহেলী যুগ থেকে চলে আসা যে সমস্ত রসম-রেওয়াজ উম্মাতে মুহাম্মাদীর ভিতরে প্রবেশ করেছে ‘যিহার’ তার মধ্য থেকে একটি। যে সব শব্দের দ্বারা ‘যিহার’ গণ্য করা হয় তার কতকগুলি নিচে বর্ণনা করা হলো।

যেমন, স্বামী স্ত্রীকে বলবে, তুমি আমার নিকট আমার মায়ের পিঠের সমতুল্য। আমার বোন যেমন আমার জন্য হারাম তুমিও তেমনি আমার জন্য হারাম। তোমার শরীরের এক চতুর্থ অংশ আমার জন্য আমার ধাত্রীমায়ের মত হারাম ইত্যাদি। তবে যদি স্বামী তুমি আমার মায়ের মত বলতে মায়ের মত গুণবতী, যত্নশীল বা মায়ের মত ভালবাসে বুঝায় তবে যিহার হবে না। যিহার তখনই হবে যখন নিয়ত থাকবে যে মা-বোন যে দিক থেকে হারাম সে দিক থেকে স্ত্রীকে হারাম বানালে।

যিহারের মাধ্যমে নারীদের উপর বড় যুলুম ও অত্যাচার করা হয়। প্রকৃত পক্ষে যিহার একটি অমানবিক কাজ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

• “তোমাদের মধ্য হ’তে যারা নিজেদের স্ত্রীদের সঙ্গে যিহার করে তারা যেন জেনে রাখে যে, তারা তাদের মা নয়। তাদের মা তো তারাই যারা তাদেরকে প্রসব করেছে। তারা তো কেবল অবৈধ ও মিথ্যা কথা বলে। আর নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল ও মার্জনাকারী” (আল-মুজাদালাহ, ২)।

‘ইসলামী শরী‘য়াত’ রামাযান মাসে দিনের বেলায় কেউ স্বেচ্ছায় স্ত্রীর সাথে সহবাস করলে রোযা ভঙ্গের কাফ্ফারা, এমনিভাবে ভুলক্রমে হত্যার কাফফারা যেভাবে দিতে বলেছে যিহারের জন্যেও ঠিক একইভাবে কাফ্ফারা আদায় করতে বলেছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

• “যারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে যিহার করে, তারপর তারা তাদের উক্তি ফিরিয়ে নেয়, তাদের জন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একজন দাস মুক্তির বিধান দেয়া হলো। এটা তোমাদের জন্য নির্দেশ। আর তোমরা যা কিছুই করনা কেন,
সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সবই জানেন। এ ছাড়া যে ব্যক্তি গোলাম অর্থাৎ দাস আজাদ করার ক্ষমতা রাখে না তারজন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটানা ২মাস রোযা রাখতে হবে। আর যে ব্যক্তি এটারও সামর্থ্য রাখে না,
তাহ’লে তাকে ৬০জন মিসকিন অর্থাৎ গরীব মানুষকে খানা খাওয়াতে হবে। এই বিধান এ জন্য যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপরে তোমরা ঈমান রাখ।
এটা আল্লাহর সীমারেখা। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (আল- মুজাদালাহ,৩-৪)।

যিহার একটি ইসলাম বিরোধী কাজ হওয়ায় এর জন্য এত কঠিন শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে। 

কোন হতভাগা স্বামী স্ত্রীকে ‘তুই আমার মা বা মায়ের মত’ বললে ‘যিহার’ হয়। কিন্তু যদি কোন হতভাগী স্ত্রী ‘তুমি আমার বাপ বা বাপের মত’ বলে। এ ক্ষেত্রে মহিলার পক্ষ থেকে যিহার হবে না। কেবল মহিলাকে কসমের কাফফারা আদায় করতে হবে। নারীরা যিহার করতে পারে না ৫৮৭ (ইবনে বায)

কসমের কাফফারা হল 

• আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; কিন্তু পাকড়াও করেন ঐ শপথের জন্যে যা তোমরা মজবুত করে বাধ। অতএব, এর কাফফরা এই যে, দশজন দরিদ্রকে খাদ্য প্রদান করবে; মধ্যম শ্রেনীর খাদ্য যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে দিয়ে থাক। অথবা, তাদেরকে বস্তু প্রদান করবে অথবা, একজন ক্রীতদাস কিংবা দাসী মুক্ত করে দিবে। যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে না, সে তিন দিন রোযা রাখবে। এটা কাফফরা তোমাদের শপথের, যখন শপথ করবে। তোমরা স্বীয় শপথসমূহ রক্ষা কর এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নির্দেশ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর। (আল মায়িদা: ৮৯)

এমন বোকামি করা থেকে আল্লাহ সকলকে রক্ষা করুন। আমিন।



STA-99.168
site search by freefind advanced

© 2014 by Ask Islam Bangla.
Powered by Create your own unique website with customizable templates.