প্রশ্ন ১২ --> আল্লাহ কি সর্বত্র বিরাজমান? আল্লাহ কি নিরাকার? সুরা ইখলাস কি আল্লাহ্র পরিচয় এর জন্য যথেষ্ট না?
পূর্ণ প্রশ্ন ছিলঃ
"মাওলানা এটিএম হেমায়েতুদ্দিন হল জাহমিয়া ও মাতুরিদী। এরা ও আল্লাহর সিফাতকে অস্বীকার করে। যেমন: এরা বলে আল্লাহ সর্বত্রবিরাজমান (নাউযুবিল্লাহ) এবং আল্লাহ নিরাকার(নাউযুবিল্লাহ) অথচ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের ইজমা হল আল্লাহ ৭ আসমানের উপরে আরশে আছেন এবং যারা বলবে আল্লাহ সর্বত্রবিরাজমান তারা কাফের" - এক ভাই একটা পেজে এ কমেন্ট করেছে। আমি এখন জানতে চাচ্ছি আল্লাহ কি সর্বত্র বিরাজমান? আল্লাহ কি নিরাকার? সুরা ইখলাস কি আল্লাহ্র পরিচয় এর জন্য যথেষ্ট না? প্লিজ ভাই জাস্ট এ কয়েকটা প্রশ্নের আন্সার দিন... কারণ, একজন মুসলিম হিসাবে আল্লাহ্র অবস্থান নিয়ে doubt থাকা কোন ভাবেই ঠিক না... এটা ক্লিয়ার হওয়া দরকার।
উত্তর :
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
ভাই, আপনি ঠিক বলেছেন আল্লাহ্র অবস্থান নিয়ে আমাদের সন্দেহ থাকা ঠিক না। অবস্থান নিয়ে কুরআন আমাদের স্পষ্ট উত্তর দিয়েছে তাই এটা নিয়ে ইনশাল্লাহ এখনই সন্দেহ দূর করা যাবে। কিন্তু সমস্যা হল আকার নিয়ে। তিনি সাকার নাকি নিরাকার এটা নিয়ে ব্যাপক দ্বিমত রয়েছে বিভিন্ন মুসলিম সেক্ট-এর মধ্যে। আমরা মতগুলো তুলে ধরব।
প্রথমেই আসি আল্লাহ্র অবস্থানের ব্যাপারে। এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই, আল্লাহ সপ্ত আকাশের ওপরে আরশের উপর অবস্থান করেন।
যারা বলে তিনি সর্বত্র বিরাজমান তারা মুলত এ আয়াতের রেফারেন্স দেয়ঃ
• "তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।" (সুরা হাদিদ, ৫৭:৪)
কিন্তু এর মানে এই না যে তিনি সশরীরে আমাদের সাথে থাকবেন, বা থাকতে হবে। এর মানে তিনি আমাদের সব কিছুর খোঁজ খবর রাখেন।
• "আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী।" (সুরা কাফ ৫০:১৬)
কুরআন বলছেঃ
• আল্লাহ আছেন আকাশে (সুরা মূলক, ৬৭:১৬-১৭)
• "আল্লাহ্ হলেন তিনি যিনি আসমানসমূহ ও জমিন ছয় পর্যায়কালে সৃষ্টি করেছেন, তিনি আরশে আসীন আছেন।" (সুরা ফুরকান ২৫:৫৯, সুরা সাজদা ৩২:৪, ইউনুস ১০:৩)
আর আরশ হল সাত আসমানের উপরে। সুতরাং আল্লাহ্ সাত আসমানের উপরে, আরশে আসীন।
এবার আসা যাক সবচেয়ে বিতর্কিত টপিক। আল্লাহ্ সাকার নাকি নিরাকার। প্রথমেই বলে রাখা ভাল, আমাদের আগের ধর্ম অর্থাৎ খ্রিস্ট আর ইহুদি ধর্মে ঈশ্বর হলেন সাকার এবং মানুষ তাঁর আদলেই সৃষ্ট।
~ তারপর ঈশ্বর বললেন, “আমরা আমাদের মত করে এবং আমাদের সংগে মিল রেখে এখন মানুষ তৈরী করি। পরে ঈশ্বর তাঁর মত করেই মানুষ সৃষ্টি করলেন। হ্যাঁ, তিনি তাঁর মত করেই মানুষ সৃষ্টি করলেন, সৃষ্টি করলেন পুরুষ ও স্ত্রীলোক করে।" {বাইবেল, বুক অফ জেনেসিস, ২:২৬-২৭}
সিমিলার হাদিসও পাওয়া যায়,
# "যখন তোমাদের কেউ তোমার ভাই এর সাথে মারামারি করবে, তখন সে যেন তাঁর চেহারায় আঘাত না করে, কারণ আল্লাহ্ নিজ আদলে আদমকে বানিয়েছেন।" [সহিহ মুসলিম, হাদিস ৪৭৩১, কাছাকাছি কথা সহিহ বুখারি ৫৮৭৩]
সালাফিগণ বিশ্বাস করে থাকেন, আল্লাহ্ সাকার। আর কুরআনে আল্লাহ্র যেসব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এর কথা বলা আছে সেগুলো আক্ষরিক।
তাঁর চেহারার কথা বলেছেনঃ
• "একমাত্র আপনার মহিমায় ও মহানুভব পালনকর্তার চেহারা ছাড়া।" (আর-রহমান ৫৫:২৭)
চোখের কথা বলেছেনঃ
• "আমি তোমার প্রতি মহব্বত সঞ্চারিত করেছিলাম আমার নিজের পক্ষ থেকে, যাতে তুমি আমার চোখের সামনে প্রতি পালিত হও।" (সূরা ত্বোয়া-হা, ২০:৩৯)
হাতের কথা বলেছেনঃ
• "আল্লাহ বললেন, হে ইবলীস, আমি স্বহস্তে যাকে সৃষ্টি করেছি, তার সম্মুখে সেজদা করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল?"(সূরা সাদ ৩৮:৭৫)
পায়ের কথা বলেছেনঃ
• "গোছা পর্যন্ত পা খোলার দিনের কথা স্মরণ কর, সেদিন তাদেরকে সেজদা করতে আহবান জানানো হবে, অতঃপর তারা সক্ষম হবে না।"(সূরা কালাম ৬৮:৪২)
আর পরকালে আল্লাহ্র দর্শন অবশ্যই লাভ করবে মুমিনরা। তবে এটাকেও সালাফিগণ আল্লাহ্ সাকার এর পক্ষে যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন, আল্লাহ্ সাকার না হলে তাঁকে দেখবে কীভাবে?
• "সেদিন অনেক মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; তারা তার পালনকর্তার দিকে তাকিয়ে থাকবে।" {সুরা কিয়ামাহ, ৭৫:২২-২৩}
অন্যদিকে, সুন্নিরা বিশ্বাস করে থাকেন আল্লাহ্ তায়ালা নিরাকার আর তাঁর অঙ্গের বর্ণনা সবই রূপক। কারণ, আল্লাহ্ হলেন আলো। আল্লাহ্ আসলে কেমন সে ব্যাপারে কেবল একটা আয়াতই মূলত কুরআন বলছে আর সেই আয়াতটা অধিকাংশের কাছেই কিছুটা দুর্বোধ্যঃ
• "আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আলো, তাঁর আলোর উদাহরণ যেন একটি খোপ, যাতে আছে একটি প্রদীপ, প্রদীপটি একটি কাঁচপাত্রে স্থাপিত, কাঁচপাত্রটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ্য। তাতে পুতঃপবিত্র জলপাই বৃক্ষের তেল প্রজ্বলিত হয়, যা পূর্বমুখী নয় এবং পশ্চিমমুখীও নয়। অগ্নি স্পর্শ না করলেও তার তার যেন আলোকিত হওয়ার নিকটবর্তী। আলোর উপর আলো।" ( সুরা নূর ২৪:৩৫)
আল্লাহ্কে রাসুল (স) মিরাজে গিয়ে দেখতে পাননি।
# আবু যর (রা) বলেন, আমি রাসুলকে (স) জিজ্ঞেস করলাম, "আপনি কি আলাহকে দেখেছিলেন?" তিনি বললেন, "তিনি তো আলো, আমি কীভাবে তাঁকে দেখব??"
(Muslim, Book 1, Hadith No. 341)
মানুষের ইহকালীন সামর্থ্য নেই আল্লাহকে দেখবার।
• "দৃষ্টিসমূহ তাঁকে পেতে পারে না, অবশ্য তিনি দৃষ্টিসমূহকে পেতে পারেন। তিনি অত্যন্ত সুক্ষদর্শী, সুবিজ্ঞ।" (সুরা আনআম ৬:১০৩)
সত্যি বলতে, আমরা জানতে পারছি না ১০০% নিশ্চিত হয়ে, যে, আল্লাহ্ সাকার নাকি নিরাকার। তবে এটা আমাদের জানা জরুরি না, আল্লাহ্ সাকার হলেও আমাদের আমলের উপর কোন প্রভাব পড়ছে না, নিরাকার হলেও না। আমাদের এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে না। আমাদের উৎসাহিত করা হয়েছে স্বয়ং আল্লাহ্ নিয়ে না ভেবে তাঁর সুন্দর বিস্ময়কর সৃষ্টি-জগত নিয়ে ভাবতে।
তবে তাঁর সম্পর্কে একটা কথাই বলতে হয়ঃ
• "কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়।" (সুরা শুয়ারা ৪২:১১)
আমাদের জন্য আল্লাহ্র পরিচয় হিসেবে সুরা ইখলাস যথেষ্ট
• "বলুন, তিনিই আল্লাহ, এক,আল্লাহ অমুখাপেক্ষী,তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।" (সূরা ইখলাস১-৪)
সাকার না নিরাকার আপনি কোনটা মনে করছেন সেটা উপরের পুরো আলোচনা থেকে সিদ্ধান্ত নেবার ব্যাপার আপনার।
আশা করি উত্তরটা পেয়েছেন
AIM-5.19
"মাওলানা এটিএম হেমায়েতুদ্দিন হল জাহমিয়া ও মাতুরিদী। এরা ও আল্লাহর সিফাতকে অস্বীকার করে। যেমন: এরা বলে আল্লাহ সর্বত্রবিরাজমান (নাউযুবিল্লাহ) এবং আল্লাহ নিরাকার(নাউযুবিল্লাহ) অথচ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের ইজমা হল আল্লাহ ৭ আসমানের উপরে আরশে আছেন এবং যারা বলবে আল্লাহ সর্বত্রবিরাজমান তারা কাফের" - এক ভাই একটা পেজে এ কমেন্ট করেছে। আমি এখন জানতে চাচ্ছি আল্লাহ কি সর্বত্র বিরাজমান? আল্লাহ কি নিরাকার? সুরা ইখলাস কি আল্লাহ্র পরিচয় এর জন্য যথেষ্ট না? প্লিজ ভাই জাস্ট এ কয়েকটা প্রশ্নের আন্সার দিন... কারণ, একজন মুসলিম হিসাবে আল্লাহ্র অবস্থান নিয়ে doubt থাকা কোন ভাবেই ঠিক না... এটা ক্লিয়ার হওয়া দরকার।
উত্তর :
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
ভাই, আপনি ঠিক বলেছেন আল্লাহ্র অবস্থান নিয়ে আমাদের সন্দেহ থাকা ঠিক না। অবস্থান নিয়ে কুরআন আমাদের স্পষ্ট উত্তর দিয়েছে তাই এটা নিয়ে ইনশাল্লাহ এখনই সন্দেহ দূর করা যাবে। কিন্তু সমস্যা হল আকার নিয়ে। তিনি সাকার নাকি নিরাকার এটা নিয়ে ব্যাপক দ্বিমত রয়েছে বিভিন্ন মুসলিম সেক্ট-এর মধ্যে। আমরা মতগুলো তুলে ধরব।
প্রথমেই আসি আল্লাহ্র অবস্থানের ব্যাপারে। এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই, আল্লাহ সপ্ত আকাশের ওপরে আরশের উপর অবস্থান করেন।
যারা বলে তিনি সর্বত্র বিরাজমান তারা মুলত এ আয়াতের রেফারেন্স দেয়ঃ
• "তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।" (সুরা হাদিদ, ৫৭:৪)
কিন্তু এর মানে এই না যে তিনি সশরীরে আমাদের সাথে থাকবেন, বা থাকতে হবে। এর মানে তিনি আমাদের সব কিছুর খোঁজ খবর রাখেন।
• "আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী।" (সুরা কাফ ৫০:১৬)
কুরআন বলছেঃ
• আল্লাহ আছেন আকাশে (সুরা মূলক, ৬৭:১৬-১৭)
• "আল্লাহ্ হলেন তিনি যিনি আসমানসমূহ ও জমিন ছয় পর্যায়কালে সৃষ্টি করেছেন, তিনি আরশে আসীন আছেন।" (সুরা ফুরকান ২৫:৫৯, সুরা সাজদা ৩২:৪, ইউনুস ১০:৩)
আর আরশ হল সাত আসমানের উপরে। সুতরাং আল্লাহ্ সাত আসমানের উপরে, আরশে আসীন।
এবার আসা যাক সবচেয়ে বিতর্কিত টপিক। আল্লাহ্ সাকার নাকি নিরাকার। প্রথমেই বলে রাখা ভাল, আমাদের আগের ধর্ম অর্থাৎ খ্রিস্ট আর ইহুদি ধর্মে ঈশ্বর হলেন সাকার এবং মানুষ তাঁর আদলেই সৃষ্ট।
~ তারপর ঈশ্বর বললেন, “আমরা আমাদের মত করে এবং আমাদের সংগে মিল রেখে এখন মানুষ তৈরী করি। পরে ঈশ্বর তাঁর মত করেই মানুষ সৃষ্টি করলেন। হ্যাঁ, তিনি তাঁর মত করেই মানুষ সৃষ্টি করলেন, সৃষ্টি করলেন পুরুষ ও স্ত্রীলোক করে।" {বাইবেল, বুক অফ জেনেসিস, ২:২৬-২৭}
সিমিলার হাদিসও পাওয়া যায়,
# "যখন তোমাদের কেউ তোমার ভাই এর সাথে মারামারি করবে, তখন সে যেন তাঁর চেহারায় আঘাত না করে, কারণ আল্লাহ্ নিজ আদলে আদমকে বানিয়েছেন।" [সহিহ মুসলিম, হাদিস ৪৭৩১, কাছাকাছি কথা সহিহ বুখারি ৫৮৭৩]
সালাফিগণ বিশ্বাস করে থাকেন, আল্লাহ্ সাকার। আর কুরআনে আল্লাহ্র যেসব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এর কথা বলা আছে সেগুলো আক্ষরিক।
তাঁর চেহারার কথা বলেছেনঃ
• "একমাত্র আপনার মহিমায় ও মহানুভব পালনকর্তার চেহারা ছাড়া।" (আর-রহমান ৫৫:২৭)
চোখের কথা বলেছেনঃ
• "আমি তোমার প্রতি মহব্বত সঞ্চারিত করেছিলাম আমার নিজের পক্ষ থেকে, যাতে তুমি আমার চোখের সামনে প্রতি পালিত হও।" (সূরা ত্বোয়া-হা, ২০:৩৯)
হাতের কথা বলেছেনঃ
• "আল্লাহ বললেন, হে ইবলীস, আমি স্বহস্তে যাকে সৃষ্টি করেছি, তার সম্মুখে সেজদা করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল?"(সূরা সাদ ৩৮:৭৫)
পায়ের কথা বলেছেনঃ
• "গোছা পর্যন্ত পা খোলার দিনের কথা স্মরণ কর, সেদিন তাদেরকে সেজদা করতে আহবান জানানো হবে, অতঃপর তারা সক্ষম হবে না।"(সূরা কালাম ৬৮:৪২)
আর পরকালে আল্লাহ্র দর্শন অবশ্যই লাভ করবে মুমিনরা। তবে এটাকেও সালাফিগণ আল্লাহ্ সাকার এর পক্ষে যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন, আল্লাহ্ সাকার না হলে তাঁকে দেখবে কীভাবে?
• "সেদিন অনেক মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; তারা তার পালনকর্তার দিকে তাকিয়ে থাকবে।" {সুরা কিয়ামাহ, ৭৫:২২-২৩}
অন্যদিকে, সুন্নিরা বিশ্বাস করে থাকেন আল্লাহ্ তায়ালা নিরাকার আর তাঁর অঙ্গের বর্ণনা সবই রূপক। কারণ, আল্লাহ্ হলেন আলো। আল্লাহ্ আসলে কেমন সে ব্যাপারে কেবল একটা আয়াতই মূলত কুরআন বলছে আর সেই আয়াতটা অধিকাংশের কাছেই কিছুটা দুর্বোধ্যঃ
• "আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আলো, তাঁর আলোর উদাহরণ যেন একটি খোপ, যাতে আছে একটি প্রদীপ, প্রদীপটি একটি কাঁচপাত্রে স্থাপিত, কাঁচপাত্রটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ্য। তাতে পুতঃপবিত্র জলপাই বৃক্ষের তেল প্রজ্বলিত হয়, যা পূর্বমুখী নয় এবং পশ্চিমমুখীও নয়। অগ্নি স্পর্শ না করলেও তার তার যেন আলোকিত হওয়ার নিকটবর্তী। আলোর উপর আলো।" ( সুরা নূর ২৪:৩৫)
আল্লাহ্কে রাসুল (স) মিরাজে গিয়ে দেখতে পাননি।
# আবু যর (রা) বলেন, আমি রাসুলকে (স) জিজ্ঞেস করলাম, "আপনি কি আলাহকে দেখেছিলেন?" তিনি বললেন, "তিনি তো আলো, আমি কীভাবে তাঁকে দেখব??"
(Muslim, Book 1, Hadith No. 341)
মানুষের ইহকালীন সামর্থ্য নেই আল্লাহকে দেখবার।
• "দৃষ্টিসমূহ তাঁকে পেতে পারে না, অবশ্য তিনি দৃষ্টিসমূহকে পেতে পারেন। তিনি অত্যন্ত সুক্ষদর্শী, সুবিজ্ঞ।" (সুরা আনআম ৬:১০৩)
সত্যি বলতে, আমরা জানতে পারছি না ১০০% নিশ্চিত হয়ে, যে, আল্লাহ্ সাকার নাকি নিরাকার। তবে এটা আমাদের জানা জরুরি না, আল্লাহ্ সাকার হলেও আমাদের আমলের উপর কোন প্রভাব পড়ছে না, নিরাকার হলেও না। আমাদের এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে না। আমাদের উৎসাহিত করা হয়েছে স্বয়ং আল্লাহ্ নিয়ে না ভেবে তাঁর সুন্দর বিস্ময়কর সৃষ্টি-জগত নিয়ে ভাবতে।
তবে তাঁর সম্পর্কে একটা কথাই বলতে হয়ঃ
• "কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়।" (সুরা শুয়ারা ৪২:১১)
আমাদের জন্য আল্লাহ্র পরিচয় হিসেবে সুরা ইখলাস যথেষ্ট
• "বলুন, তিনিই আল্লাহ, এক,আল্লাহ অমুখাপেক্ষী,তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।" (সূরা ইখলাস১-৪)
সাকার না নিরাকার আপনি কোনটা মনে করছেন সেটা উপরের পুরো আলোচনা থেকে সিদ্ধান্ত নেবার ব্যাপার আপনার।
আশা করি উত্তরটা পেয়েছেন
AIM-5.19
© 2013 by Ask Islam Bangla.